অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় বলছেন, ‘বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের বক্তব্যে সবাই সন্তুষ্ট।’ এক ফেসবুক পোস্টে এই অভিমত প্রকাশ করেছেন আলোচিত এই অভিনেতা। একই সঙ্গে তিনি এটাও বলছেন আগামীতে ক্ষমতায় মানুষ বিএনপিকে দেখতে চায়। এই অভিমত বিদেশের মাটিতে বসে বিশ্লেষণ করেছেন তিনি, এমনটাই ওই পোস্টে জানিয়েছেন।
শুরুতেই জয় লিখেছেন, ‘বিদেশের মাটিতে নিরপেক্ষ বিশ্লেষণে দেখলাম ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারকে ভদ্রলোকরা দুর্দান্ত পছন্দ করছেন। বিএনপিকে আগামীতে ক্ষমতায় দেখতে চাচ্ছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগকে বাদ রেখে ইলেকশন চাচ্ছেন না। তাদের বক্তব্য, আওয়ামী লীগের যতই দোষ থাকুক একটা বিশাল শ্রেণির জনগণ আওয়ামী লীগের সাপোর্টার, তাদের বাদ রেখে ইলেকশন করলে সেই ইলেকশনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আসবে এবং ভবিষ্যতে বিভক্তি আরো বেশি তৈরি হবে।
এনসিপি ও জামায়াতকে এবং অন্যান্য দলসহ অন্তত ১০০ আসনে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে দেখতে চাচ্ছেন।’
প্রবাসীদের নিয়ে বলতে গিয়ে শাহরিয়ার নাজিম জয় বলেন, ‘পাশাপাশি প্রবাসীরা দেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের ভাষায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব ইউনূস সরকারের হলেও একটি উল্লেখযোগ্য জনগণ ইউনূস সরকারকে সাপোর্ট করছে না যে কারণে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এ ক্ষেত্রে তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আরো সময় দিতে চাচ্ছেন।
সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তারা কিছুটা কনফিউজড এবং এনসিপির প্রতি মানুষের অনেক বেশি মমতা কারণ এত বড় একটি ঘটনা ফ্রন্টলাইনে থেকে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের দল এনসিপি। তাদের সঠিক মূল্যায়ন হোক, এটা অনেকেই চাচ্ছেন। আবার অনেকেই এর ঘোর বিরোধী। তাদের কার্যকলাপ এবং কথা বলার ধরনের কারণে অনেকে বিরক্ত। শুধু আওয়ামী লীগবিরোধী ক্যাম্পেইন করে সংসদ সদস্য হওয়া কঠিন এ কথা অনেকে বলছেন।
জামায়াতের ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে জানিয়ে এই অভিনেতা বলেন, ‘জামায়াতের ভূমিকাকে অনেকেই প্রশংসা করছেন। তাদের কথা এবং কার্যকলাপ প্রশংসিত হচ্ছে—শুধু স্বাধীনতাযুদ্ধের বিষয়ে তাদের ব্যাপারে একটা বিশাল কনফিউশন রয়ে গেছে সেটার ফলাফল কী হয় সেটা বোঝা যাচ্ছে না।’
বিএনপি সম্পর্কে বিশ্লেষণ করে জয় লিখেছেন, ‘বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের বক্তব্যে সবাই সন্তুষ্ট। কিন্তু বিএনপির কর্মীদের কার্যকলাপে অনেকে অতিষ্ঠ। এখানে একটি বড় গ্যাপ রয়ে গেছে। যেখানে তারেক রহমান সাহেব বলছেন, প্রতিশোধ নয়, প্রতিরোধ নয়, সেখানে তাদের কর্মীরা প্রতিশোধ এবং প্রতিরোধের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছেন—এটা হাইকমান্ডের নীতির বহির্ভূত। এই অতি উৎসাহিত কর্মীদের থামানোর কোনো রাস্তা কারো জানা নেই। ইলেকশনের পূর্বেই যদি হাইকমান্ডকে তারা ইগনোর করে ইলেকশনে জিতলে তাদের ভূমিকা কী হবে, সেটা অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ।’
অভিনেতা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, ‘এই লেখাটা সামগ্রিকভাবে আমার বিশ্লেষণ। আমি একটা বোকা লোক এবং মূর্খ লোক, আমার বিশ্লেষণকে সিরিয়াসলি নেওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমার গণতান্ত্রিক অধিকার আমি এই লেখার মাধ্যমে প্রয়োগ করলাম। কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে আমি ক্ষমা চাই। তবে আমার লেখা থেকে হয়তো যারা বুদ্ধিমান তারা ভালো অংশটুকু গ্রহণ করে এটাকে কাজে লাগিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে।’