দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সাবেক সভাপতি মো. ফোরকান উল্লাহ বলেছেন, গত ১৫ বছরে ব্যাংক খাতে যে লুটপাট হয়েছে তা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অডিটররা প্রকাশ করতে পারেননি। কারণ আইনের বেড়াজালে অডিটরদের হাত-পা বাঁধা ছিল। তাই বাধ্য হয়েই আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইন অনুযায়ী খেলাপি ঋণ শনাক্ত এবং রিপোর্ট করতে হয়েছে অডিট প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
প্রকাশ্য রিপোর্টে প্রকৃত তথ্য উঠে না আসলেও অভ্যন্তরীণ বা ইন্টার্নাল রিপোর্টে সব তথ্য প্রকাশ করা হতো বলে দাবি করেছে আইসিএবি।
সাবেক সভাপতিকে সমর্থন করে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের অন্যান্য সদস্যরাও দাবি করেন ব্যাংকের ইচ্ছামত অডিট রিপোর্ট তৈরি করতে আমাদেরকে বাধ্য করা হয়েছে। কারো ঘাড়ে একাধিক মাথা ছিল না যে তাদের দাবি না মেনে প্রকৃত রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে খেলাপি ঋণের হার নির্ধারণ করে দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে লিখিত চিঠি পাঠানো হতো বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।
প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে জানায়, বাংলাদেশে একমাত্র আইসিএবি পাঠ্যক্রম ও পরীক্ষা পদ্ধতিতে আইএফএসি-এর মানদণ্ড অনুসরণ করে থাকে, যা একজন শিক্ষার্থীর অডিটর হওয়ার যোগ্যতা নিশ্চিত করে। আমরা সব সময় সর্বাধুনিক শিক্ষা ও যুগোপযোগী চর্চার সঙ্গে আপডেট থাকি, যা উচ্চমানের অডিট সেবা প্রদানে আমাদের সক্ষমতাকে আরও সমৃদ্ধ করে। তাই নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের নির্ভরযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক চর্চা অনুসরণপূর্বক বাংলাদেশে শুধুমাত্র চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের আর্থিক বিবরণীর নিরীক্ষা করার আইনগত স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
যে কেউ আইএফএসি-এর ওয়েবসাইট বা ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের আরওএসসি আপডেট ২০১৫-এ পর্যালোচনা করলে আইসিএবি আইসিএমএবির কোয়ালিফিকেশনের পার্থক্য ধরতে পারবেন।
আইএফএসি-এর স্টেটমেন্ট অব মেম্বারশিপ অবলিগেশনের এর প্রথম শর্ত হলো কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স, আইসিএবি বছরের পর বছর ধরে পূর্ণাঙ্গ ও স্বতন্ত্র কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স বোর্ড ও কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে গুণগত মান অক্ষুণ্ণ রাখার কাজ করে আসছে। অথচ এই শর্তপূরণ ছাড়া নিরীক্ষা চর্চার কথা চিন্তাও করা উচিত না।
আরো উল্লেখযোগ্য যে, আইসিএবির স্বতন্ত্র এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এবং ইনভেস্টিগেশন এন্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটি রয়েছে, যারা নিরীক্ষা চর্চার ক্ষেত্রে প্রফেশনাল মিসকন্ডাক্টের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
আরআর/এসএন