মার্কিন বি-৫২ এইচ কৌশলগত বোমারু বিমান ও যুদ্ধবিমানের যৌথ মহড়া দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (১১ জুলাই) আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় এ মহড়া হয়। উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পারস্পরিক সহযোগিতা চুক্তি শক্তিশালী করায় নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করছে তারা।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া প্রতিনিয়তই পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে।
এই হুমকি প্রতিরোধ করার জন্যই এ বছর প্রথমবারের মতো বি-৫২ এইচ কৌশলগত বোমারু বিমান কোরিয়া উপদ্বীপে মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গতকাল সিউলে এই তিন দেশের প্রতিরক্ষা প্রধানদের একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং উত্তর কোরিয়ার হুমকি মোকাবিলার বিষয়ে আলোচনা করে তারা।
বৈঠকের আগে উদ্বোধনী বক্তব্যে মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।
এতে ভবিষ্যতের পথ আলোকিত হচ্ছে। সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমাদের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিতে হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া ও চীন তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল মালয়েশিয়ায় জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়ায়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী পার্ক ইউন-জুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
সেখানে তাঁরা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছেন। এ ছাড়া জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ এবং সরবরাহ শৃঙ্খল নিরাপত্তার অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা জোরদারে কথা বলেছেন তাঁরা। পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নের বিষয়েও কথা বলেছেন তিন দেশের প্রতিনিধিরা।
মন্ত্রণালয়টি আরো জানায়, কুয়ালালামপুরে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জাতিগোষ্ঠীর সংগঠনের (আসিয়ান) সম্মেলনে একটি পার্শ্ববৈঠক হয়। সেখানে আসিয়ানের ১০ সদস্য ছাড়াও বেশ কিছু দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন তারা তিনজন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। এ ছাড়া তারা রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তি শক্তিশালী করেছে। এতে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করছে তারা।
এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ শুক্রবার উত্তর কোরিয়া সফরে গেছেন। সেখানে দুই দেশের মধ্যে সর্বশেষ উচ্চস্তরের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে কৌশলগত সহযোগিতা এবং একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি করেন তারা।
রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা রিয়ায় বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন রাশিয়া আসতে পারেন। এমন বিষয় নিয়ে কাজ করছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ জানিয়েছেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া—এই দুই দেশের নেতার সফরের আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান কিম মিউং-সু এবং জাপানের চিফ অব স্টাফ ইয়োশিহিদে ইয়োশিদা রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার সেনা মোতায়েনের বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
এফপি/টিএ