যেভাবে অনলাইনে সন্তানের গোপনীয়তা বজায় রাখবে

অনলাইন গোপনীয়তা রক্ষার প্রয়োজন দিন দিন বাড়ছে। এই গোপনীয়তা বলতে অনলাইনে আমাদের ছবি ও শেয়ার করা তথ্য কে দেখতে পাবে আর কে দেখতে পাবে না, কোনটা প্রকাশিত হবে আর কোনটা হবে না, তার নিয়ন্ত্রণকে বোঝায়। বর্তমানে অনলাইন গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার বিষয়ে অসতর্কতার ফলে প্রতিনিয়ত মানুষকে নানা প্রতারণা ও হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে।

এক্ষেত্রে নিজের জন্য যেমন অনলাইন গোপনীয়তার প্রয়োজন আছে, তেমনি এটি সন্তানদের জন্যেও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ । যতদিন সে নিজের অনলাইন উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয়ার যোগ্য হয়ে না উঠছে, ততদিন তার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কথা ভেবে অভিভাবককেই সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে।

আমাদের ব্যক্তিগত অনলাইন জীবনের গোপনীয়তা চেক-আপের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। চাইলেই যে কেউ নিজের সন্তানের হয়ে তার অনলাইন তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মতো যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। তাই এ ব্যাপারে অভিভাবকদের আরেকটু বেশি উদ্যোগী ও সচেতন হতে হবে।

আপনার পরিবার ও বন্ধুদেরকে নিজের ইচ্ছা সম্পর্কে জানিয়ে রাখুন
অনলাইনে আমাদের তথ্য ও ছবি প্রকাশকারীরা সব সময় যে বিদ্বেষপূর্ণভাবেই তা করে থাকেন, এমনটা নয়। বরং শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, পরিবারের সদস্য বা পারিবারিক বন্ধুদের দ্বারাই তাদের ছবি অনলাইনে প্রকাশিত হয়। সেক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার সন্তানের তথ্য ও ছবি অনলাইনে গোপন রাখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার উচিৎ হবে, আপনার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদেরকে আপনার ইচ্ছার কথা জানিয়ে রাখা। ফলে বন্ধু ও পরিবারের লোকদের সহযোগিতায় আপনার সন্তানের অনলাইন গোপনীয়তা বজায় রাখা অনেক সহজ হবে।

সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে ট্যাগের অনুমতি বাধ্যতামূলক করুন
আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের প্রাইভেসি সেটিং থেকে ট্যাগ করলে তার অনুমতি গ্রহণ বাধ্যতামূলক করুন। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই আপনার সন্তানের ছবি অনলাইনে প্রকাশিত হলে আপনি তা জানতে পারবেন, কারণ আপনার পরিচিত জনেরা সেখানে আপনাকে স্বভাবতই ট্যাগ করবে। যদি আপনি ছবিটিকে অনলাইনে রাখতে না চান, তাহলে প্রকাশকারীকে সেটা নামিয়ে নিতে অনুরোধ করুন।

গুগল প্রাইভেসি এলার্ট চালু রাখুন
গুগলের এই ফ্রি সার্ভিসটি চালু রাখলে কোনো সংবাদ অনুচ্ছেদে বা সোশ্যাল মিডিয়ার পাবলিক পোস্টে আপনার সন্তানের নাম যুক্ত আছে কিনা তা আপনি খুব সহজে জানতে পারবেন। গুগল ছাড়াও আরও দু’টি প্রতিষ্ঠান একই সুবিধা দিচ্ছে। আপনার সন্তানের অনলাইন উপস্থিতি মানেই তা নেতিবাচক এমনটা নয়। তবে জেনে রাখা ভালো যে, অনলাইনে ঠিক কোথায় কোথায় কোন উপলক্ষে আপনার সন্তানে নাম শেয়ার করা হয়েছে।

অনুমতি ছাড়া আপনার সন্তানের ছবি প্রকাশ করলে তাকে প্রশ্ন করুন
কেউ যদি আপনার অনুমতি ছাড়াই আপনার সন্তানের ছবি প্রকাশ করে, তাহলে কোনো রকম হীনমন্যতা না রেখে সরাসরি তাকে ছবি প্রকাশের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করুন। তাকে আপনার ইচ্ছার কথা জানান এবং বলুন, কেন আপনি এ বিষয়ে সচেতন। প্রয়োজন হলে ছবি সরিয়ে ফেলতে বলুন। হয়ত তারা এই ব্যাপারগুলি নিয়ে কখনোই ভাবেননি এবং আপনার সঙ্গে কথা বলে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।

অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে প্রাইভেসি অন রাখতে বলুন
আপনার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের যদি ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম প্রভৃতি অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে তাহলে তাদেরকে সিকিউরিটি সম্পর্কে সচেতন করে তুলুন এবং নিরাপত্তা সেটিংস ব্যবহার করতে সহায়তা করুন। যাতে করে অনলাইনে শেয়ার করা তাদের তথ্য ও ছবি কোনো প্রতারক চক্রের হাতে না পৌছায়। সূত্র: দ্যা ওয়াশিংটন পোস্ট।

 

 টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভারতের সহায়তা ছাড়া তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন সহজ নয়: পরিকল্পনা উপদেষ্টা Apr 20, 2025
img
নির্বাচনকালীন তিন মাসের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমেদ Apr 20, 2025
img
যাদের নির্বাচন থেকে বাদ দেবেন তারা ঘরে বসে আঙুল চুষবে? : জি এম কাদের Apr 20, 2025
img
স্বস্তির বাতাস বইছে রিজার্ভে Apr 20, 2025
img
'জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার যুবক Apr 20, 2025
img
গাজায় আরও ৩০ হাজার তরুণকে যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ Apr 20, 2025
img
ছোট ছেলে আব্রামের পেছনে মাসে কত খরচ শাহরুখের Apr 20, 2025
img
যারা দেশে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, তারা কখনোই জনগণের বন্ধু হতে পারে না : মির্জা ফখরুল Apr 20, 2025
img
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ২ জন Apr 20, 2025
img
সংস্কার কাজে দেরি না করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Apr 20, 2025