অল্প সময়ের ক্যারিয়ার হলেও নিজের অভিনয়ের জোরেই দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন অভিনেত্রী নাজনীন নাহার নিহা। ‘লাভ সেমিস্টার’ দিয়ে শুরু, তারপর একের পর এক নাটকে অভিনয় করে তিনি হয়ে উঠেছেন নতুন প্রজন্মের প্রিয় মুখ। এবারের কোরবানি ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত তাঁর অভিনীত নাটক ‘আশিকি’ ইউটিউবে উঠেছে ট্রেন্ডিংয়ের শীর্ষে। কিন্তু এই সফলতার মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এমন কিছু ছবি, যা অভিনেত্রীর নামে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে—আর এই নিয়েই তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য।
সম্প্রতি ইন্টারনেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া কিছু ছবিতে দাবি করা হচ্ছে, সেগুলো নাকি নাজনীন নাহার নিহার। ফলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই, বিশেষ করে তাঁর ভক্ত-অনুরাগীরা। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক সত্য।
রিউমর স্ক্যানার টিম প্রযুক্তির সাহায্যে বিশ্লেষণ করে জানতে পারে, এসব ছবি আসলে একটি ভুয়া নির্মাণ। মূল ছবি ভারতের এক অভিনেত্রীর—আঞ্জেলি টাট্রারির। সেই ছবিগুলোতেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে নিহার মুখমণ্ডল বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অনুসন্ধান অনুযায়ী, আঞ্জেলি টাট্রারির ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২১ মে প্রকাশিত কিছু ছবির সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোর। পার্থক্য শুধু একটাই—মুখমণ্ডল। সেই জায়গাতেই প্রযুক্তি চালিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে নাজনীন নাহার নিহার মুখ।
রিউমর স্ক্যানার আরও এক ধাপ এগিয়ে নিজস্ব প্রযুক্তিতে পরীক্ষাও চালিয়েছে। তাতে দেখা গেছে, একই ধরনের ছবি তৈরি করা সম্ভব হয়েছে কেবল একটি মুখ প্রতিস্থাপন করে। অর্থাৎ, এটি নিছকই প্রযুক্তির অপব্যবহার এবং ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা।
নাজনীন নাহার নিহা নিজেও এ বিষয়ে এখনো মুখ খোলেননি, তবে ভক্তরা চাইছেন তিনি যেন বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে প্রবীর রায় চৌধুরীর পরিচালনায় ‘লাভ সেমিস্টার’ নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশন পর্দায় যাত্রা শুরু করেছিলেন নিহা। সেই থেকেই তাঁর পথচলা শুরু—আর এই অল্প সময়েই নিজের অভিনয়ের স্বকীয়তায় তৈরি করেছেন আলাদা পরিচয়।
এই বছরের কোরবানি ঈদে মুক্তি পাওয়া নাটক ‘আশিকি’ তারই প্রমাণ। সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে ৮ জুন রাতে নাটকটি মুক্তি পায় এবং মুক্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে উঠে আসে এক নম্বরে।
এই অবস্থায়, প্রযুক্তি বিকৃতির মাধ্যমে তাঁর ভাবমূর্তিকে আঘাত করার এই প্রচেষ্টা শুধু অনৈতিক নয়, বরং আইনত দণ্ডনীয়ও। প্রশ্ন উঠছে, জনপ্রিয়তা বাড়লেই কি অভিনেত্রীদের এমন অশোভন ফেক ক্যাম্পেইনের শিকার হতে হবে?
এসএন