যে শিক্ষা আমাদের গোলাম করে রাখে তা দিয়ে কী করব : ফরহাদ মজহার

যে শিক্ষা আমাদের গোলাম করে রাখে তা দিয়ে আমরা কী করব- এমন প্রশ্ন করেছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির হৃৎপিণ্ড, ডাকসু নির্বাচন আসছে। বাংলাদেশকে নতুন করে গড়া মানে শিক্ষাকে শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠনের প্রধান হাতিয়ার হিসাবে তৈরি ও হাজির করতে পারা।

ডাকসু নির্বাচন তাই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতা কী, গণঅভ্যুত্থান কী, রাষ্ট্র কী ইত্যাদি শেখে না, উল্টো কিভাবে গোলাম হয়ে বেঁচে থাকতে হয় সেটা ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থা থেকে শেখে। নিজেদের স্বাধীন সত্ত্বার বিপরীতে কিভাবে ফ্যাসিস্ট বা জালিম রাষ্ট্র ব্যবস্থার গোলাম থাকতে হয় সেটাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শেখে। এই অবস্থার বদল দরকার।

অবাক লাগে উনসত্তর কিংবা নব্বইয়ের গণ অভ্যুত্থান নিয়ে কোনো পর্যালোচনামূলক গবেষণা বা একাডেমিক আলোচনা আমরা দেখি না। আমাদের কি কোনো ইতিহাস বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ইত্যাদি নাই? গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কী বা কেন এবং কিভাবে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণের রাষ্ট্র কায়েম করতে হয় সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কিছু শেখাতে পারে না। যে শিক্ষা আমাদের গোলাম করে রাখে তা দিয়ে আমরা কী করব?’

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘একটু ভাবতে বলি- হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি, বরং পাকিস্তানি সেনার পক্ষে ছিলেন।

অথচ স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি সেনাপ্রধান এবং পরে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস এ ধরনের প্রকট বৈপরীত্যে এবং বিপরীত ইতিহাসের দোষে দুষ্ট। একে কেবল জনগণের রাজনৈতিক চেতনার অভাব বলা যায় না- বরং বাংলাদেশকে বুঝতে হলে পুরনো কলোনিয়াল রাষ্ট্রযন্ত্রের ধারাবাহিকতা, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতা, আমলাতন্ত্র, সামরিক শক্তির প্রভাব, পরাশক্তির আধিপত্য ইত্যাদি নানান দিক থেকে পর্যালোচনা করতে হবে।

সর্বোপরি বুঝতে হবে কেন বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কিছুই শেখাতে পারে না। দরকার বিশ্ববিদ্যালয় পুনর্গঠন।ডাকসুর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা নতুন বাংলাদেশ গঠনের রাজনীতি শক্তিশালী করতে পারে কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।’

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
গাড়িতে আক্রমণের ঘটনায় নাইমের ফেসবুকে পোস্ট Oct 16, 2025
img
হাসপাতালে পৌঁছেছেন বেগম খালেদা জিয়া Oct 16, 2025
img
শ্রীলঙ্কার ভিসা পেতে এখন অনুমতি লাগবে বাংলাদেশিদের Oct 16, 2025
img

চাকসু নির্বাচন ২০২৫

মুখোমুখি ছাত্রদল ও শিবির : পুলিশ সুপারের মাথায় আঘাত, বিজিবি মোতায়েন Oct 16, 2025
img
এআই প্রযুক্তির ফাঁদে অক্ষয় ও হৃতিক, মামলা পৌঁছেছে আদালতে Oct 16, 2025
img

চাকসু নির্বাচন ২০২৫

সূর্য সেন হলে ভিপি ও এজিএস পদে এগিয়ে ছাত্রদল, জিএস পদে শিবির Oct 15, 2025
img
যুক্তরাজ্যের মূল্যায়নে নিরাপত্তার দিক দিয়ে দেশসেরা সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর Oct 15, 2025
রিপন মিয়াকে নিয়ে চমকের ফেসবুক পোস্ট নেট দুনিয়ায় তোলপাড় Oct 15, 2025
নভেম্বরে গণভোট চাইলো জামায়াত Oct 15, 2025
আশা করছি ১৭ অক্টোবর সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে সাক্ষর করবে’ Oct 15, 2025
মাশরাফি সরলেন রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে মন্তব্য ক্রীড়া উপদেষ্টার! Oct 15, 2025
সাংবাদিককে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য চবি ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থীর! Oct 15, 2025
মিরপুরের কেমিক্যাল ভবনে আগুন, আরও ৭২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে Oct 15, 2025
নির্বাচনের আগে কতটা চাপে ছাত্রশিবির প্যানেল? Oct 15, 2025
img
কেবিসির হট সিটে অমিতাভের মুখোমুখি দিলজিৎ, পুরস্কারমূল্য যাবে বন্যার্তদের সেবায় Oct 15, 2025
img
‘ধুম ৪’ থেকে আচমকা বাদ পড়ল কিয়ারা Oct 15, 2025
img

জুলাই আন্দোলন

শেখ হাসিনার ফোনালাপ গোপনে রেকর্ড করে এনটিএমসি Oct 15, 2025
img
৩ দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক Oct 15, 2025
img
তামিলনাড়ুতে শুধুই তামিল, হিন্দি নিষিদ্ধের পথে সরকার Oct 15, 2025
img
খালেদা জিয়া বলেছিলেন, একদিন হাসিনাকেও মানুষ উচ্ছেদ করবে: ফখরুল Oct 15, 2025