জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন গত বছর জুলাই বিপ্লবে সরকার পতন আন্দোলনে ব্যাপক সরব ছিলেন। ছাত্র জনতার পক্ষে রাস্তায়ও নেমেছিলেন। তবে পট পরিবর্তনের পর দেশের সাম্প্রতিক অবস্থায় খুশি নন এ অভিনেত্রী। তার মতে, জুলাইয়ের আশা পূরণ হয়নি।
বরং দেশ আরো অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। এমনকী ইউনূস সরকারের সমালোচনাও শোনা যায় তার মুখে। বলতে গেলে একরকম হতাশ অভিনেত্রী। এবার তার মুখে শোনা গেল সাংস্কৃতিক অঙ্গন নিয়ে হতাশার কথা।
সম্প্রতি একটি পডকাস্টে হাজির হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
পডকাস্টে উপস্থিত হয়ে দেশের চলমান অবস্থা, শিল্প সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রসঙ্গে কথা বলেন বাঁধন। ধর্মকে সবসময় শিল্প-সংস্কৃতির মুখোমুখি করে রাখা হয় উল্লেখ করে বাঁধন বলেন, ‘এক ধরনের দ্বন্দ্ব তো সবসময় আছেই যে ধর্মের সাথে আমাদের সংস্কৃতিকে মুখোমুখি জায়গায় দাঁড় করে রাখা হয়। মানে এটা আমি জানিনা কেন।
পলিটিক্যাল কারণে বা এটা ইচ্ছা করে করে রাখা হয় কিনা। কিন্তু আমি ফিল করি যে সবসময় ধর্মকে এবং শিল্প সংস্কৃতিকে একটা মুখোমুখি জায়গায় রাখা হয়। এখন আমরা যেটা দেখতে পাচ্ছি যে যারা সাংস্কৃতিক কাজে বাধা দিচ্ছে তারা আসলে কোন একটা ধর্মে বিশ্বাসী এবং তারা মনে করছে যে তাদের ধর্মের সাথে এটা যাচ্ছে না। সুতরাং তারা বাধা দিচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় নাটক বন্ধ করছে।
শিল্পকলায় নানান রকমের প্রবলেম হয়েছে। মঞ্চ নাটকের মাঝখানে বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও ট্যাগিং দিয়ে বন্ধ করেছে যে আওয়ামী লীগের হয়তো কেউ ছিল এই জন্য বন্ধ করেছে, কিন্তু এটা তো অন্যায়।’
উত্তরায় শুটিং বন্ধ প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ‘উত্তরায় শুটিং বন্ধ করার নোটিশ দেয়া হয়েছিল বিকজ ওটা একটা আবাসিক এলাকা। কিন্তু এটা তো এত বছর ধরে চলছে এখন হঠাৎ করে কেন মনে হলো? এরকম নানান প্রশ্ন আছে আসলে যেগুলোর নোন উত্তর নেই। কিন্তু এই মন মানসিকতা থেকে আসলে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’
ক্ষমতার পালাবদলে শুধু সিন্ডিকেট বদল হয়েছে। আগের সব দুর্নীতি রয়ে গেছে। এমনটা উল্লেখ করে বাঁধন বলেন, ‘যেটা হয়েছে যে এক ধরনের সিন্ডিকেট গেছে আরেক ধরনের সিন্ডিকেট আসছে। কিন্তু চেঞ্জের চিন্তা কিন্তু আসলে কেউ করছে না। এই যে যে বাধাগুলো আসছে এগুলো কেন আসছে, এগুলো নিয়ে যে কথা হবে, মুভমেন্ট হবে, সেটার খুব একটা ইচ্ছা কিন্তু কারো মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।আগের দল যা করতে পেরেছে করে গেছে, এখন আবার নতুন যারা সুবিধা পাচ্ছে তারা আবার তাদের সুবিধাটা নেয়ার চেষ্টা করছে।’
এর আগে, ড. ইউনূসের সমালোচনা করে বাঁধন বলেছিলেন, তার নেতৃত্বে ভালো কিছু আশা করলেও তা হয়নি। বাঁধন বলেন, ‘আমার মনে হয়েছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তত এমন একজন হবেন না, যিনি ক্ষমতা বা টাকার লোভে দেশ চালাতে ব্যর্থ হবেন। বরং তার নেতৃত্বে গঠিত সরকার ভালো কিছু করার চেষ্টা করবে এমনটাই প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।’
পিএ/এসএন