পুতিনকে ভয় দেখিয়ে নয়, আলোচনাই সংকট নিরসনের পথ

আলাস্কায় মার্কিন ও রুশ প্রেসিডেন্টের বৈঠকের পর ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আশা জাগলেও বাধ সাধছে ট্রাম্পের হুমকি-ধমকি। বিশ্লেষকরা বলছেন, পুতিনকে হুমকি-ধমকি দিয়ে নয় বরং সমঝোতার মাধ্যমে সংকট নিরসন সম্ভব।

সাড়ে তিন বছর ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্রদের পক্ষ থেকে নানা নিষেধাজ্ঞা ও হুমকি-ধমকি দেয়া হয় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে।

রাশিয়ার জ্বালানি থেকে শুরু করে প্রযুক্তি, আর্থিক খাতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞার খড়গ দেয় পশ্চিমারা। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসির পক্ষ থেকে জারি করা হয় পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা। কোন কিছুতেই যুদ্ধ বন্ধে রাজি করানো সম্ভব হয়নি রুশ প্রেসিডেন্টকে। এমনকি, বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে এক টেবিলে বসানোও যায়নি পুতিনকে।

সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে, রাশিয়ার ওপর শুল্কারোপ ও নিষেধাজ্ঞার হুমকি-ধমকিতে বন্ধুত্বে কিছুটা ফাটল ধরা দিয়েছে এমন খবর চাউর হয়। অবশেষে ১৭ আগস্ট ২০১৯ সালের পর দ্বিতীয়বোরের মত মুখোমুখি বৈঠকে বসেন ট্রাম্প-পুতিন।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ঐতিহাসিক আলোচনা হয় এই দুই নেতার। এর আগে, একাধিকবার ফেনালাপ হয় দুই বিশ্ব নেতার। এ বিষয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, হুমকি নয় আলোচনার টেবিলে ছাড় দিয়ে সমঝোতার মাধ্যমেই রুশ প্রেসিডেন্টকে রাজি করানো সম্ভব। আর সেটিই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কঠোরের পরিবর্তে নমনীয় কৌশল অবলম্বন করেন।

এর আগে ২০২২ সালে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণসাগরে করা শস্য চুক্তিতে রাশিয়া রাজি হয়েছিল, বিনিময়ে কিছু অর্থনৈতিক ছাড় দিতে হয়। একইভাবে ২০১৫ সালে ইরানের পারমাণবিক চুক্তিতেও কৌশলগত লাভের কারণে পশ্চিমাদের সঙ্গে এক টেবিলে বসতে দ্বিধা করেনি মস্কো।

তুরস্ক–রাশিয়ার সম্পর্ক আগে খারাপ হলেও, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সমঝোতার মাধ্যমে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয় মস্কো-আঙ্কারার। এখানে হুমকি নয় বরং কাজ করেছিলো পারস্পরিক স্বার্থ।

বিশ্লেষকদের মতে, ব্যক্তিগত সম্পর্ক, সম্মানের জায়গা এবং রুশ জনগণের কাছে সুবিধা দেখাতে পারলেই পুতিন সমঝোতায় আসতে রাজি হন। আন্তর্জাতিক কূটনীতির ভাষায়, হুমকি নয় বরং গিভ অ্যান্ড টেক কৌশল মেনে চলেন ভ্লাদিমির পুতিন।

এফপি/ টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মেক্সিকোতে টানা বৃষ্টিতে বন্যা, প্রাণ হারাল ২ Aug 24, 2025
img
প্রধান বিচারপতির হাতে পিএসসির নতুন তিন সদস্যের শপথ গ্রহণ Aug 24, 2025
img
অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধানে একমত বাংলাদেশ-পাকিস্তান Aug 24, 2025
img
বাড়তে পারে ৯ নদীর পানি, ডুবতে পারে ৬ জেলার নিম্নাঞ্চল Aug 24, 2025
img
ইসিতে এনসিপি নেতার সঙ্গে রুমিন ফারহানা গ্রুপের হট্টগোল Aug 24, 2025
img
গণতন্ত্রকে আর রক্তাক্ত না করি : নাজমুল হক প্রধান Aug 24, 2025
img
সাঈদীর বিরুদ্ধে হাসিনা মিথ্যা সাক্ষী বানিয়েছিল : রিজভী Aug 24, 2025
img
উপদেষ্টা আসিফের সঙ্গে নারীর ভাইরাল ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি Aug 24, 2025
img
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিঃসন্দেহে একটি নিরপেক্ষ সরকার : রিজভী Aug 24, 2025
img
৩ সেঞ্চুরি ও ২ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৪৩১ Aug 24, 2025
img
নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে চালু হওয়ার তিন মাসে ৩ রোহিঙ্গা আটক Aug 24, 2025
ভাইরাল অডিওর অভিযোগ পেরিয়ে এনসিপিতে ফিরলেন সারোয়ার তুষার Aug 24, 2025
img
বিএনপির নেতৃত্বে দেশ পরিচালনার পরিকল্পনা করছেন তারেক রহমান : এ্যানি Aug 24, 2025
img
রাজনীতি করতে গেলে ত্যাগ স্বীকার করতে হয় : এ্যানি Aug 24, 2025
দেশের পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন জি এম কাদের Aug 24, 2025
পরিবারসহ দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের সুযোগ দিচ্ছে ওমান Aug 24, 2025
শেখ হাসিনা ভারতের লোক: সালাহউদ্দিন আহমদ Aug 24, 2025
img
মাদকমুক্ত নেতৃত্ব নিশ্চিতে ডাকসু প্রার্থীদের ডোপ টেস্টের দাবি Aug 24, 2025
রাশমিকা ও আয়ুষ্মানের নতুন কেমিস্ট্রি ভূতুড়ে প্রেমকাহিনী ‘থাম Aug 24, 2025
"৩০ বছরের প্রেমে ফাটল! কী ঘটছে গোবিন্দার জীবনে?" Aug 24, 2025