গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও গাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সময়মতো ব্যবস্থা না নিয়ে পরে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং গুলি করে ৪ জনকে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ।
আজ বৃহস্পতিবার পৃথক বিবৃতিতে হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিচার এবং জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে।
সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এনসিপির সমাবেশ এবং ইউএনওসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়িতে পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা যে ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির নিরাপত্তা বিধান করা সরকারের দায়িত্ব।
কিন্তু সরকার এনসিপির সমাবেশের নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থ হয়েছে। উপরন্তু, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণে কয়েকজন মানুষ নিহত হয়েছে। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর এ ধরনের হামলা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড একেবারেই অপ্রত্যাশিত এবং চব্বিশের আকাঙ্ক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। গোপালগঞ্জে যে উন্মত্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার দায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই নিতে হবে।
সরকারের দায়িত্বহীনতা গণতন্ত্রের পথে বাংলাদেশের নবযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারে।’
এদিকে অপর এক বিবৃতিতে বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, স্বৈরতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদীব্যবস্থার বিরুদ্ধে দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছরের আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী সরকার পদত্যাগ ও দেশত্যাগ করার পর জনগণ আশা করেছিল, জানমাল ও সভা-সমাবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, কিন্তু তা হয়নি। গণ-অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন জায়গায় মব সৃষ্টি করে জনগণের রাজনৈতিক অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে। ‘মুজিববাদের আঁতুরঘর’ বলে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙা হয়েছে।
সেখানে সেনা সদস্যদের নীরবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক স্থাপনা ভাঙাসহ নানা অসংবেদনশীল কাজ করা হয়েছে কিন্তু সরকার ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত রাজনৈতিক মহল এতে নির্বিকার থেকেছে কিংবা মদদ জুগিয়েছে। পূর্বের মব দমনে এবং মব-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় একের পর এক মব সন্ত্রাস চলছে। এনসিপির সমাবেশে হামলা তারই ধারাবাহিকতা। গণতন্ত্রের পথে বাধা সৃষ্টিকারী দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র চক্রান্ত সম্পর্কে জনগণকে সচেতন থাকার এবং পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জারি রাখার আহ্বান জানান তিনি।
টিকে/