ড. ইউনূস ঘটকের মতো, ভালো সংসার করলেও কোনো ক্রেডিট হয় না : জাহেদ উর রহমান

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘আমি এভাবেই বলছিলাম যে ওনার (ড. ইউনূস) দায়িত্ব হয়ে গেছে ঘটকের মতো। যখন ঘটকের ঘটকালি করা বিয়েতে পাত্র-পাত্রী ভালো সংসার জীবনযাপন করে, কোনো ক্রেডিট ঘটকের হয় না। কিন্তু যদি সমস্যা হয় সবাই ঘটক বেটাকে খুঁজে বের করে। দেশ খুব ভালো চললেও এভাবে বলত, ডক্টর ইউনূস তো দেশ ভালো চালাবেনই।

ভালো নির্বাচন তো দেবেনই। কিন্তু যদি উনি খারাপ করেন ওনার সুনামের ক্ষতি হবে।’

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) তার ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল এ এক ভিডিওতে এমন মন্তব্য করেন।

ডা. জাহেদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা প্রথম থেকেই বারবার একটা কথা বলছেন যে, দেশের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম নির্বাচনটা এবার হবে।

এখন প্রশ্নটা হচ্ছে, তিনটা দলের কথা বললাম (জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপি), তারা যদি নির্বাচন না করেন, তাহলে খুব সিরিয়াস একটা ক্রাইসিস তৈরি হবে। সেটা হচ্ছে তখন মাঠে বিএনপি ও তার সাথে এলাইনড রাজনৈতিক দল ছাড়া আর কেউ থাকে না। তাহলে বিরোধী দল কে হবে?’

বিরোধী দল কে হবে, সেটি নিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি আছে খানিকটা। তবে জাতীয় পার্টির মধ্যেও সমস্যা দেখছি আমরা।

সেটা দুই ভাগ হয়ে গেছে বা জাতীয় পার্টি ইটসেলফকে নিষিদ্ধ করার আলাপ এই দলগুলোই আনবে, আমি বহুবার বলেছি। কারণ জাতীয় পার্টিকে যদি রাজনীতির মাঠ থেকে এলিমিনেট করে দেওয়া যায়, তাহলে আওয়ামী লীগও নাই জাতীয় পার্টিও নাই, তারা একচ্ছত্র ক্ষমতা পেয়ে যায়। তারা নির্বাচনে যাব না, এটা বলে ঠ্যাক দিয়ে দেওয়াটা তাদের জন্য সহজ হয়।
এ রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ‘বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে সরকারকে আসলে রোল প্লে করতে হবে। এখন প্রধান উপদেষ্টা যখন বলছেন একটা শ্রেষ্ঠতম নির্বাচন তিনি করে যেতে চান, তখন তাকে সেটা আসলে করে দেখাতে হবে।

আমি স্মরণ করব এবং আমি প্রায় এটাকে কোড করি। তিনি একটা ইন্টারভিউতে স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, উনারা ঠিক সরকার নন, উনারা ফ্যাসিলিটে এবং এটা সত্য যে এই সরকারটা কোনো স্পেসিফিক দলের না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এই সরকারের মধ্যে কোনো কোনো উপদেষ্টার কারো কারো প্রতি কিছু বায়াসের কথা আলাপ করতে পারি। স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টার বায়াস নিয়েও আমার মন্তব্য আছে বলেছি। কিন্তু দিনের শেষে সরকারকে ফ্যাসিলিটেট করতে হবে, সরকারকে আসলে দায়িত্ব নিতে হবে, এই দলগুলো যেন নির্বাচনে আসে। এটার জন্য যা যা প্রয়োজন সরকারকে সেই রকম আলোচনা বা চাপ যাই বলি সেটা করতে হবে। এটা ডক্টর ইউনুসের নিজের স্বার্থেও জরুরি।’

জাহেদ উর রহমান বলেন, দেশের টারময়েলের টাইমে তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন এবং উনি অনেক জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন। ওনার এখন সর্বশেষ পরীক্ষা যেটি, সেটি যদি উনি করে যেতে পারেন, তাও মোটা দাগে ওনার মানসম্মান রক্ষা হবে। সেটা হচ্ছে উনি একটা ভালো নির্বাচনের মাধ্যমে সবার অংশগ্রহণে, মানে আওয়ামী লীগ বাদ দিয়ে সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটা নির্বাচন করে একটা গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে যদি ক্ষমতা দিয়ে যেতে চান, তাহলে উনি মোটামুটি সন্তুষ্ট। আমি আবারও বলি ওনার যে স্ট্রেচার, ওনার যে নাম-সুনাম, তার ওপরে ভিত্তি করে আমাদের যে এক্সপেক্টেশন, সেটার তুলনায় উনি আসলে তেমন কিছুই আমাদের সামনে দিতে পারেননি, করতে পারেননি। এটা সত্য, কিন্তু এটুকু করে যেতে বেয়ার মিনিমাম, এটা না হলে আমাদের দেশ একটা ডিজাস্টারের মধ্যে ঢুকে যাবে।’

তিনি বলেন, এই নির্বাচন নিয়ে যদি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, ফেব্রুয়ারিতে যদি একটা ভালো নির্বাচন না হয় এবং তার মাধ্যমে একটা গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে যদি ক্ষমতা হস্তান্তরিত না হয়, তাহলে আসলে ডিজাস্টার হবে। সুতরাং ফ্যাসিলিটেটরের ভূমিকায় সরকারকেও খুব সিরিয়াস দায়িত্ব নিতে হবে, যাতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করা সব দল নির্বাচনে আসে।

ইএ/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিশ্ববাজারে সোনার দামে ফের রেকর্ড Oct 18, 2025
img
গুজরাটের মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন রবীন্দ্র জাদেজার স্ত্রী Oct 18, 2025
img
ওয়েস্ট ইন্ডিজে ‘রশিদ-হাসারাঙ্গা’ না থাকায় স্বস্তিতে বাংলাদেশ Oct 18, 2025
img
অঙ্কনের সামর্থ্যে আস্থা রাখছেন প্রধান কোচ ফিল সিমন্স! Oct 18, 2025
img
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে অমুসলিমরা সবচেয়ে ভালো থাকবে: রফিকুল ইসলাম খান Oct 18, 2025
img
সেনা হেফাজতে থাকা তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার নিয়ে ভিন্ন তথ্য! Oct 18, 2025
img
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া Oct 18, 2025
img
ঐতিহাসিক যুদ্ধবিরতি’তে তুরস্কের অবদান রয়ে: জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী Oct 18, 2025
img
চীনে দুর্নীতির অভিযোগে সেনাবাহিনীর ৯ শীর্ষ জেনারেলকে বরখাস্ত Oct 18, 2025
img
প্রতিহিংসার রাজনীতি নয়, প্রতিযোগিতার রাজনীতি করুন: জুয়েল Oct 17, 2025
img
শেষ মুহূর্তে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে কারো না আসাটা ডিস্টার্বের অংশ: মির্জা আব্বাস Oct 17, 2025
img
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কায় খাদ্য মজুতের ঘোষণা সুইডেনের Oct 17, 2025
img
শাকসু নির্বাচনের দাবিতে রঙ তুলিতে প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের Oct 17, 2025
img
আগামীকাল রিয়া মনিকে তালাকের পর দুধ দিয়ে গোসল করব : হিরো আলম Oct 17, 2025
img
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে জবিতে মশাল মিছিল Oct 17, 2025
বাজারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা হলে মুখ লুকাতে হয় Oct 17, 2025
img
মার্টিন ওডেগোর ছিটকে যাওয়ায় আর্সেনাল শিবিরে বড় ধাক্কা Oct 17, 2025
img
মরক্কোয় জেন-জি বিক্ষোভে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীকে কারাদণ্ড Oct 17, 2025
img
অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের সেইফটি নিয়ে চিন্তিত: সারজিস Oct 17, 2025
img
পাকিস্তান-আফগানিস্তানের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ল Oct 17, 2025