মহাজাগতিক বিস্ফোরণের শঙ্কা, সরাসরি আঘাত হানতে পারে চাঁদে!

বিশাল ‘সিটি-কিলার’ গ্রহাণুটি (অ্যাস্টেরয়েড) অল্পের জন্য সরাসরি পৃথিবীতে আঘাত হানবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সতর্ক করেছে, ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর ‘২০২৪ ওয়াইআর৪’ নামের এই গ্রহাণুটি চাঁদের সঙ্গে ধাক্কা লাগার ৪.৩ শতাংশ আশঙ্কা রয়েছে।

এই মহাজাগতিক পাথরটির আকার ১৫ তলা ভবনের সমান (প্রায় ২০০ ফুট চওড়া)। এটি যদি সত্যিই চাঁদের ওপর আঘাত হানে, তা হবে দশকের সবচেয়ে দৃশ্যমান মহাজাগতিক ঘটনা, যা সাধারণ টেলিস্কোপ দিয়েও দেখা যাবে।এসময় চাঁদের পৃষ্ঠে বিশাল বিস্ফোরণ ঘটতে পারে, যার ফলে প্রায় এক কিলোমিটার চওড়া গর্ত সৃষ্টি হতে পারে। এই ধাক্কা চাঁদের কক্ষপথ পরিবর্তন করবে না, পৃথিবীর ওপর সরাসরি কোনও প্রভাব ফেলবে না, বলে জানিয়েছে নাসা। তবে এর ফলে বুলেটের মতো গতিতে ছুটে আসা চাঁদের ধ্বংসাবশেষ বা মেটিওর ছুটে আসতে পারে পৃথিবীর দিকে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় বেশিরভাগ টুকরো পুড়ে যাবে, কিন্তু কিছু অংশ উপগ্রহ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। খবর গালফ নিউজের।

এই ধাক্কার পর সৃষ্টি হওয়া ধূলিকণা ও ধ্বংসাবশেষে জিপিএস, ইন্টারনেট, আবহাওয়া পূর্বাভাসসহ গুরুত্বপূর্ণ উপগ্রহগুলো হুমকির মুখে পড়তে পারে। নাসার প্ল্যানেটারি ডিফেন্স টিমের মলি ওয়াসার জানান, এটি এখন সূর্যের চারপাশে ঘুরছে এবং জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ এর সর্বশেষ তথ্য দিয়ে এর গতি ও কক্ষপথ বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

নতুন তথ্য অনুযায়ী ধাক্কা লাগার শঙ্কা ৩.৮% থেকে বেড়ে ৪.৩% হয়েছে। নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সিসহ বিভিন্ন সংস্থা এখন এই পরিস্থিতি নজরে রাখছে। নিউমির নামক নতুন ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ থাকলে অ্যাস্টেরয়েডটি এক মাস আগেই শনাক্ত করা যেত, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি শিক্ষা। এই ঘটনাটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যে মহাকাশে আমাদের অবস্থান কতটা অনিশ্চিত।

 যদিও পৃথিবী সরাসরি এই ধাক্কার শিকার হবে না, তবুও চাঁদের ওপর এই আঘাত হতে পারে একটি যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ এবং গ্রহ প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির পরীক্ষা।

 গ্রহাণুটি যদি সত্যিই চাঁদে আঘাত করে, তবে তা হবে এক নজিরবিহীন মহাজাগতিক দৃশ্য- একদিকে যেমন অভূতপূর্ব সৌন্দর্য, অন্যদিকে তেমনি উপগ্রহ ও প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ২২ ডিসেম্বর ২০৩২ দিনটি মহাকাশপ্রেমীদের ক্যালেন্ডারে এখন থেকেই চিহ্নিত করে রাখাই ভালো।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

৬ বছর পর ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা Jul 29, 2025
"নোটিশ দেন" বলে অভিযোগ বাসার মালিকের; যা বললেন রাজউক কর্মকর্তা Jul 29, 2025
জীবনের জন্য জরুরী ৩টি দোয়া Jul 29, 2025
img
রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, মোটরসাইকেলে আগুন Jul 29, 2025
img
অবশেষ ব্যান্ডের নতুন গান “সত্য আবেশ” মুক্তি পেয়েছে Jul 29, 2025
img
ওভালে পিচ কিউরেটরের সঙ্গে প্রবল বচসায় গৌতম গম্ভীর Jul 29, 2025
img
কোহলিকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন মঈন আলী Jul 29, 2025
img
মাদারীপুরের সুমাইয়ার টানে ছুটে এলেন চীনা যুবক Jul 29, 2025
img
পিন্ডি ভেঙেছি দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয় : নাহিদ ইসলাম Jul 29, 2025
img
ইউরোপের যেসব দেশে বসবাস শুরু করলেই পাবেন কোটি টাকা! Jul 29, 2025
img
পহেলগামের হামলাকারীদের সবাই নিহত : অমিত শাহ Jul 29, 2025
img
'বোটক্স-ফিলার্স বিতর্কে মুখ খুললেন ভূমি পেডনেকর' Jul 29, 2025
img
ড্রোন হামলায় ইউক্রেনে নিহত ২২ Jul 29, 2025
img
বিজেপি নেতার ছেলের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জনে সারা আলি খান Jul 29, 2025
img
মরক্কোতে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২ পাইলট নিহত Jul 29, 2025
img
জুলাই সনদের খসড়া গ্রহণ করতে পারি না: এনসিপি Jul 29, 2025
img
জুলাই শুধু স্বৈরাচার মুক্তির মাস নয়, এটা পুনর্জন্মের মাস: প্রধান উপদেষ্টা Jul 29, 2025
img
দ্রুত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত না নিলে আন্দোলনের মাঠে অনেক কিছুই হতে পারে: রাফি Jul 29, 2025
img
‘সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ’ অ্যাওয়ার্ড বিতর্কে মুখ খুললেন অ্যাডলফ খান Jul 29, 2025
img
আবার কোন ধারাবাহিকে ফিরছেন শোলাঙ্কি? Jul 29, 2025