মনে হয় একটা শেষ খেলা হবে, দ্বন্দ্ব এখন অনিবার্য : মঞ্জু

জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, আমরা যারা রাজনীতি করছি, ভয় দেখায় আমাদের, আঙুল ভেঙে দেব, মাথা ভেঙে দেব- কী যে বলে আমি বুঝি না ছেলেরা। তাই না! আমরা কত লোকের মাথা ভাঙছি- ওরা জানেও না। তাই না! তো সেজন্য বলি যে একটা প্রান্তিক পর্যায়ে আমরা চলে এসেছি। এখন মনে হয় একটা শেষ খেলা হবে।

দ্বন্দ্ব এখন অনিবার্য। বাংলায় একটা কথা আছে, ভাত দেবার মুরোদ নেই, কিল দেবার গোঁসাই! মিয়ারা বড় বড় কথা বলো, সবাই না কি আমার স্বৈরাচার হয়ে গেছি! গণতন্ত্র শিখছ কার কাছ থেকে? কথা বুঝতে হবে। 

তিনি বলেন, তারা যে ভাষায় কথা বলে, আমরাও সেই ভাষায় কথা বলতে জানি। কিন্তু ভয় দেখিয়ে দেশ চালায়- এটা কোনো কথা হলো? এই সরকার না, সব সরকার- দেশ স্বাধীন হয়েছে। পাকিস্তান আমলে তারা ভয় দেখাত, তারা মারত, তারা জেলে দিত। এখনো মারে। এখনো জেলে দেয়। এখনো কিল দেয়।

পার্থক্যটা কী হলো? পার্থক্যটা এই হলো আদমজি জায়গায় আরেক আদমজি হয়েছে। তো সেজন্য ভুল হয়ে গেছে আমার মনে হয়, এবার পরিবর্তনের পর। এক সরকারটা চলছে না। চলবে কী করে? গভর্নমেন্ট তো নাই। নন গভর্নমেন্ট হয়েছে গভর্নমেন্ট। আর উপদেশ দিচ্ছে কারা, যারা এদেশে বসবাস করেনি। কবে কোন অমাবস্যার রাতে না পূর্ণিমার রাতে দেশ ছেড়ে চলে যাবে- কেউ জানবেও না। এই যখন বাস্তবতা, চিন্তা করলে পরে ভয় হয়, কারণ দেশটা তো আমাদের। সকলের।

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, এদেশ সৃষ্টিতে আমরা একটা অনন্য অংশীদার ছিলাম। ভেসে আসিনি এদেশে আমরা। কথা বলার সময় মুখ সামলিয়ে বলবেন। বুঝছেন। কথা বলি না বলে বলতে পারি না- সেটা কেন মনে করেন? তাই বলি, বাপ-মা তোমাদের সম্মানবোধ শেখায়নি? মুরব্বিদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়- সেটা তোমাদের শেখায়নি? সেজন্য আমি বলি সংঘাত অনিবার্য, হবেই সংঘাত। এই সংঘাতে যারা পারবেন, তারা টেকবেন। যারা পারবেন না, তারা কেটে পড়েন।

তিনি আরো বলেন, দখলের রাজনীতি হচ্ছে ব্যবসা দখল হচ্ছে, দোকান দখল হচ্ছে, চাঁদাবাজি হচ্ছে। এটা নিয়ম-কানুনের ভেতরে নাই। কিন্তু আমাদের দুঃখ লাগে যে এই দেশের যারা রাজনীতি করেছে, এদেশের মানুষের সঙ্গে যারা সংগ্রাম করেছে, আন্দোলন করেছে- তাদেরকে বাদ দিয়ে এখন দেশ কারা চালাচ্ছে? নন-গভমেন্ট। উপদেষ্টা দেশে কারা? যারা এদেশে বসবাস করতেন না। অনেকভাবে আমাদেরকে অপমান করা হয়েছে, এই জাতিকে অপমান করা হয়েছে, কিন্তু এইবার যেভাবে অপমান করছে- এটা ইতিহাসে লেখা থাকবে। কোথায় আমেরিকায় ছিল, কোথায় লন্ডনে ছিল, কোথায় জাপানে ছিল- তাদেরকে এনে বই লেখাচ্ছে, সংস্কার করতেছে- বাস্তবায়ন করবে কে?

জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান বলেন, একটা কথা আছে, মুসলমান যারা তারা সবাই বেহেশতে যাবে। কিন্তু দোজখ থেকে যাবে তো, তাদের কপালে লেখা থাকবে দোজখবাসী। আমরা সবাই স্বৈরাচার, কেউ আমরা গণতন্ত্রী না- এটা মেনে নেন। আমরা চেষ্টা করব গণতন্ত্র করার জন্য, আপনারা চেষ্টা করছেন বিপ্লব করার জন্য।

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আরো বলেন, আওয়ামী লীগ অত্যাচার করেছে, বিএনপি অত্যাচার করেছে, এখন গ্রামেগঞ্জে হচ্ছে, ঢাকা শহরে হচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্যে হচ্ছে- অবিশ্বাস্য! যদি কেউ শোনে, বিশ্বাস করবে না যে এটা বাংলাদেশে হচ্ছে। ব্যবসা নিয়ে যাচ্ছে, বাণিজ্য নিয়ে যাচ্ছে, অফিস নিয়ে যাচ্ছে, কলকারখানা নিয়ে যাচ্ছে- কী একটা দেশ! এই দেশ যারা আমরা সৃষ্টিতে সহায়তা করেছি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, আমরা গর্বিত। এটাকে ক্ষুণ্ন করার জন্য, এটাকে ব্যর্থ করার জন্য এটাকে মানুষের কাছে ঘৃণিত করার প্রচেষ্টা চলে আসছে আজকে ৫৪ বছর। 

যে সরকারে থাকে, পরে যখন সে থাকে না- সব পাপ সে করেছে। করতে করতে বাংলাদেশের কোনো দলই নাই যে দুর্নীতিবাজ না। তো ছেলেরা কী ভাবে? আমরা যখন রাস্তাঘাট হাঁটি, আমাদের দেখলে বলে, চোর যায়। কী চুরি করলাম? তাই না! এই বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দিনগুলোতে আমরা যারা উদার গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাস করি- তাদেরকে সচেতন হতে হবে।

ইউটি/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভারতে রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক Aug 11, 2025
বাংলাদেশ থেকেও দেখা যাবে উল্কা বৃষ্টি Aug 11, 2025
খাওয়ার জায়গা নাই, তবু ফাইভস্টারে সফর- ফজলুর রহমান Aug 11, 2025
৪৫৬ কোটি বছরের পুরনো উল্কাপিণ্ড আছড়ে পড়ল আমেরিকায় Aug 11, 2025
এমা থম্পসনের জীবনের মজার মোড়, ট্রাম্পের ডেটিং প্রস্তাব! Aug 11, 2025
img
কেজিপ্রতি পেয়াজের দাম বেড়েছে ৩৫ টাকা Aug 11, 2025
ঘুমের আগে যে কাজ ভুলে যাওয়া অনুচিত Aug 11, 2025
img
দেশের প্রথম এআই বন্ধু 'মনতরঙ্গ'- এর আত্নপ্রকাশ Aug 11, 2025
img
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৮০ হাজার সেনাবাহিনীর সদস্য মাঠে থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Aug 11, 2025
img
লিভারপুলের নতুন তারকা ভার্টজ হলেন জার্মানির বর্ষসেরা ফুটবলার Aug 11, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টাকে ডক্টরেট ডিগ্রি দেবে মালয়েশিয়ার কেবাংসান ইউনিভার্সিটি Aug 11, 2025
img
দেশে বর্তমান আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতিতে নির্বাচন করা সম্ভব : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Aug 11, 2025
img
র‍্যাঙ্কিংয়ে আবারও ধাক্কা খেল বাংলাদেশ Aug 11, 2025
img
সুদানে অপুষ্টিতে এক সপ্তাহে প্রাণ গেল ৬৩ জনের Aug 11, 2025
img
ঋতুপর্ণা ভুটানে, ক্যাবরেরা ফিরেই টিম হোটেলে Aug 11, 2025
img
শেখ হাসিনা, জয় ও পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু আজ Aug 11, 2025
img
ফের ৩ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম Aug 11, 2025
img
এশিয়া কাপের আগে দলের সেরা তারকাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভারত Aug 11, 2025
img
রোনালদোর জোড়া গোল, তবুও হারল আল নাসর Aug 11, 2025
img
রোনালদো ও কোহলির ভিডিও দেখে প্রতারণার শিকার অভিনেতা মাধবন Aug 11, 2025