২৫ বছরের মধ্যে আরও ৪ কোটি ১০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যে মধ্যে পড়বে: বিশ্বব্যাংক

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দারিদ্র্য হ্রাসের বৈশ্বিক অগ্রগতি মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এর ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ৪ কোটি ১০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যে পড়ে যেতে পারেন বলে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক। খবর দ্য ডন

‘দ্য ফিউচার অব পভার্টি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, বিশ্বজুড়ে চরম দারিদ্র্যে বসবাসকারীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া, সাব-সাহারান আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকা- এই তিন অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেবল দক্ষিণ এশিয়াতেই ২০৩০ সালের মধ্যে ৪ কোটি ৮৮ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মুখোমুখি হতে পারে। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের সংখ্যা বাড়তে পারে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ পর্যন্ত।

বিশ্বব্যাংক বলছে, জলবায়ুজনিত আঘাত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনেক দেশের আয় হ্রাস করছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো, যাদের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল, তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, উচ্চ আয়ের দেশগুলো জলবায়ু সংকটে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখলেও ক্ষতির বড় বোঝা বইছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো। তাই উন্নত দেশগুলোর উচিত প্রযুক্তি, অর্থায়ন ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানো।

বিশ্বব্যাংকের মতে, আয় বৈষম্য বৃদ্ধি পেলে দারিদ্র্য আরও দ্রুত বাড়বে। তাই অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে সহায়তা বৃদ্ধি জরুরি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়বে, যা সরাসরি দরিদ্র জনগণের ওপর প্রভাব ফেলবে। কারণ উন্নয়নশীল দেশগুলোর বেশিরভাগ পরিবার আয়ের বড় অংশ ব্যয় করে খাদ্যে।

বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২১০০ সালের মধ্যে যদি জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হয়, তাহলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উৎপাদন ২৩ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো- ধনী ও দরিদ্র দেশ একইভাবে উষ্ণতার শিকার হলেও, গরম অঞ্চলে অবস্থিত দরিদ্র দেশগুলোর ওপর এর অর্থনৈতিক আঘাত অনেক বেশি।

বিশ্বব্যাংক বলছে, এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে জলবায়ু সংকটের কারণে বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য ও বৈষম্য আরও প্রকট হবে।

টিকে/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ১৭৮৩ জন Jul 20, 2025
সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ৩৯ জন আসামি হাজির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে Jul 20, 2025
সমাবেশের অসুস্থতা কাটিয়ে দায়িত্বপালনে খুলনা যাচ্ছেন ডা. শফিকুর রহমান Jul 20, 2025
img
জাতীয় সমাবেশে যোগ দিতে এসে নেতাকর্মীর মৃত্যু, গভীর শোক প্রকাশ জামায়াত আমিরের Jul 20, 2025
img
দক্ষিণ কোরিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে নিহত ১৪ জন Jul 20, 2025
img
ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর চালু করতে কমিটি গঠনে হাইকোর্টের রুল জারি Jul 20, 2025
img
রংপুর সিটি করপোরেশনকে মৃত ঘোষণা করে গায়েবানা জানাজা Jul 20, 2025
img
একই দিনে কি মুক্তি পাচ্ছে ‘দ্য রাজা সাব’ ও ‘ধুরন্ধর’? Jul 20, 2025
img
হাসিনার ঘনিষ্ঠদের বিপুল সম্পদ যুক্তরাজ্যে, তদন্তে নেমেছে এনসিএ Jul 20, 2025
মদের নেশায় মারামারি, ফের শিরোনামে নোবেল Jul 20, 2025
img
কেয়ামত পর্যন্ত জামায়াত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারবে না : গয়েশ্বর Jul 20, 2025
img
‘উস্তাদ ভগত সিং’-এ প্রথমবার দেখা যাবে পবন-রাশি জুটি Jul 20, 2025
img
এক মাসের প্রস্তুতি, বিরামহীন প্রচারণা! জামায়াতের ব্যয়বহুল সমাবেশের নজির Jul 20, 2025
img
নব্বইয়ের অসমাপ্ত রাম চরিত্রে সালমান নয়, রামের ভূমিকায় অবশেষে রণবীর! Jul 20, 2025
img
নির্বাচনের মুখে জাপান, প্রধানমন্ত্রীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা Jul 20, 2025
img
ফিলার্স সরিয়ে বিপাকে উর্ফী,ঠোঁট ফুলে ঢোল Jul 20, 2025
img
অসুস্থ জামায়াত আমিরকে দেখতে তার বাসায় গেছেন ধর্ম উপদেষ্টা Jul 20, 2025
img
পোশাক নিয়ে বিতর্ক! উর্ফীর পাশে দাঁড়ালেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া Jul 20, 2025
সাকিবের নাম নিলে বাংলাদেশের নাম চলে আসে, পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিব কে মিস করবো! Jul 20, 2025
img
অভিবাসী আটক ক্ষমতা বাড়াতে দেশজুড়ে টেন্ট শিবির তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র Jul 20, 2025