বাংলাদেশের কৃষি ও গবেষণার একটি উচ্চ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। এটি ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত। কৃষিবিজ্ঞানের সকল শাখা এর আওতাভূক্ত। দক্ষ কৃষিবিদ, প্রাণিবিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও কৃষি প্রকৌশলী তৈরি করাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান লক্ষ্য। পাশাপাশি দেশের কৃষি উন্নয়নের গুরু দায়িত্ব বহনে বিরাট ভূমিকা রাখছে বাকৃবি।
ময়মনসিংহ শহর থেকে চার কিলোমিটার দক্ষিণে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিমে এর অবস্থান। প্রায় ১২শ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। রাজধানী ঢাকা থেকে ১২০ কিলোমিটার উত্তরে ক্যাম্পাসটি অবস্থিত।
১৯৬১ সালে ভেটেরিনারি ও কৃষি অনুষদ নামে দুটি অনুষদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার কয়েক মাসের মধ্যেই পশুপালন অনুষদ নামে তৃতীয় অনুষদের যাত্রা শুরু হয়।
১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, ১৯৬৪-৬৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদ এবং ১৯৬৭-৬৮ শিক্ষাবর্ষে মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল প্রশাসন ভবনসহ বিভিন্ন অনুষদীয় ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, দুই হাজার আসনের আধুনিক মিলনায়তন, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, সম্প্রসারিত ভবন, জিমনেসিয়াম, স্টেডিয়াম, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, জিটিআই ভবন।
শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ১৩টি হল আছে। যার মাঝে চারটি হল ছাত্রীদের জন্য। এছাড়াও রয়েছে ড. ওয়াজেদ মিয়া ডরমিটরি।
আবাসিক হলসমুহ:
ছাত্র হলসমুহ: ঈশা খাঁ হল, শাহজালাল হল, শহীদ শামসুল হক হল, শহীদ নাজমুল আহসান হল, আশরাফুল হক হল, শহীদ জামাল হোসেন হল, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল, ফজলুল হক হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল।
ছাত্রী হলসমুহ: সুলতানা রাজিয়া হল, তাপসী রাবেয়া হল, শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হল, বেগম রোকেয়া হল।
সংগঠন: বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ, অঙ্কুর, ত্রিভুজ, পদচিহ্ন, ঘাসফুল।
যেভাবে যাবেন:
সড়কপথে ময়মনসিংহে আসতে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট থেকে ৩ ঘণ্টা ৩০ মিনিট লাগবে। মহাখালী ছাড়াও কমলাপুর, বিআরটিসি টার্মিনাল থেকে ঢাকা-নেত্রকোনা রুটের গাড়িতেও ময়মনসিংহে আসা যাবে। এ পথে সবচেয়ে ভালো পরিবহনের মধ্যে রয়েছে এনা ট্রান্সপোর্ট।
এনা পরিবহনে জনপ্রতি গুনতে হবে ২২০ টাকা। সৌখিন পরিবহনে ১৫০ টাকা। ময়মনসিংহ শহরের ব্রিজ মোড় থেকে অটোতে ১০ টাকায় ভার্সিটি যাওয়া যাবে।
রেলপথে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ছাড়ে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন। তিস্তা এক্সপ্রেস ছাড়ে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে এবং অগ্নিবীনা এক্সপ্রেস ছাড়ে ৯টা ৪০ মিনিটে। এছাড়া আরও চারটি আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে। যেগুলো হলো ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস, হাওরা এক্সপ্রেস, মোহনগঞ্জ একপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস।
মেইল ট্রেনেও যাওয়া যায়। মেইল ট্রেনগুলো মধ্যে মহুয়া এক্সপ্রেস, দেওয়ানগঞ্জ এক্সপ্রেস, বলাকা এক্সপ্রেস ইত্যাদি।
থাকার ব্যবস্থা:
চাইলে একদিনেই ঘুরে ফিরে আসতে পারেন। তবে যদি থাকতে যান তাহলে বেছে দিতে পারেন হোটেল। ময়মনসিংহে আমির ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল মুস্তাফিজ ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল হেরা, হোটেল সিলভার ক্যাসেল, হোটেল খাঁন ইন্টারন্যাশনাল উল্লেখযোগ্য। এছাড়া রয়েছে নিরালা রেস্ট হাউস, হোটেল ঈশা খাঁ, হোটেল উত্তরা, তাজমহল ইত্যাদি।
খাবার ব্যবস্থা:
প্রেসক্লাব ক্যান্টিনের মোরগ পোলাওয়ের খুব নামডাক। আর আছে হোটেল ধানসিঁড়ি ও হোটেল সারিন্দা।