২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের কারচুপির অনুসন্ধান, জড়িত ফ্যাসিবাদের দোসর শিক্ষকদের শাস্তি ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের ডাকসুর সদস্য পদ বাতিলের দাবির প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির মিটিংয়ে উপস্থিত থাকবেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের জিএস প্রার্থী মো. রাশেদ খান।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাবি উপাচার্যের কার্যালয়ের পাশে কোষাধ্যক্ষের অফিসে এ মিটিং অনুষ্ঠিত হবে।
ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাবি শাখার সভাপতি মুহাম্মদ সানাউল্লাহ এক বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে কারচুপির প্রেক্ষিতে অবৈধ জিএস গোলাম রাব্বানীর ডাকসু পদ বাতিল ও ডাকসু হামলায় জড়িতদের শাস্তি দাবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী স্যারের রুমে তদন্ত কমিটির মিটিংয়ে অভিযোগকারী হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের জিএস প্রার্থী মো. রাশেদ খান।
এই মিটিং আজ (২১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের কারচুপির অনুসন্ধান, জড়িত ফ্যাসিবাদের দোসর শিক্ষকদের শাস্তি ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের ডাকসুর সদস্য পদ বাতিলের দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন গণঅধিকার পরিষদের পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৯ সালে ডাকসুর জিএস প্রার্থী মো. রাশেদ খান।
চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ওই স্মারকলিপি দেন তিনি।
লিখিত অভিযোগপত্রে রাশেদ খান বলেন, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে আমি জিএস প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করি। উক্ত নির্বাচনে আমার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৬০৬৩টি দেখানো হয়। সেই নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য মো. আক্তারুজ্জামানের ভোট কারচুপির সহযোগিতায় জিএস হিসেবে নির্বাচিত দেখানো হয় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে।
তিনি বলেন, ডাকসুর ইতিহাসে রাত সাড়ে ৩টায় ফলাফল ঘোষণা করে তৎকালীন উপাচার্য মো. আক্তারুজ্জামান ছাত্রসমাজের সঙ্গে প্রহসন ও মশকরায় লিপ্ত হন। জাতীয় নির্বাচনের চেয়েও জঘন্য কারচুপিতে লিপ্ত হন শিক্ষক নামধারী এই ফ্যাসিবাদের দোসর উপাচার্য ও তার সহযোগী শিক্ষকরা। এমনকি জিএস প্রার্থী গোলাম রাব্বানী ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে কোনো নিয়ম না মেনেই উপাচার্য মো. আক্তারুজ্জামানের সহযোগিতায় এমফিলে ভর্তি হন। সেসময় জাতীয় দৈনিকে এ সংক্রান্ত অসংখ্য সংবাদও প্রকাশিত হয়, (ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে নিয়ম না মেনেই এমফিলে ভর্তি হন রাব্বানী!
গোলাম রাব্বানীর ছাত্রত্ব ও ডাকসু পদ বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু গোলাম রাব্বানীর ছাত্রত্বই ছিল না ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপারে অবৈধভাবে সিল মারা, কৃত্রিম লাইন সৃষ্টি করা, ভোটদানে ভয়ভীতি প্রদর্শন করাসহ নানা কারচুপির সঙ্গে যুক্ত হয়, এছাড়া সে নিষিদ্ধ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অসংখ্য শিক্ষার্থীকেও নির্যাতন করেছে, ক্যাম্পাসে অসংখ্য হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে। এক্ষেত্রে আমি তার ছাত্রত্ব ও ডাকসু পদ বাতিল দাবি করছি।
১৯ সালের ডাকসুর কারচুপির অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করে ছাত্রলীগের সব ডাকসুর সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানিয়ে রাশেদ বলেন, সে সময়েই সংক্ষুব্ধ প্রার্থী হিসেবে ডাকসু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। কারণ, ওই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো ডাকসু নির্বাচনে উপাচার্য মো. আক্তারুজ্জামানকে ভোট কারচুপিতে সহযোগিতাকারী ফ্যাসিবাদের দোসর শিক্ষকদের সমন্বয়ে। যেহেতু ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। আপনার কাছে আমার আকুল আবেদন, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনের কারচুপির অনুসন্ধানে নতুন তদন্ত কমিটি গঠন, জড়িত শিক্ষকদের শাস্তি ও বহিষ্কার, অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সব সদস্যদের ডাকসুর সদস্য পদ বাতিলপূর্বক ভুক্তভোগী প্রার্থীদের মূল্যায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাবি শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মুনতাসির, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্বাস উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএন/এসএন