৯ ঘণ্টা পর পুলিশ পাহাড়ায় মাইলস্টোন ছাড়লেন দুই উপদেষ্টা

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার ও আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। প্রায় ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বিপুল সংখ্যক পুলিশের পাহাড়ায় তারা দিয়াবাড়ি এলাকা ত্যাগ করেন।

এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন দুই উপদেষ্টা। তারা দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে কলেজের মূল ফটক ও ভবনের বাইরে আগে থেকেই অবস্থান নিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা তাদের উপস্থিতির বিরোধিতা করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন।

একপর্যায়ে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টাদের ঘিরে ফেলেন। পরিস্থিতি সংকটপূর্ণ হয়ে পড়লে উপদেষ্টারা ৫ নম্বর ভবনের নিচতলায় অবস্থিত কনফারেন্স কক্ষে আশ্রয় নেন।

ওই কক্ষটি কলেজের উপাধ্যক্ষের কক্ষসংলগ্ন। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৫–৭ জন প্রতিনিধি ভেতরে নেওয়া হয় আলোচনার জন্য। তবে এর মধ্যে পুরো কলেজজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে যে— উপদেষ্টারা ভেতরে অবস্থান করছেন। মুহূর্তেই কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ৫ নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হন এবং বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি তখন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, দুর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ উদ্ধার ও চিকিৎসায় চরম ব্যর্থতা দেখিয়েছে। সংকীর্ণ প্রবেশপথ, জরুরি আইডি কার্ডে অভিভাবকের ফোন নম্বর বা রক্তের গ্রুপের অনুপস্থিতি, দেরিতে অ্যাম্বুলেন্স আসা— এসব নানা বিষয় তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

একপর্যায়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কিছুটা শিথিল হলে উপদেষ্টারা পুলিশ প্রহরায় বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। তবে তখনও কিছু শিক্ষার্থীর বাধার মুখে পড়ে তারা ফের ভবনে ফিরে যেতে বাধ্য হন। অবশেষে প্রায় ৯ ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে পুলিশ সদস্যরা দুই উপদেষ্টাকে ভবন থেকে বের করে আনে এবং নিরাপদে এলাকা ত্যাগ করতে সহায়তা করে।

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখায় বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে বহু শিক্ষার্থী হতাহত হন। ঘটনার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জোর করে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়, কান্নায় ভেঙে পড়েন অভিনেত্রী মোহিনী Sep 17, 2025
img
আ. লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না, এ ব্যাপারে সবাই ঐক্যবদ্ধ : ফুয়াদ Sep 17, 2025
img
গাজা ইস্যুতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারেক রহমান Sep 17, 2025
img
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা Sep 17, 2025
img
কর্মজীবন থেকে ফ্যাশন: সমালোচনার চাপে মালাইকা Sep 17, 2025
img
দাবি না মানলে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা কারিগরি শিক্ষার্থীদের Sep 17, 2025
img
মেসির জার্সি উপহার পেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি Sep 17, 2025
img
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার Sep 17, 2025
img
রাকসু নির্বাচনের আগে শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি ঘোষণা Sep 17, 2025
img
পূজায় এলো ভালোবাসার গান Sep 17, 2025
img
মুখে হাসি থাকলেও বুকে শুরু হয় ভাঙচুর ঝড় : সাদিয়া জাহান প্রভা Sep 17, 2025
img
দেশ অস্থিতিশীলকারীদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে জনগণ : আমীর খসরু Sep 17, 2025
img
দুর্গাপূজা নিরাপদে উদযাপিত হবে : আইজিপি Sep 17, 2025
img
টি-টোয়েন্টির এক নম্বর বোলার এখন বরুণ চক্রবর্তী Sep 17, 2025
img
আফগানিস্তানকে হারানোর পরদিনই সুখবর পেলো বাংলাদেশ Sep 17, 2025
img
অভিনয় ছেড়ে ধর্মের পথে, রিজিকের প্রশ্নে যা বললেন তামিম মৃধা Sep 17, 2025
img
শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ভোট দিতে পারবেন না Sep 17, 2025
img
জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ১০ জন জেলহাজতে Sep 17, 2025
img
নির্বাচন পেছালে দেশের বাইরে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে : রুমিন ফারহানা Sep 17, 2025
img
কন্টেন্ট ক্রিয়েটর থেকে পাকিস্তানের শীর্ষ জনপ্রিয় অভিনেত্রী হানিয়া আমির! Sep 17, 2025