গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে, স্বীকার করল জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা শহর ও এর আশপাশের এলাকায় পুরোদমে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করলো জাতিসংঘ। সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজার দুর্ভিক্ষ একটি 'মানব-সৃষ্ট বিপর্যয়, নৈতিক ধিক্কার এবং মানবতারই এক ব্যর্থতা'।

গুতেরেস বলেন, দুর্ভিক্ষ শুধু খাবার নিয়ে নয়, এটি মানব অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলোর ইচ্ছাকৃত পতন। মানুষ অনাহারে আছে। শিশুরা মারা যাচ্ছে। আর যাদের কাজ করার দায়িত্ব, তারা ব্যর্থ হচ্ছেন।

জাতিসংঘ প্রধান বলেন, দখলদার শক্তি হিসেবে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের 'অবিসংবাদিত বাধ্যবাধকতা' রয়েছে, যার মধ্যে গাজার জনগণের জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার দায়িত্বও অন্তর্ভুক্ত।

এ ছাড়া, জাতিসংঘের ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজার দুর্ভিক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা গেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ৫ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি, যার মধ্যে রয়েছে অনাহার, চরম দারিদ্র্য ও মৃত্যু।

ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জোর দিয়ে বলেছেন, কয়েক মাস ধরে দেওয়া সতর্কতা বধির কানে গেছে, কিন্তু এখন যেহেতু গাজা সিটি ও এর আশেপাশের এলাকায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হয়েছে, তাই এটি শেষ করার জন্য 'রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখানোর সময় এসেছে'।

তিনি বলেন, আমরা এই পরিস্থিতিকে দায়মুক্তির সঙ্গে চলতে দিতে পারি না। আর কোনো অজুহাত নয়। কাজ করার সময় আগামীকাল নয়—এখনই।

জাতিসংঘের ত্রাণ প্রধান টম ফ্লেচার বলেন, দুর্ভিক্ষকে কিছু ইসরায়েলি নেতা প্রকাশ্যে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে প্রচার করেছেন এবং তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে 'প্রতিশোধ বন্ধ করতে' এবং অবাধ প্রবেশের জন্য গাজার ক্রসিংগুলো খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় পুরো গাজা উপত্যকায় ৭১ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন ২৫১ জন। এর মধ্যে গাজা সিটিতেই ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, দুই ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন।

এফপি/ টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভারত সফরের আগে বিপাকে অজিরা Oct 14, 2025
img
শিক্ষকদের দুপুরে 'মার্চ টু সচিবালয়' কর্মসূচি Oct 14, 2025
img
ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়তে চান আনচেলত্তি Oct 14, 2025
img
আমি মনে হয় স্বর্গে যেতে পারব না: ট্রাম্প Oct 14, 2025
img
দেশ কোথায় যাচ্ছে : ব্যারিস্টার শামীম হায়দার Oct 14, 2025
img
প্রতিটি জেলায় আলাদা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গঠনের নির্দেশ Oct 14, 2025
img
লড়াই করে হারল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সিরিজ জিতে যত কীর্তি ভারতের Oct 14, 2025
img
তৃতীয় বিয়ে নিয়ে সমালোচনার পরে মুখ খুললেন তনির স্বামী Oct 14, 2025
img
বিএনপির এই রাজনীতিটা অত্যন্ত ইতিবাচক : জিল্লুর রহমান Oct 14, 2025
img
দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে অধিকাংশ শেয়ারে দরবৃদ্ধি Oct 14, 2025
img

সামরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা

কুয়েতের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বাংলাদেশি দূতের সাক্ষাৎ Oct 14, 2025
img
সেনাবাহিনীকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে, অতীতে কখনো হয়নি : রুমিন ফারহানা Oct 14, 2025
img
এখন গাজাকে পুনর্গঠন করার সময় : ট্রাম্প Oct 14, 2025
img
জামায়াত আমির-ডেনিশ রাষ্ট্রদূত সৌজন্য সাক্ষাৎ Oct 14, 2025
img
দেশে অস্থিরতার চক্র ভাঙার একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন : জাহেদ উর রহমান Oct 14, 2025
img
সংগীত কিংবদন্তিদের গল্প নিয়ে বড় পর্দায় ফিরছেন স্ট্রেঞ্জার থিংস তারকা ফিন উলফহার্ড! Oct 14, 2025
img
ইসি নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই জনগণের, ব্যাপক প্রচারণার উদ্যোগ Oct 14, 2025
img
অবরোধ প্রত্যাহার ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের, যানচলাচল স্বাভাবিক Oct 14, 2025
img
স্বর্ণ ৫ হাজার ও রুপা ৬৫ ডলারে পৌঁছাতে পারে ২০২৬ এর মধ্যেই! Oct 14, 2025
img
সাকিবের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পরও শিরোপা হাতছাড়া Oct 14, 2025