ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কর্মসূচিতে মব সৃষ্টি করে অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইউটিএলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাস ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন এ নিন্দা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম অংশীদার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখে অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে টিএসসিতে বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রদর্শনীর আয়োজন করে। সেখানে বিচারিক হত্যাকাণ্ডের শিকার বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কয়েকজনের ছবি সম্বলিত পোস্টার টানিয়ে বিগত ফ্যাসিবাদী দু:শাসনের চিত্র জাতির সামনে তুলে ধরে। এই ছবিগুলোকে কেন্দ্র করে কয়েকটি বাম ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা মব তৈরি করে অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালায়।
ইউটিএল মনে করে, জুলাই-পরবর্তী বাংলাদেশে অভ্যুত্থানপন্থি সব ছাত্র সংগঠন সুষ্ঠু ও বাধাহীনভাবে নিজেদের কর্মসূচি পালন করবে। কেউ কাউকে কর্মসূচি পালনে বাধা দেবে না এবং সবাই মিলে ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে। মত পার্থক্য থাকলে তা গঠনমূলক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে প্রকাশ করবে। ক্যাম্পাসে সব ছাত্র সংগঠনের মধ্যে পারস্পরিক সহিষ্ণুতা বজায় থাকবে। ইনসাফ ও ন্যায়ের ভিত্তিতে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে এবং একই সাথে ছাত্র সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ছাত্র সংগঠনগুলো কাজ করে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মত ভিন্নতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মতভেদকে কেন্দ্র করে সংঘাত, হুমকি বা অপমানজনক আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।
ইউটিএল নেতারা বলেন, বিগত ১৬ বছরে দেশে কীভাবে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখার কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ পাচার, বিচারিক হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন, মানবাধিকার লঙ্ঘন; এসব ছিল সেই সময়ের স্বাভাবিক চিত্র। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ, ভুয়া সাক্ষ্য-প্রমাণ ও মিথ্যা নথির মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বিচারিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের অন্যতম দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থীদের সঠিক পথে পরিচালিত করা এবং জাতির ক্রান্তিকালে সঠিক দিক নির্দেশনা দেয়া। কিন্তু কিছু শিক্ষক দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে বিচ্যুত হয়ে সংগঠনের ব্যানারে বিগত ১৬ বছরের ন্যায় বর্তমান সময়েও ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন জোগাচ্ছেন। আমরা ইউটিএলের পক্ষ এই ধরনের কর্মকাণ্ডেরও নিন্দা জানাই।
পিএ/এসএন