ইরাকজুড়ে আরবাইন উপলক্ষে শুরু হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আগামী ৪ আগস্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আরবাইনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ। রাজধানী বাগদাদসহ কারবালা, নজাফ ও আশপাশের অঞ্চলগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্কাবস্থায় থাকবে। প্রতিবছর লাখ লাখ তীর্থযাত্রী এই সময় কারবালায় সমবেত হন, ফলে সম্ভাব্য যেকোনো ধরনের হামলা বা বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে নেওয়া হচ্ছে আগাম প্রস্তুতি। খবর শাফাক নিউজের।
এদিকে, পবিত্র শহরগুলোতে ভ্রমণরত চালকদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে তীর্থ সংক্রান্ত সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কমিটি। চালকদের গতি নিয়ন্ত্রণ, গাড়ি চালুর আগে যান্ত্রিক পরীক্ষা এবং অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র সঙ্গে রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। গরমের কারণে যানবাহনে অগ্নিকাণ্ড বা যান্ত্রিক ত্রুটির আশঙ্কা বাড়ায় ক্লান্ত চালকদের ড্রাইভিং বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি বাস কোম্পানিগুলোকে অতিরিক্ত চালক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করা যায়।
নজাফে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী সশস্ত্র গোত্রীয় প্রদর্শনের জেরে বড় ধরনের প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গোত্রীয় উত্তেজনা ও নগরজুড়ে সৃষ্ট অস্থিরতার পর নজাফ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল মাইথাম আল-মাসউদিকে বরখাস্ত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল আমির আল-শাম্মারি।
এছাড়া, বাগদাদের সাদর শহরের দ্বিতীয় এলাকায় সন্দেহভাজন একটি মোটরসাইকেলে অভিযান চালিয়ে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। আটককৃতদের মধ্যে একজন মুখোশ পরিহিত ছিল। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ ও একটি অবৈধ পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনায়, ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা ‘নুখাইব কারাগারের হাজ্জাজ’ নামে কুখ্যাত এক সাবেক সাদ্দাম আমলের নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে। আজাজ আহমেদ হারদান নামের এই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে মৃত বলে বিবেচিত ছিলেন এবং তিনি ছিলেন সেই যুগের অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধী।
সাম্প্রতিক কিছু সংবাদমাধ্যমে সিরীয় নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে যে দাবি করা হয়, তা অস্বীকার করেছে ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেসব সিরীয় নাগরিকের বৈধ ট্যুরিস্ট বা ধর্মীয় ভিসা রয়েছে, তাদের প্রবেশে কোনো বাধা নেই। এসব গুজব সঠিক নয় বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, আরবাইন হলো ইরাকের কারবালায় হোসেনের মাজারে তীর্থযাত্রার একটি দিন। তীর্থযাত্রীরা সেখানে প্রায়ই পায়ে হেঁটে আসে। সবচেয়ে জনপ্রিয় পথ হলো নাজাফ থেকে কারবালা, কারণ অনেক তীর্থযাত্রী প্রথমে নাজাফ যান এবং তারপর সেখান থেকে প্রায় আশি কিলোমিটার দূরে হেঁটে কারবালায় যান। আর সেখানে পায়ে হেঁটে সাধারণত তিনদিন লাগে।
পিএ/টিএ