জুলাই আন্দোলনে মারণাস্ত্র ব্যবহারে কারা উৎসাহী ছিলেন জানালেন সাবেক আইজিপি

জুলাই বিপ্লব নামে পরিচিত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে মারণাস্ত্র ব্যবহার, হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও ব্লক রেইডের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

আদালতে তার দেওয়া জবানবন্দির নথিতে এমন তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) আদালত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জবানবন্দিতে সাবেক এই আইজিপি বলেন, ‘২০২৪ সালের ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় বৈঠক হতো তাদের।

বৈঠকে দুজন সচিব, এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিবির হারুন অর রশীদ, র‌্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক, আনসারের ডিজি, এনটিএমসির জিয়াউল আহসানসহ অনেকে উপস্থিত থাকতেন। মূলত এ বৈঠক থেকে সব রকম নির্দেশনা ও পরামর্শ করা হতো।’

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি আরো বলেন, ‘কোর কমিটির এক বৈঠকে সমন্বয়কদের আটক করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ছয় সমন্বয়ককে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

আন্দোলন প্রত্যাহারে তাদের মানসিক নির্যাতন ও চাপ দেওয়া হয়। কর্মসূচি প্রত্যাহারে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিতে বলা হয়। ঢাকার মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার প্রধান হারুনকে জনাব বলে ডাকতেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কেননা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কার্যকর মনে করা হতো তাকে।

আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার থেকে গুলির বিষয়ে জবানবন্দিতে মামুন বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের নজরদারি, গুলি করে ভীতিকর পরিবেশ তৈরির গোপন পরিকল্পনা হয়। র‌্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক হারুন অর রশীদের পরিকল্পনায় মূলত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘আন্দোলন দমনে মারণাস্ত্র ব্যবহার এবং আন্দোলনপ্রবণ এলাকায় ব্লক রেইডের সিদ্ধান্তও হয় রাজনৈতিকভাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে তাকে লেথাল উইপেন ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়েছিলেন। ডিএমপি সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিব এবং ডিবির সাবেক হারুন অর রশীদ লেথাল উইপন ব্যবহারে অতিউৎসাহী ছিলেন।

এ ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ অনেকে মারণাস্ত্র ব্যবহারে পরামর্শ ও উসকানি দিয়েছিলেন বলেও জানান সাবেক এই আইজিপি।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আগস্টে হজ প্যাকেজ ঘোষণা হতে পারে, চেষ্টা থাকবে খরচ কমানোর : ধর্ম উপদেষ্টা Jul 31, 2025
img
থালাপতি বিজয়কে ছাড়া ‘এলসিইউ’ সম্ভব নয়, লোকেশের স্পষ্ট ঘোষণা Jul 31, 2025
img
ঝালমুড়ি বিক্রেতার এক মাসে বিদ্যুৎ বিল ১১ লাখ টাকা Jul 31, 2025
img
সালমান-আমিরদের টেক্কা দিল নতুনরা, ১২ দিনে কত আয় করল ‘সাইয়ারা’ Jul 31, 2025
img
১০২ জন এসিল্যান্ডকে প্রত্যাহার করেছে সরকার Jul 31, 2025
img
জুলাই পদযাত্রায় জনগণের সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক হয়েছে এনসিপির Jul 31, 2025
img
মিরসরাইয়ে বিএনপিসহ যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার, প্রত্যাহার চেয়ে বিক্ষোভ Jul 31, 2025
img
চীনের মেগা ড্যাম প্রকল্প যেভাবে বদলে দিতে পারে এশিয়ার ভূরাজনৈতিক মানচিত্র Jul 31, 2025
img
ট্রাফোর্ডকে দলে ভিড়িয়ে যে রেকর্ড গড়লেন পেপ গার্দিওলা Jul 31, 2025
ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে অংশ নেবেন খালেদা জিয়া! Jul 31, 2025
রুপ বদলেছে হার্ট এট্যাক, পরিনত হয়েছে নিরব ঘাতকে! Jul 31, 2025
ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা ট্রাম্পের Jul 31, 2025
আ.লীগের সশস্ত্র গোষ্ঠী নানা রকম তৎপরতা-অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করছে: রনি Jul 31, 2025
img
সিঙ্গাপুর-কানাডা সম্পর্ক জোরদারে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে সিঙ্গাপুরের নেতার ফোনলাপ Jul 31, 2025
কটু ভাষায় আধ্যাত্মিক গুরুকে বিঁধলেন খুশবু Jul 31, 2025
"তাসকিনের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিলেন বন্ধু সৌরভ,পারিবারিকভাবে মিটেছে বিষয়টা" Jul 31, 2025
img
‘ক্ষুধা কখনও কমে না’, ফরাসি ক্লাব তুলুজকে হারিয়ে রোনালদো Jul 31, 2025
img
বিএনপি শক্তিশালী হলে দেশ ও গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে : প্রিন্স Jul 31, 2025
img
সাবেক দুই ডিসিসহ ‎মাদারীপুরে ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু Jul 31, 2025
img
অস্ট্রেলিয়া সফরে কেন যেতে চান, জানালেন নাইম Jul 31, 2025