ফের বিশ্বব্যাপী ছড়াচ্ছে চিকুনগুনিয়া

মশাবাহিত চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের নতুন করে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে ইউরোপ ও অন্যান্য মহাদেশে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এই আহ্বান জানানো হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মেডিকেল কর্মকর্তা ডায়ানা রোহাস আলভারেজের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের ১১৯টি দেশের প্রায় ৫৬০ কোটি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে তীব্র জ্বর, হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রতিবন্ধিতা দেখা দিতে পারে।

রোহাস আলভারেজ ২০০৪-০৫ সালের প্রাদুর্ভাবের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, "আমরা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখতে পাচ্ছি।" সেবার প্রায় ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং প্রাথমিকভাবে ছোট ছোট দ্বীপ থেকে এটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল।

এবারও একই ধরনের চিত্র দেখা যাচ্ছে। চলতি বছরের শুরু থেকে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলো, যেমন লা রেউনিয়ঁ, মায়েত ও মরিশাসে বড় আকারের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। রোহাস আলভারেজ জানান, লা রেউনিয়ঁর আনুমানিক এক-তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠী এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসটি এখন মাদাগাস্কার, সোমালিয়া ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে ছড়াচ্ছে এবং ভারতসহ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও সংক্রমণ দেখা গেছে।

ইউরোপেও বাইরে থেকে আসা অনেকের মধ্যে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে এবং স্থানীয়ভাবে সংক্রমণের খবরও আসছে। মে মাসের ১ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত ফ্রান্সের মূলভূখণ্ডে বাইরে থেকে আসা প্রায় ৮০০ জনের শরীরে চিকুনগুনিয়া ধরা পড়েছে। এছাড়া ফ্রান্সের দক্ষিণের অঞ্চলগুলোতে স্থানীয় মশার মাধ্যমে সংক্রমিত ১২ জন শনাক্ত হয়েছে। ইতালিতেও গত সপ্তাহে একজনের শরীরে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস ধরা পড়েছে।

প্রধানত এইডিস প্রজাতির মশার মাধ্যমে ছড়ানো চিকুনগুনিয়ার কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এই এইডিস মশাই ডেঙ্গু ও জিকা ভাইরাসেরও বাহক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকুনগুনিয়া অতি দ্রুত বড় প্রাদুর্ভাব সৃষ্টি করতে পারে। এইডিস জাতীয় মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়, তাই প্রতিরোধই চিকুনগুনিয়া ভাইরাস থেকে বাঁচার প্রধান উপায়। তারা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে মশার স্প্রে ব্যবহার এবং লম্বা হাতাযুক্ত পোশাক পরারও পরামর্শ দিচ্ছেন।

সূত্র : রয়টার্স

এমকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ডেঙ্গু জয় করে বাড়ি ফিরলেন বিজয় দেবরাকোন্ডা Jul 24, 2025
img
আগামীতে এনসিপির নেতৃত্বে সরকার গঠন হবে : নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী Jul 24, 2025
img
আদালতে জামিন নিতে গিয়ে শিবিরের তোপের মুখে গ্রেফতার আ.লীগের দুই নেতা Jul 24, 2025
img
‘ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের আগে দাঁতও মাজেনি!’, সহ-অভিনেতার অপরিচ্ছন্নতায় বিদ্যার অস্বস্তি Jul 24, 2025
img
শোকের রাতে রাজনৈতিক নাটক, মানবিকতা কোথায়? : মাসুদ কামাল Jul 24, 2025
img
নির্বাচন পেছাতে একটি শ্রেণিকে মাঠে রাখা হয়েছে : জাহেদ উর রহমান Jul 24, 2025
img
প্রথম বিদেশ সফরে কুয়ালালামপুর গেলেন পররাষ্ট্রসচিব Jul 24, 2025
img
রাষ্ট্রের অর্থের অভাব পড়ল কোথায়, জানতে হবে : রনি Jul 24, 2025
img
দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা Jul 24, 2025
img
কারাগারের ভেতরে ধর্ম উপদেষ্টার সঙ্গে আ.লীগ এমপিদের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে Jul 24, 2025
img
‘ওয়ার ২’ তে চমক হিসাবে শেষে থাকছে ‘আলফা’র আলিয়া-শারভারি Jul 24, 2025
img
স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে গুলশানের বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া Jul 24, 2025
img
শাহিদ কাপুরকে নিয়ে ‘ছত্রপতি শিবাজি’ হচ্ছেনা, ক্ষুব্ধ পরিচালক অমিত রাই Jul 24, 2025
পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা Jul 24, 2025
যেভাবে পরকীয়া প্রেমিকের কাহিনী শুনিয়েছিলেন টুনি নিজেই Jul 24, 2025
পুলিশ কর্মকর্তার গাড়িতে সেনা তল্লাশি Jul 24, 2025
প্রিজন ভ্যানে অঝোরে কাঁদলেন পলক, দোয়ার আকুতি Jul 24, 2025
ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে সিপিবি, বাসদ ও বাংলাদেশ জাসদের ‘ওয়াকআউট Jul 24, 2025
জনবহুল শহরে উড়ছে সামরিক বিমান, খালি পরে আছে ছয়টিরও বেশি এয়ারফিল্ড Jul 24, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Jul 24, 2025