‘বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে’— ভয়ে কলকাতায় এক ব্যক্তির আত্নহনন

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। নিহত ওই ব্যক্তির নাম দিলিপ কুমার সাহা। তার পরিবারের দাবি, বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে এমন আশঙ্কায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

নিহত দিলিপ ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছিলেন। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে সোমবার (৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কলকাতার একটি বাসা থেকে রোববার ৬৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) চালু হলে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে— এই আশঙ্কায় তিনি ভেঙে পড়েছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে দিলিপ কুমার সাহা নামের ওই ব্যক্তি ১৯৭২ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে কলকাতায় এসেছিলেন এবং দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার আনন্দপল্লি ওয়েস্টে বসবাস করছিলেন।

তিনি ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি স্কুলে অবৈতনিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন।

এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আজ সকালে তার স্ত্রী বারবার ডাকলেও কোনো সাড়া না পেয়ে পাশের বাড়ি থেকে এক আত্মীয়কে ডেকে আনেন। পরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তাকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।”

দিলিপ সাহার স্ত্রী আরতী সাহা জানান, এনআরসি চালু হলে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে— এই আশঙ্কায় দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক চাপে ছিলেন তার স্বামী।

তিনি বলেন, “অন্যান্য কোনো দুশ্চিন্তা ছিল না। ছোটবেলায় তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। ভয় পেতেন, তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে পরে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে— যেখানে তার কোনো আত্মীয়স্বজন নেই। তার বৈধ ভোটার আইডি ও অন্যান্য কাগজপত্র ছিল।”

পুলিশের ধারণা, এই ভয় থেকেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। তার ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।

এনডিটিভি বলছে, খবর পেয়ে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী ও স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অরূপ বিশ্বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, “দেশ থেকে বের করে দেওয়ার ভয় একজন মানুষকে কী করতে বাধ্য করতে পারে, সেটাই আজ দেখা গেল। এনআরসির নামে কেন্দ্র যা শুরু করেছে, তা জনবিরোধী মনোভাবেরই প্রতিফলন।

এফপি\টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু Aug 04, 2025
img
বাংলাদেশকে হালাল পণ্যের হাব হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার Aug 04, 2025
‘যেকোনো সময়ে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত বিএনপি’ Aug 04, 2025
img
বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানকে শুভেচ্ছা জানালেন ফিফা সভাপতি Aug 04, 2025
img
মালায়ালাম থেকে তামিল-তেলেগু ছবিতে মালবিকার জয়যাত্রা Aug 04, 2025
আমি গরিবের ছেলে, লোভ সামলাতে পারিনি’—রিয়াদের জবানবন্দি প্রকাশ্যে Aug 04, 2025
img
ওভালে অবিশ্বাস্য জয় ভারতের, সিরিজ ড্র Aug 04, 2025
img
এবার ট্রাম্পকে নোবেলের জন্য মনোনীত করল কম্বোডিয়া Aug 04, 2025
img
এআই দিয়ে রানঝানার কাহিনী বদলে দেওয়ায় উত্তাল দর্শকমহল Aug 04, 2025
img
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে যেসব সড়ক এড়িয়ে চলতে বললো ডিএমপি Aug 04, 2025
img
শিক্ষকদের এমপিওভুক্তকরণের দাবি জানাল জামায়াত Aug 04, 2025
ড. ইউনূসের দল নিয়ে আস্থা হারালেন রেজা কিবরিয়া Aug 04, 2025
img
১০ আগস্ট খসড়া ও ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে ইসি Aug 04, 2025
img
‘নির্বাচন পূর্ববর্তী অবস্থা পর্যবেক্ষণে সেপ্টেম্বরে ঢাকায় আসছে ইইউ প্রতিনিধি দল’ Aug 04, 2025
img
আমরা চাই না কেউ অভুক্ত থাকুক : ট্রাম্প Aug 04, 2025
মাহাদী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিন নেতা Aug 04, 2025
‘ছাত্রলীগের ছদ্মবেশে নির্যাতনে জড়িত ছিলেন শিবির নেতাকর্মীরা’ Aug 04, 2025
দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Aug 04, 2025
img
বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধে এক বছরে কলকাতার অর্থনীতিতে ক্ষতি ৫০০০ কোটি! Aug 04, 2025
img
জুলাই আন্দোলনের আহত ইমরান সাক্ষ্য দিলেন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে Aug 04, 2025