দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের জটিলতা দূরীকরণ ও সরকারি সংস্থার কাজের গতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক ফ্রি ট্রেড জোন গড়ে তোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে বন্দরের সঙ্গে কাস্টম, শিপিং, সি অ্যান্ড এফ এবং ব্যাংকিংসহ বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট সব সেবাখাত এক ছাতার নিচে আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর দেশের আমদানি-রফতানির অন্তত ৯৩ শতাংশ সম্পন্ন করে। এখানে শিল্পের কাঁচামাল থেকে শুরু করে নানা ধরনের পণ্য আমদানি ও খালাসের কাজ সরকারি ও বাণিজ্যিক অন্তত ২৬টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর ফলে বিভিন্ন জটিলতায় বাণিজ্যে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দেয়।
বিজিএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘ফ্রি ট্রেড জোন হলে আমরা সহজে ও দ্রুত আমদানি পণ্য খালাস করতে পারব। আরএমজি খাতে টাইম বাউন্ড ইন্ডাস্ট্রি হওয়ায় দ্রুত মাল সরানো উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।’
বন্দর ব্যবহারকারীরা বলেন, আমদানি পণ্য ছাড় এবং রফতানি পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে নানা জটিলতা রয়েছে। তাই বন্দরে ফ্রি ট্রেড জোন গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প দেখা যায় না।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ফ্রি ট্রেড জোন কার্যকর থাকলেও বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিল। তৈরি পোশাক খাতের সাম্প্রতিক সংকট দূর করতে এ ফ্রি ট্রেড জোন ভূমিকা রাখবে। রফতানি পণ্য জাহাজে তোলার আগে এখানে এনে সংরক্ষণ এবং আমদানি করা কাঁচামাল মজুদ রাখার সুবিধা থাকবে।
বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এটি দেশের ও বাণিজ্যের স্বার্থে অত্যন্ত ইতিবাচক। ফ্রি ট্রেড জোনে ব্যবসার জন্য বন্ধুসুলভ পরিবেশ এবং ব্যবসা বান্ধব নীতি কার্যকর হবে।’
চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অচিরেই ফ্রি ট্রেড জোনের জন্য জায়গা নির্ধারণ হয়ে যাবে। তুলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাঁচামাল এখানে রেখে দ্রুত স্থানীয় বাজারে ডেলিভারি দেয়া যাবে।’
এছাড়া চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরকেও আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে গতিসাধনে যুক্ত করা হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে বিমান বন্দরে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার স্থাপনের কাজ চলছে।
বিমান বন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর বলেন, ‘আমাদের বিমান বন্দর ব্যবসাবান্ধব। বিদেশি যাত্রী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য আমরা সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করছি।’
চট্টগ্রাম বন্দর বছরে ৩২ লাখ কন্টেইনার এবং ১২ কোটি মেট্রিক টন কার্গো পণ্য হ্যান্ডলিং করে থাকে।
পিএ/এসএন