অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৩টি টেস্ট, ৬টি ওয়ানডে, টেস্টে ৪টি সেঞ্চুরিও আছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও ১০ হাজারের কাছাকাছি রান। জো বার্নসের ক্যারিয়ার একেবারে হেলাফেলার নয়। কিন্তু গতবছর হুট করে সিদ্ধান্ত নিলেন জাতীয় দল বদলের। মায়ের দিক থেকে রক্তে থাকা ইতালিয়ান কানেকশনের সূত্রে ইউরোপের দেশটির হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ফুটবলের দেশ ইতালির ক্রিকেট ইতিহাস বেশ পুরনো হলেও কখনোই সাড়া জাগানোর মতো দল ছিল না। ফলে তার এমন সিদ্ধান্তে ভ্রু কুঁচকেছেন অনেকেই।
জো বার্নসের অস্ট্রেলিয়া থেকে ইতালিতে যাওয়ার পেছনে আছে এক আবেগী গল্প। তার এই যাত্রা মূলত ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণে। গায়ে তুলে নিয়ে নিয়েছিলেন ভাইয়ের স্মৃতিবিজড়িত ৮৫ নম্বর জার্সি। লক্ষ্য ইতালিকে বিশ্বকাপের মঞ্চে নিয়ে যাওয়া।
সেই লক্ষ্য পূরণ করেছেন বার্নস। ফুটবলে চারবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেও ক্রিকেটে ইতালি অতীতে কখনো বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি। এবার বার্নসের হাত ধরে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে ইতালিয়ানদের। ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইপর্ব থেকে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গী হয়ে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করেছে ইতালিয়ানরা।
বাছাই পর্বে শক্তিশালী স্কটল্যান্ডকে হারিয়েই বিশ্বকাপে এক পা দিয়ে রেখেছিল ইতালি। শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বড় হার এড়ালেই নিশ্চিত হতো আরাধ্য বিশ্বকাপ। গতকাল (শুক্রবার) হেগে ডাচদের কাছে ৯ উইকেটে হারলেও রানরেটে গ্রুপ রানার্স আপ হিসেবে আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে ইতালিয়ানরা। অধিনায়ক হিসেবে ইতালির ক্রিকেটের এই বাঁকবদল এলো বার্নসের হাত ধরেই।
২০২৪ সালে বার্নস ইতালির হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেন ছোট ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণে। তার ভাই ডমিনিক বার্নস খেলতেন ইতালির ক্লাব ক্রিকেটে। কিন্তু গত বছর আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ভাইয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন বার্নস, ভেঙে পড়ে পুরো পরিবারই। ভাইয়ের অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণে ৩৫ বছর বয়সে এসে নতুন এক চ্যালেঞ্জ নেন। সেই চ্যালেঞ্জ জিতে বার্নস এখন বিশ্বকাপ খেলার দ্বারপ্রান্তে। অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে না পারলেও ইতালির জার্সিতে আগামী বছর খেলতে নামবেন বিশ্বকাপে।
বিশ্বমঞ্চে ইতালির হয়ে বার্নস যখন ব্যাট করতে নামবেন, ওপার থেকেই হয়ত দেখবেন ভাই ডমিনিক।
এফপি/টিএ