অনেক সাংস্কৃতিক কর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে পতিত স্বৈরাচারের জন্য মায়াকান্না করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিল্পীদের উদ্দেশে সেলিমা রহমান বলেন, আপনারা তো মানুষকে বিশ্বাস করেন না। আপনারা কীসের শিল্পী? আপনারা সম্পদ গড়ার জন্য সেদিন কাজ করেছেন। বিভিন্ন রকমভাবে অকল্পনীয় সবকিছু তুলে ধরেছেন। কিন্তু সমাজের যে সত্য কথা, সমাজের যে সুন্দর প্রতিচ্ছবি, সমাজের যে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা, কোনোটাই আপনারা রাখেননি।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, জনতা, নারী-পুরুষ, শিশু সবাই রাস্তায় নেমেছিল। সেদিন শিশুদের হত্যা করা হয়েছে, ছাত্র ভাইদের হত্যা করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে। এর দায় পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারকেই নিতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের ফলে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণায়। তিনি মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে উপহার দিয়েছিলেন। এ দেশকে বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তিনি ওই স্বৈরাচার সরকারের কবলে পড়ে মিথ্যা মামলায় গত ১৮ বছর মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। কিন্তু তিনি কখনো আপস করেননি। তার একটাই কথা, এ দেশের জনগণ আমার সন্তান। আমি মরলে এ দেশেই মরব, সন্তানের অধিকার রক্ষার জন্যই সংগ্রাম করব।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিলেন, ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’। আজও তিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন। তিনি আপস করলে অনেক আগেই সরকারে বসতে পারতেন, কিন্তু তা করেননি। ফলে তিনি আজ মিথ্যা মামলায় জর্জরিত ও নানা অসুখে আক্রান্ত।
সেলিমা রহমান বলেন, আজ আমাদের সামনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আছেন। তিনি এই দুঃশাসনের কবলে পড়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে বিদেশে অবস্থান করছেন। চিকিৎসা শেষে তিনি বাংলাদেশের জনগণকে একত্রিত করে এই আন্দোলনে সফল নেতৃত্ব দিয়েছেন। আন্দোলন সফল হয়েছে, স্বৈর সরকার পালিয়ে গেছে। পতিত সরকার দানবীয় শাসন চালিয়ে যেতে পারেনি, পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
শিল্পীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা এখনো সজাগ হোন। আপনারা শিল্পী মানুষ, শিল্পচর্চা করেন। কিন্তু আপনাদের শিল্পচর্চার মাধ্যমে এ দেশের মানুষের সাধারণ জীবন, তাদের চিত্র, তাদের কথা বলার অধিকার তুলে ধরতে হবে।
তিনি প্রতিবাদী শিল্পী সমাজকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন। সেই সোচ্চার হবেন জনগণের জন্য, জনগণের অধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য।
মানববন্ধনের শেষদিকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাসাসের যুগ্ম আহ্বায়ক ও গীতিকার ইথুন বাবু। তিনি বলেন, আগামী ২১ দিনের মধ্যে শিল্পকলা-সচিবালয় থেকে সব ফ্যাসিস্টদের মুক্ত করা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলন কর্মসূচিতে যাবো।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক কর্মী শিবা শানুসহ অভিনয়শিল্পী, নাট্যশিল্পী ও চলচ্চিত্রশিল্পীরা।