ফুকুশিমা দুর্ঘটনার পর নতুন পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণে জাপান

কানসাই ইলেকট্রিক পাওয়ার গতকাল মঙ্গলবার (২২ জুলাই) জানিয়েছে, তারা জাপানের পশ্চিমাঞ্চলের ফুকুই প্রিফেকচারে অবস্থিত মিহামা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে একটি নতুন পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের জন্য জরিপ শুরু করতে যাচ্ছে।

এই সিদ্ধান্তটি ২০১১ সালের ফুকুশিমা দুর্ঘটনার পর জাপানে নতুন পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণে প্রথম বড় পদক্ষেপ। ফুকুশিমায় সেই সময় বড় ধরনের পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে, যা সারা বিশ্বে আলোড়ন তোলে। জাপান এখনো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল।

তাই দেশটি চায়, পারমাণবিক শক্তি আরো বেশি ভূমিকা রাখুক দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায়। বর্তমানে, চুল্লি চালু থাকার সংখ্যার দিক থেকে কানসাই ইলেকট্রিক জাপানের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কম্পানি। নতুন জরিপে মাটির গঠন, ভূতাত্ত্বিক বিষয় ও অন্যান্য কারিগরি বিষয় দেখা হবে। এ ছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনাও আছে।

কানসাই ইলেকট্রিকের পারমাণবিক বিভাগের প্রধান হিরোআকি কিতাউরা বলেন, নতুন প্রযুক্তি, সাশ্রয়ী খরচ ও নিরাপত্তা নিয়ম মেনে চলার দিক বিবেচনা করে এসআরজেড-১২০০ নামের একটি উন্নত পারমাণবিক চুল্লিকে সবচেয়ে উপযুক্ত মনে হচ্ছে। এই চুল্লির ডিজাইন তৈরি করছে মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ। যারা কানসাইসহ আরো কয়েকটি কম্পানির সঙ্গে কাজ করছে। চুল্লি নির্মাণে ঠিক কত খরচ হবে, তা এখনো জানায়নি কানসাই।

তবে কম্পানিটি বলেছে, তারা ঋণ, বন্ড ও অন্যান্য উপায়ে অর্থ সংগ্রহ করবে। এই মুহূর্তে তারা নতুন শেয়ার ইস্যুর পরিকল্পনা করছে না।

উল্লেখযোগ্য, ২০১০ সালে মিহামা ১ নম্বর চুল্লির পরিবর্তে নতুন চুল্লি নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল, কিন্তু ২০১১ সালের ভূমিকম্প ও ফুকুশিমা দুর্ঘটনার পর তা বন্ধ রাখা হয়। পরে, ২০১৫ সালে, তারা মিহামার ১ ও ২ নম্বর পুরনো চুল্লি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।

জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ইয়োজি মুটো বলেন, ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।

তাই নিরাপদ ও স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য উপায়ে নতুন প্রজন্মের চুল্লি তৈরি করা জরুরি, যাতে কার্বনমুক্ত বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা যায়।’ বর্তমানে জাপানে ১২টিরও বেশি পারমাণবিক চুল্লি চালু আছে, যেগুলোর সম্মিলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১২ গিগাওয়াট। তবে ২০১১ সালের আগে দেশটিতে ৫৪টি চুল্লি চালু ছিল।

সূত্র : সিএনএন

এমআর/এসএন    

Share this news on:

সর্বশেষ

img
চীন বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ Nov 05, 2025
img
বিএনপি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক : মাসুকুল রাজীব Nov 05, 2025
img
নিউজিল্যান্ডকে ৭ রানে হারালো ওয়েস্ট ইন্ডিজ Nov 05, 2025
img
তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের রায় ছিল একটি দলকে সুবিধা দিতে: অ্যাটর্নি জেনারেল Nov 05, 2025
img
পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারলেন না সালাহউদ্দিন Nov 05, 2025
img
নির্বাচনে জামায়াত কোন জোট গঠন করবে না: ডা. শফিকুর রহমান Nov 05, 2025
img
মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের কারণ জানা গেল Nov 05, 2025
img
আমার রাজনৈতিক জীবনের অপমৃত্যু অকালে ঘটে গেলো: পাপিয়া Nov 05, 2025
img
বিএনপির রাজনীতির মধ্যে রংধনু রয়েছে: এ্যানি Nov 05, 2025
img
সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১৭৪৮ Nov 05, 2025
img
ভারতে যাত্রীবাহী ট্রেন-মালগাড়ি সংঘর্ষে নিহত ১০ Nov 05, 2025
img
মালদ্বীপে এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময় সভা Nov 05, 2025
img
মামদানিকে শুভেচ্ছা জানালেন বলিউডের তারকারা! Nov 05, 2025
img
জকসু নির্বাচন ২২ ডিসেম্বর Nov 05, 2025
img
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য জামায়াতের দুই সদস্যের কমিটি গঠন Nov 05, 2025
img
একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা ৫ ব্যাংকের পর্ষদ বিলুপ্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক Nov 05, 2025
img
৩৭ বছরে পা রাখা কোহলির অবিশ্বাস্য কিছু অর্জন-রেকর্ড Nov 05, 2025
img
মায়ের ছবির সিক্যুয়ালে দেখা যাবে শ্রীদেবীকন্যা খুশি কাপুরকে! Nov 05, 2025
img
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হচ্ছে ৪ দিন ব্যাপী শীতকালীন বইমেলা সিজন-২ Nov 05, 2025
img
বিএনপির কাছে ২০ আসন ও মন্ত্রিত্ব চায় এনসিপি Nov 05, 2025