প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ভোটাধিকার অবিলম্বে পূর্ণ নিশ্চিতকরণের দাবিতে আন্দোলনরত ‘প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা বুধবার (২ জুলাই) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেন।
ঢাকায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, যুক্তরাজ্যের বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার নাজির আহমদের নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট ডেলিগেশনে আরও ছিলেন কমিটির অন্যতম সদস্য যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্যারিস্টার মো. ইকবাল হোসাইন, ব্যারিস্টার মোজাক্কির হোসাইন এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এম রহমান মাসুম।
বৈঠকে নেতারা দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তী সরকারের ইতিবাচক সাড়ার পরও এখন পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্বেগের কথা অবহিত করেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আন্তরিকতার সঙ্গে নেতাদের কথা শোনেন এবং কমিশনের আন্তরিক প্রচেষ্টাগুলো তুলে ধরেন।
বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতার করার আশ্বাস দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের একটি স্মারকলিপি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পরে প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন সম্পর্কিত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবুল ফজল মু. সানাউল্লাহর সঙ্গে প্রবাসী ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও মতবিনিময় করেন প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ নেতারা।
পরে এক প্রতিক্রিয়ায় ব্যারিস্টার নাজির আহমদ বলেন, আলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারকে খুবই আন্তরিক মনে হয়েছে। তবে তাদের সামনে বহুমুখী বাধা ও চ্যালেঞ্জ আছে। ১৪৭টি দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেড় কোটি প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও নিশ্চিত করা চাট্টিখানি কথা নয়। আমরা প্রবাসীদের ভোটার তালিকা করার বিভিন্ন পদ্ধতি, ভোট গ্রহণের বিভিন্ন উপায় ও মাধ্যম, কমিশনের আরও দৃশ্যমান তৎপরতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও মতবিনিময় করেছি। তারা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের কথা ও পরামর্শগুলো শুনেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলেছি গত ৫৪ বছরে রাজনৈতিক সরকারগুলো শুধু মূলা ঝুলিয়ে রেখেছিল, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অথচ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইন। গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীদের অবদান ও ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পলিটিক্যাল কোনো ব্যাগেজ নেই। তাই বর্তমান সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশন যদি প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত না করে তাহলে আমরা আমাদের জীবদ্দশায় সম্ভবত এই অধিকার পাব না। সুতরাং যেকোনো মূল্যে আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতেই হবে। দেশের এক দশমাংশ ভোটারকে বাদ দিয়ে বা বঞ্চিত করে গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর নির্বাচন সম্ভব নয়।
পিএ/এসএন