আর্জেন্টিনায় অন্তত ৯৬ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে যাদের ব্যাকটেরিয়া মিশ্রিত ফেন্টানাইল দিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বুয়েনস আইরেস হেরাল্ডের বরাতে এ খবর জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদন মতে, অভিযোগ ওঠার পরই শুরু হয়েছে তদন্ত। দায়ীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর।
সরকারি হিসেবে ব্যাকটেরিয়া মিশ্রিত ফেন্টানাইল দিয়ে চিকিৎসার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা আসলে ৮৭ জন। তবে বিচার বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আরও ৯ জনের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বুয়েনস আইরেস হেরাল্ডের প্রতিবেদন অনুসারে, বিষয়টি প্রথম সামনে আসে গত মে মাসে। হাসপাতালের কয়েক ডজন রোগী গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে আক্রান্ত হন।
রোগীদের মধ্যে ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া এবং রালস্টোনিয়া পিকেটি ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন শনাক্ত হয়। যার মধ্যে কিছু ব্যাকটেরিয়া একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী প্রমাণিত হয়।
এরপর বিষয়টি তদন্ত শুরু হয়। তদন্তকারীরা জানান, সংক্রমণের উৎস ফেন্টানাইল। ওষুধটি এইচএলবি ফার্মা এবং তাদের ল্যাবরেটরি ল্যাবরেটরিও রামালোতে উৎপাদিত।
এরপর আর্জেন্টিনার খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আনমাত জানায়, কোম্পানির তৈরি করা দুটি ফেন্টানাইল ব্যাচের অ্যাম্পুলে ব্যাকটেরিয়া দূষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং সেই একই ব্যাকটেরিয়া মৃতদের শরীরেও পাওয়া গেছে।
এরপর আর্জেন্টি সরকার দেশের সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে ওই কোম্পানির তৈরি ফেন্টানাইল ব্যবহার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে কোম্পানিগুলিকেও সমস্ত উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে এইচএলবি ফার্মার মালিক এরিয়েল গার্সিয়া ফুরফারো তার কোম্পানির ফেন্টানাইল নিয়ে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, অন্য কেউ তাদের তৈরি ওষুধে ব্যাকটেরিয়া মিশিয়ে দিয়েছে। তবে এরপরই বাজার থেকে ওই ওষুধ নিজেরাই সরিয়ে নিয়েছে এইচএলবি।
এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট রোগীদের প্রথমে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এসব রোগীকে ব্যথা উপশম বা চেতনানাশক ওষুধ দেয়া হয়েছিল। ওই ওষুধ সেবনের পর তারা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে আক্রান্ত হন।
কর্মকর্তারা বলছেন, অন্তত ৩ লক্ষ অ্যাম্পুলে ব্যাকটেরিয়ার মিশ্রণ আছে। বাজার থেকে ওই ওষুধ সরিয়ে নেওয়ার আগে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষকে তা দেয়া হয়েছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
এমকে/টিকে