অবশেষে নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল আলোচিত নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি)। রোববার (৬ জুলাই) দায়িত্ব নেবে নৌবাহিনী। অবসান হচ্ছে সাইফ পাওয়ারটেক যুগের। তবে সরাসরি নৌ বাহিনীর সঙ্গে ডিপিএম চুক্তি হচ্ছে না। চট্টগ্রাম ড্রাইডকের মাধ্যমেই অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং সফটওয়্যার নির্ভর এই টার্মিনাল পরিচালনা করতে যাচ্ছে নৌবাহিনী। সরকার থেকে সিদ্ধান্ত আসার পরেই চট্টগ্রাম বন্দরের সবশেষ বোর্ড সভায় গৃহীত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এসব সিদ্ধান্ত।
অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত এক হাজার মিটার দৈর্ঘ্যের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে একসঙ্গে ভিড়তে পারবে চারটি মাদার ভ্যাসেল। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরের ১৮টি গ্যান্ট্রি ক্রেনের মধ্যে ১৪টিই আছে এখানে। বিদেশি অপারেটর দিয়ে টার্মিনালটি পরিচালনার ঘোষণায় বিভিন্ন পক্ষের প্রতিবাদের মুখে, নৌবাহিনীকে দেয়া হয়েছে দায়িত্ব। সিদ্ধান্তটি অনুমোদিত হয়েছে বন্দরের বোর্ড সভায়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, বেশ কয়েকটি টিম করা হয়েছে। বিশেষ যন্ত্রপাতি, ম্যান পাওয়ার ও ট্রাফিক অপারেশন সংক্রান্ত। সবগুলোর জন্য আলাদা আলাদা টিম থাকবে। ৬ জুলাই থেকে টার্মিনাল পরিচালনায় বন্দরের পক্ষ থেকে চুক্তি হচ্ছে চট্টগ্রাম ড্রাইডকের সঙ্গে। অবশ্য ড্রাইডকও পরিচালিত হয় নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে।
চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি), চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনালকে (সিসিটি) ডিঙিয়ে ৪৪ শতাংশ কনটেইনার উঠানামা হয় নিউমুরিং টার্মিনালে। এটি পরিচালনার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে অন্তত ১৫৭ জন বিভিন্ন অপারেটর (৭৭জন আরটিজি অপারেটর, ৩০জন কিউজিসি অপারেটর, ৩২ জন স্ট্র্যাডাল ক্যারিয়ার অপারেটর, ১২জন এমপ্টি হ্যান্ডলার অপারেটর, ৬ জন হারবার ক্রেন অপারেটর) ছাড়াও ১৪টি গ্যান্ট্রি ক্রেন চালানোর দক্ষ অপারেটর প্রয়োজন রয়েছে।
রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহেদ আলম বলেন, নৌ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে চলবে। সব ধরনের সাপোর্ট পেলে তারা কাজটি সহজেই চালিয়ে নিতে পারবে। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না।
২০০৭ সালে ৫০৭ কোটি টাকায় নির্মাণ হওয়া টার্মিনালটি পরিচালনা নিয়ে শুরু থেকেই ছিল নানা জটিলতা। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে ২০১০ সালের পর দায়িত্ব পায় সাইফ পাওয়ারটেক। চলতি মাসের ৬ তারিখ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে শেষ হচ্ছে চুক্তির মেয়াদ। তবে প্রাথমিকভাবে কার্যক্রম সচল রাখতে আগের সফটওয়্যার এবং প্রযুক্তিবিদদের সহায়তা নেয়া হতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দর বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ফজলে একরাম চৌধুরী বলেন, ব্যাকআপ সুবিধা এবং ব্যাকআপ ইয়ার্ডে কার্গো ও কনটেইনার যেভাবে যাচ্ছে, তা ঠিকভাবে পরিচালিত হলে কোনো জটিলতা হওয়ার কথা নয়।
উল্লেখ্য, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে প্রতি ঘণ্টায় ৩০টির বেশি কনটেইনার জাহাজ উঠানামা করানোর সক্ষমতা রয়েছে। অন্যান্য বার্থ এবং টার্মিনালে যা প্রতি ঘণ্টায় ১৭ থেকে ১৮টি কনটেইনার।
আরআর/এসএন