স্বর্ণ আনার নিয়মে কড়াকড়ি, দেশের স্বর্ণের বাজারে দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা

যতবার খুশি ততবার নয়; শুল্ক দিয়ে বিদেশ থেকে বছরে মাত্র একবার, একটি স্বর্ণের বার আনতে পারবেন জল ও আকাশপথের যাত্রীরা। বিনা শুল্কে ১০০ গ্রাম স্বর্ণালংকার আনার সুযোগ পাবেন বছরে একবারই। এমন বিধান রেখেই পরিবর্তন আনা হয়েছে ব্যাগেজ রুলস বিধিমালায়। এমন কড়াকড়িতে দেশের স্বর্ণের বাজারে দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা করছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন-বাজুস। আর অর্থনীতিবিদদের শঙ্কা, মূল্যবান ধাতুটির চাহিদা-জোগানের হেরফেরে বেড়ে যেতে পারে চোরাচালান।

অলংকার হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই নিজের কদর ধরে রেখেছে মূল্যবান ধাতু স্বর্ণ। আর নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হওয়ায় বর্তমানে বাড়ছে এর দাম ও চাহিদা। উচ্চমূল্যের কারণে দেশের স্বর্ণ ব্যবসায় পড়েছে মন্দাভাব। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বর্ণের বেচাকেনায় ধস নেমেছ। এটি এখন শুধু অভিজাত শ্রেণির মানুষই কিনছেন শখের বশে। তাও খুবই সীমিত পরিমাণে।

বাংলাদেশে এই মূল্যবান ধাতুর চাহিদা কত? সঠিক কোনো তথ্য না থাকলেও ব্যবসায়ীদের দাবি, বছরে প্রায় ২০ থেকে ৪০ মেট্রিক টনের চাহিদা রয়েছে স্বর্ণবাজারে। এই চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ হয় পুরানো অলংকার বিনিময়ের মাধ্যমে। বাকিটুকু মেটাতে বিমানযাত্রীদের মাধ্যমে আসা স্বর্ণই একমাত্র ভরসা। কারণ, অনুমতি দেয়ার পরও নানা জটিলতায় মূল্যবান এই ধাতু আমদানি করেন না তারা।

এবার এই ব্যাগেজ রুলসে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার। নতুন বিধিমালায়, আকাশপথে বছরে মাত্র একবার কোন যাত্রী ৫০ হাজার শুল্ক দিয়ে ১১৭ গ্রাম বা ১০ ভরি ওজনের স্বর্ণের বার আনতে পারবেন। আগে ৪০ হাজার টাকা শুল্ক দিয়ে আনতে পারতেন যতবার খুশি, ততোবার। ২০২৩ সালের জুলাইয়ের আগে ২০ হাজার টাকা শুল্ক দিয়ে প্রতিবারে আনা যেত দুইটি বার বা ২৩৪ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ।

কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে স্বর্ণালংকার আনার ক্ষেত্রেও। আগে একজন যাত্রী একাধিকবার ১শ গ্রাম ওজনের গহনা বিনা শুল্কে আনতে পারতেন। নতুন নিয়মে সেই সুযোগ মিলবে বছরে মাত্র একবার।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মুখপাত্র আনোয়ার হোসেইন বলেন, দেশে যে পরিমাণ স্বর্ণের চাহিদা রয়েছে, সে অনুযায়ী সরবরাহ থাকতে হবে বাজারে। স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের দাম অনেক বেশি। তাই বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করা সম্ভব না। এতে ব্যবসায় ক্ষতি হয়।

এমন পরিস্থিতিতে দেশে স্বর্ণের যে চাহিদা আছে তা মেটাতে চোরাচালান বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।

অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, বৈধপথে এমনিতেই আমদানি কম। তারওপর ব্যাগেজ রুলে কড়াকড়ি আরোপ কড়া হয়েছে। ফলে চাপের মুখে পড়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাই যতটা সহজ নীতিমালা প্রণয়ন করা যায় ততোই ভালো।

ঢাকা কাস্টমসের তথ্য, ২০২৩ সালে শুধু ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়েই ব্যাগেজ রুলসের আওয়ায় সাড়ে ৩১ টন ও ২০২২ সালে এসেছে প্রায় ৩৬ টন স্বর্ণ।

আরআর/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘কুবেরা’ ও ‘কুলি’ দিয়েই কি ঘুরে দাঁড়াবেন নাগার্জুনা? Jun 20, 2025
img
বিগত ৩টি জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল আওয়ামী লীগ ও ভারত থেকে পূর্বনির্ধারিত ছিল : রাশেদ প্রধান Jun 20, 2025
রাতের হামলা, আধুনিক রণকৌশলের এক পরিকল্পিত রূপ Jun 20, 2025
img
একযোগে ২৫ টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান Jun 20, 2025
শিল্পপতির ছেলেকে বিয়ে করছেন নায়িকা তানহা মৌমাছি Jun 20, 2025
img
বছরের দ্বিতীয়ার্ধে মুক্তি পাচ্ছে যে ২৫টি বড় বাজেটের বলিউড সিনেমা Jun 20, 2025
অদূর ভবিষ্যতে চাকরির বাজার দখল করে নিতে পারে এআই Jun 20, 2025
জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকায় ভুয়া নাম! তদন্তে বেরিয়ে এলো প্রতারণা Jun 20, 2025
ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে সরকার বিরোধী প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে: প্রেস উইং Jun 20, 2025
আরেকটি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ! Jun 20, 2025
অদ্ভুত জাদুকর, চোখের সামনে ঘটালেন অবিশ্বাস্য কাণ্ড! Jun 20, 2025
ক্যাসিনো কাণ্ডের সেই সেলিম প্রধানের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ! Jun 20, 2025
img
মেসির উত্তরসূরি নেইমারের ঘরে! তবে কি নেইমারকেই গুরু মানছেন ইয়ামাল? Jun 20, 2025
img
ফেনীতে বেড়িবাঁধ ভেঙে ৯ গ্রাম প্লাবিত Jun 20, 2025
img
আমেরিকার সিদ্ধান্ত যাই হোক, ইরানের বিরুদ্ধে একাই লড়ার ঘোষণা ইসরায়েলের Jun 20, 2025
img
‘অশিক্ষিত’ বলায় মার্কশিট দেখিয়ে দিলেন অভিনেত্রী মধুবনী! Jun 20, 2025
img
২০২৫ সালে মুক্তি পেলে সফল হতো না ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’: মন্তব্য অনুপম খেরের Jun 20, 2025
img
ক্রীড়াঙ্গন রাজনীতি মুক্ত থাকা উচিত : মির্জা ফখরুল Jun 20, 2025
img
ইন্ডাস্ট্রির এমন অনেকের প্রথম কিছুর সঙ্গে আমি জড়িয়ে আছি : ঋতুপর্ণা Jun 20, 2025
img
বাংলাদেশের অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বঙ্গোপসাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : প্রধান উপদেষ্টা Jun 20, 2025