স্মার্টফোন ভালো রাখার উপায়

পছন্দের নতুন স্মার্টফোনটি হাতে নিয়ে দেখা সবার কাছেই স্বপ্নের মতন। দাগমুক্ত, চকচকে ডিভাইসটিতে ‘নতুন ফোনের’ গন্ধ থাকে; কিন্তু সময়ের সঙ্গে ফোনটির আকর্ষণ ম্লান হতে শুরু করে এবং এর গতি মন্থর হয়ে যায়।

আকর্ষণ ম্লান হওয়ার জন্য আপনি ফোনটির পুরনো সার্কিটগুলোকে দোষারোপ করতে পারেন, কিন্তু আসল সমস্যা তার থেকেও খুব সাধারণ। অ্যাপস, সিকিউরিটি ইস্যু ও ব্যাটারির যথেচ্ছাচার ব্যবহারের ফলে ফোনটিতে গুরুতর প্রভাব পড়ে। অথচ খুব অল্প রক্ষণাবেক্ষণ করলেই ফোনটি আরও বহুদিন ব্যবহারযোগ্য থাকবে।

অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আনইন্সটল করা
আপনার ফোনে হয়ত গাদা গাদা অ্যাপস ইন্সটল আছে, যার মধ্যে কয়েকটাই শুধু আপনার কাজে লাগে। শুধু শুধু এতগুলো অ্যাপ ইন্সটল করে রাখার কোনো যুক্তি নেই। অ্যাপগুলির মধ্যে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দাতা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রোগ্রাম করা থাকে, ফলে এই অ্যাপগুলির দ্বারা বিজ্ঞাপন দাতা প্রতিষ্ঠানগুলি আপনার গতিবিধির উপর নজরদারি চালাতে পারে।

অ্যাপ ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
অনেকেই মনে করেন ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকা অ্যাপস এন্ড্রয়েডের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকা অ্যাপগুলি এন্ড্রয়েডের জন্যে মোটেও হুমকি নয়। বরং বারবার কোনো অ্যাপ খুলতে ও বন্ধ করতে থাকলে তাতে ফোনের পারফর্মেন্স ও ব্যাটারিতে প্রভাব পড়তে পারে। তাই যেসব অ্যাপ প্রায়শই ব্যবহার করতে হয়, সেগুলি বন্ধ রাখার দরকার নেই।

অন্যদিকে আইফোনের অ্যাপগুলি সেই অর্থে কখনোই ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে না। চালু রাখলেও অ্যাপটির ডাটা মেমোরিতে রেখে আইফোন নিজে থেকে অ্যাপটিকে বন্ধ করে দেয়। বারবার অ্যাপ বন্ধ ও চালু করলে আইফোনের ব্যাটারিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুতরাং আইফোনে আলাদা করে ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে অ্যাপ বন্ধ করার দরকার নেই।

অপ্রয়োজনে ব্যাটারি ব্যবহার বন্ধ করুন
আপনার ফোনের সেটিংসের মাধ্যমেই ব্যাটারির আয়ু অনেকটা বাড়াতে পারেন। আইফোন বা এনড্রয়েড, অপারেটিং সিস্টেম যাইহোক, প্রয়োজন ছাড়া ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, জিপিএস প্রভৃতি চালু করে রাখবেন না। ব্যাটারি বাঁচাতে ফোনের ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখতে পারেন।

নিয়মিত আপডেট করুন
ফোনের নতুন আপডেট পাওয়া মাত্রই তা ইন্সটল করুন। নির্মাতারা নিয়মিত ফোনের পারফর্ম্যান্স ও নিরাপত্তা সমস্যাগুলো সমাধান করে আপডেট দিয়ে থাকেন। তাছাড়া যেসব অ্যাপ আপনি ব্যবহার করছেন, সেগুলোর আপডেট দিয়ে রাখাও জরুরি। নিয়মিত আপডেট করা হলে ফোনের পারফর্ম্যান্স ঠিক থাকে আর ব্যাটারির আয়ুও বৃদ্ধি পায়।

চার্জ করা নিয়ে সতর্ক থাকুন
আইফোন কিংবা এন্ড্রয়েডে সব সময় চার্জ ৪০% থেকে ৮০% এর মধ্যে রাখুন। মাঝে মাঝে ফোনটি রিস্টার্ট করে ব্যাটারির আসল কন্ডিশন যাচাই করুন। কখনোই ব্যাটারি খুব বেশি উত্তপ্ত হতে দেবেন না।

যদি আপনার ফোনের চার্জারটি নষ্ট হয়ে যায় অবশ্যই ব্রান্ডের চার্জার কিনুন, সম্ভব হলে ফোনটি যে কোম্পানির সেই কোম্পানির চার্জার ব্যবহার করুন। সাধারণ চার্জার কিনলে হয়ত আপনার কয়েক টাকা বেঁচে যাবে, কিন্তু সেটা আপনার ফোনের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

নিরাপত্তা বিষয়ে সতর্ক থাকুন
আপনার ব্যবহৃত স্মার্টফোনটি ম্যালওয়ার বা ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। নিরাপত্তার দিক থেকে আইফোন এন্ড্রয়েডের থেকে এগিয়ে আছে। যেহেতু অ্যাপল তাদের সোর্সকোড ডেভলপারদের কাছে উন্মুক্ত করে না, তাই তাদের অপারেটিং সিস্টেম হ্যাক করা কঠিন।

অন্যদিকে এন্ড্রয়েড যেহেতু ওপেনসোর্স কোড ব্যবহার করে, তাই ডেভলপারদের কাছে সহজেই সেই কোড পৌঁছে যায়। আপনি যদি এন্ড্রয়েড ব্যবহারকারী হোন আর আপনার ফোনে যদি পপ-আপ বিজ্ঞাপনে ভরে যায়, খুব দ্রুত চার্জ ফুরিয়ে যায়, অযাচিত অ্যাপ যদি হোম স্ক্রিনে চলে আসতে থাকে তাহলে বুঝবেন আপনার ফোনটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত।

কোনো ক্ষতিকর ভাইরাস আপনার ফোনটিকে আক্রমণ করলে ফোনটি সেভমুডে রাখতে পারেন। এই পর্যায়ে থার্ড পার্টি অ্যাপগুলি কাজ করে না, ফলে ভাইরাস আপনার ফোনের ক্ষতি করতে পারবে না।

অ্যাপ পরিষ্কার রাখুন
যে অপারেটিং সিস্টেমই আপনি ব্যবহার করেন না কেন ব্রাউজার থেকে নিয়মিত কেচ (Cache) পরিষ্কার করে রাখুন। এছাড়াও থার্ড পার্টি অ্যাপগুলোর কেচ নিয়মিত পরিষ্কার করুন।

ডাটা ব্রিচেস, র‌্যামসামওয়্যার ও পিশিং আক্রমণ থেকে বাঁচতে ব্রাউজার এবং অ্যাপগুলির কেচ নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি। তথ্যসূত্র: ফোক্স নিউজ

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: