পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি মুন্নু জুট স্টাফলার্স শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়ে তা প্রত্যাহার করে নেয়ার পর থেকে ‘অস্বাভাবিক’ দাম বেড়েছে শেয়ারের । জুলাইয়ের ২২ তারিখ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার দাম তিনগুণ বেড়েছে। এতে শেয়ারহোল্ডারদের লাভ হয়েছে ২৫৬ কোটি টাকার ওপরে।
মুন্নু জুটের ২২ জুলাই থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ কার্যদিবসের চিত্র পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ডিএসইর ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২২ জুলাই মুন্নু জুট স্টাফলার্সের শেয়ার দাম ছিল ৬৮৭ টাকা ৯০ পয়সা। সেখান থেকে টানা বেড়ে ৯ সেপ্টেম্বর লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২৭ টাকা ২০ পয়সায়। অর্থাৎ দেড় মাসের কম সময় কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ১ হাজার ২৩৯ টাকা ৩০ পয়সা বা ১৮০ শতাংশ।
মাত্র ২ কোটি ৭ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২০ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে ৪২ দশমিক ৯৮ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। এ হিসাবে শেয়ারের দাম বাড়ার ফলে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের লাভ হয়েছে ১১০ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির বাকি শেয়ারের মধ্যে ৫০ দশমিক ৩৭ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এ হিসাবে মুন্নু জুটের শেয়ারে বিনিয়োগ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৩০ কার্যদিবসে লাভ হয়েছে ১২৯ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের লাভ হয়েছে ১৬ কোটি ৯০ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও সম্প্রতি কোম্পানিটি কোনো মূল্য সংবেদশীল তথ্য প্রকাশ করেনি। যে কারণে শেয়ারবাজারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে কোম্পানিটিকে নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশের জবাবে ২০ আগস্ট কোম্পানিটি ডিএসইকে জানায় শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পিছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।
সম্প্রতি বড় ধরনের কোনো মূল্য সংবেদশীল তথ্য প্রকাশ না করলেও গত ২ মে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তৃতীয় প্রান্তিকের (২০১৮ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ওই আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটি ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসের ব্যবসায় গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি মুনাফা করেছে।
২০১৮-১৯ হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ৫ টাকা ৭০ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৯৫ পয়সা। মুনাফা এমন উল্মফন হলেও সে সময় কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়েনি। উল্টো টানা কমেছে।
টাইমস/এএইচ/এইচইউ