তিন বছরের কঠোর পরিশ্রম, একে একে বিসর্জন দিয়েছেন মদ্যপান ও মাংস, চরিত্রে প্রবেশ করতে আত্মস্থ করেছেন রামের আদর্শ— সব মিলিয়ে রণবীর কাপুর যেন নিজেই হয়ে উঠেছেন এক রঘুনন্দন। আর সেই সাধনার ফল অবশেষে চোখের সামনে আনলেন পরিচালক নীতেশ তিওয়ারি। প্রকাশ্যে এল ‘রামায়ণ: পার্ট ওয়ান’-এর প্রথম ঝলক, আর তাতেই ঝড় উঠল সিনে দুনিয়ায়।
‘অ্যানিম্যাল’-এর মতো খোলামেলা রুক্ষ, পুরুষতান্ত্রিক চরিত্র থেকে বেরিয়ে একেবারে বিপরীত ধারার রামচরিত্রে অভিনয় করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল অনেকের মনে। কিন্তু রণবীর যেন এক চুপচাপ জবাব দিলেন নিজের কাজ দিয়ে। সেই প্রথম ঝলকে ধরা পড়ল এক মার্জিত, আত্মস্থ, মননশীল রাম— চোখে সংযম, মুখে শুদ্ধতা।
রামের ভূমিকায় রণবীর কাপুর, হনুমানের চরিত্রে সানি দেওল, আর রাবণের চরিত্রে যশ— এই তিন কেন্দ্রীয় চরিত্র একসঙ্গে এক ফ্রেমে নিয়ে এলেন পরিচালক। ছবিতে আরও থাকছেন সাই পল্লবী, বিজয় সেতুপতি, কাজল আগরওয়াল, লারা দত্ত ও রকুলপ্রীত সিং। যদিও প্রথম ঝলকে দেখা মিলল শুধু রণবীর ও যশের, তবু বাকি চরিত্রগুলোর কৌতূহল এখন আরও তীব্র।
বিশেষ নজর কেড়েছে ছবির ভিএফএক্স। প্রথম ঝলকে গ্রাফিক্সের নিখুঁত কারুকাজ দেখে স্পষ্ট— প্রভাস অভিনীত ‘আদিপুরুষ’-এর বিতর্ক থেকে শিক্ষা নিয়ে নির্মাতারা এ বার কোনও খুঁত রাখতে চাননি। পরিচালক আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এই রামায়ণ যেন কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করে। আর সেই দায়িত্ববোধে তিনি সফল বলেই মনে করছেন অনুরাগীরা।
সোমবার রাতে শুটিংয়ের শেষ দিনে আবেগে ভাসলেন রণবীর। সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে কথা বলতে গিয়ে নিজেই কাঁপছিল তাঁর কণ্ঠ। রামের চরিত্র থেকে বিদায় জানানো যে সহজ নয়, সেটা যেন ফুটে উঠল তাঁর প্রতিটি শব্দে। আরেক মুহূর্তে লক্ষ্মণের চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতাকে জড়িয়ে ধরে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি রণবীর।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ‘রামায়ণ’ ট্রিলজির প্রথম পর্ব মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের কোনও উৎসব মরসুমে, সম্ভবত দিওয়ালিতে। দ্বিতীয় পর্বের মুক্তি নির্ধারিত ২০২৭ সালের দিওয়ালি। আর তার আগেই নির্মাতারা শেষ করে ফেলতে চান প্রথম কিস্তির সব কাজ।
রণবীর কাপুরের অভিনয়, নীতেশ তিওয়ারির পরিচালনা, দক্ষিণ ও হিন্দি তারকাদের মেলবন্ধন— সব মিলিয়ে ‘রামায়ণ’ হতে চলেছে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী প্রয়াস। এখন শুধু অপেক্ষা— পর্দায় সেই ঈশ্বরীয় রূপ দর্শন করার।
এসএন