দেশের রাজস্ব আদায়ের প্রধান কেন্দ্র জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। চেয়ারম্যানের অপসারণ এবং সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রতিনিধিত্ব না থাকার অভিযোগে আজ সোমবার (২৩ জুন) সকাল থেকে তিন ঘণ্টার কলমবিরতি শুরু করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন তারা।
এরই মধ্যে আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা পাঁচ কর্মকর্তাকে বদলির আদেশে নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
সরিজমিনে জানা যায়, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ এবং প্রস্তাবিত সংস্কারে যৌক্তিক প্রতিনিধিত্বের দাবিতে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার সকাল থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভবনে। ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ডাকে সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার কলম বিরতি পালন করছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
ঢাকার সব দপ্তরের কর্মীরা এনবিআর ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আর ঢাকার বাইরের কর্মীরা নিজেদের দপ্তরেই পালন করছেন এই কর্মসূচি। তাদের দাবি, চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে এবং এনবিআর ভাগের প্রক্রিয়ায় তাদের যুক্ত করতে হবে।
তবে এই আন্দোলনের মধ্যেই আগুনে ঘি ঢেলেছে ৫ কর্মকর্তার বদলির আদেশ। রোববার রাতে কর প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা এক আদেশে আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে দেশের বিভিন্ন কর অঞ্চলে বদলি করা হয়।
বদলিকৃতদের মধ্যে রয়েছেন, উপ-কর কমিশনার শাহ্ মোহাম্মদ ফজলে এলাহী, মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম, মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফ, ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিল এবং নুসরাত জাহান শমী। আদেশে সোমবারের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করে মঙ্গলবারের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা এই বদলির আদেশকে দেখছেন একটি শাস্তিমূলক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ হিসেবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা একে ‘সুপরিকল্পিত কূটপরিকল্পনা’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এর মাধ্যমে সংস্কারের পক্ষের শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে।
এর আগেও গত মে মাসে এনবিআরকে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগে ভাগ করার অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন কর্মীরা। সরকারের আলোচনার আশ্বাসে তারা কাজে ফিরলেও চেয়ারম্যানকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। সে সময় সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফিরেছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
এনবিআর ভবনে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় কড়া নিরাপত্তা দেখা গেলেও শান্তিপূর্ণ এই অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে না পুলিশ।
এসএন