সিন্ধু চুক্তি অনুযায়ী বন্যা সতর্কতায় ভারতের সহযোগিতা চায় পাকিস্তান

সিন্ধু পানি চুক্তির আওতায় বন্যা সংক্রান্ত আগাম সতর্কতা প্রদানের জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির দাবি, ভারতের কাছ থেকে একাধিকবার অনুরোধ জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। খবর সামা টিভির।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী ভারতের দায়িত্ব, তাদের ড্যাম ও জলাধার থেকে যদি অস্বাভাবিক পানি নিঃসরণ হয় বা আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা থাকে, তবে তা পাকিস্তানকে আগাম জানানো বাধ্যতামূলক। তবে ভারত এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ নীরব থেকেছে।

পাকিস্তানি কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেন, ‘ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় নদীগুলোর নিচের অববাহিকায় অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হলে তা পাকিস্তানে হঠাৎ বন্যার সৃষ্টি করতে পারে। এজন্যই আগাম সতর্কতা দেওয়ার শর্ত চুক্তিতে রাখা হয়েছিল।’

পাকিস্তান সরকারের কর্মকর্তারা জানান, তারা বর্তমানে চেনাব, সুটলজ ও রবি নদীর পানিপ্রবাহ স্যাটেলাইট ডেটা ও মাঠপর্যায়ের রিপোর্টের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করছে। তবে সীমান্তবর্তী নদীগুলোর বিষয়ে তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদান না হলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।

এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তিতে স্পষ্টভাবে বলা আছে, ভারতকে বন্যা সংক্রান্ত তথ্য আগাম জানাতে হবে। এটি শুধু কূটনৈতিক দায় নয়, বরং মানুষের জীবন বাঁচানোর একটি জরুরি পদক্ষেপ।’

এর আগের দিন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এক বিবৃতিতে ভারতকে ‘১০ মে’র শিক্ষা মনে রাখার’ হুঁশিয়ারি দেন এবং সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে ভারতের অবস্থানকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
এছাড়া জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মানবাধিকার কমিশনের ২৫তম অধিবেশনে পাকিস্তান এই বিষয়টি তুলেছে।

‘পানির অধিকার’ শীর্ষক অধিবেশনে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ ফাওয়াদ শের বলেন, ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু চুক্তি লঙ্ঘনের হুমকি দিচ্ছে, যা এ অঞ্চলের জলবায়ু সংকট আরও বাড়িয়ে তুলবে।

ফাওয়াদ শের বলেন, ‘পানি মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। ভারতের বর্তমান অবস্থান কেবল পাকিস্তানের জন্য নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই হুমকিস্বরূপ।’

তিনি আরও জানান, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক পরিসরে এ ইস্যুতে তার অবস্থান তুলে ধরতে থাকবে এবং জলচুক্তির অধীনে নিজেদের অধিকার রক্ষা করবে।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যমুনায় যেতে জামায়াতসহ ৮টি দলের মিছিলে পুলিশের বাধা Nov 06, 2025
img
ভারতে হীরা রপ্তানি দ্বিগুণ করল রাশিয়া Nov 06, 2025
img
২০০ কোটির দোরগোড়ায় পৌছাতে চলেছে হরর কমেডি "থামা" Nov 06, 2025
img
দাকোপে জলবায়ু প্রকল্প পরিদর্শনে জয়া আহসান Nov 06, 2025
পিরোজপুরের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলোতে এক বছর ধরে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ Nov 06, 2025
img
বিপিএলে বিদেশি ক্রিকেটার কমানোর ভাবনা বিসিবির Nov 06, 2025
img
পোশাক রপ্তানিতে মার্কিন শুল্কের সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করছে আইএমএফ Nov 06, 2025
img
নেপালে ঝড় ও তুষারধসে ৯ নিহত, ৭ ইতালীয় পর্বতারোহী নিখোঁজ Nov 06, 2025
img
এবার আরেক আসন থেকে নির্বাচনের ঘোষণা হিরো আলমের Nov 06, 2025
img
ফেসবুকে যুক্ত হল নতুন বাটন Nov 06, 2025
img
সম্মানজনক আচরণ করলেই মামদানিকে সহায়তা করা হবে: ট্রাম্প Nov 06, 2025
img

প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত সেক্রেটারি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে আপনার সম্মান আপনি নষ্ট করবেন Nov 06, 2025
img
পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে দুর্বল করতে ব্যর্থ হয়েছে: পুতিন Nov 06, 2025
img
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অশালীন আচরণ, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার Nov 06, 2025
img
মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে : তারেক রহমান Nov 06, 2025
img
জামিন পেলেন সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী Nov 06, 2025
img
গণভোটসহ ৫ দফা দাবি আদায়ের মিছিল নিয়ে পল্টনে জামায়াত Nov 06, 2025
img
দাবি আদায়ের পথে অনেক দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে: গোলাম পরওয়ার Nov 06, 2025
img
বিমানবন্দরের ‘ফানেল’ এলাকায় উঁচু ভবন না করার সুপারিশ Nov 06, 2025
img

মোশাররফ আহমেদ ঠাকুর

পিচ্চি ছাও-ছানাকে দায়িত্ব দিয়ে নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন ড. ইউনূস Nov 06, 2025