নীলফামারীতে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিক অন্তোষের জেরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মো. হাবিবুর রহমান (২০) নামে এক শ্রমিক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ইপিজেডের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, নিহত ইকু ইণ্টারন্যাশনাল নামের একটি নিটিং কারখানার শ্রমিক। তিনি জেলা সদরের সংগলশী ইউনিয়ের কাজীরহাট গ্রামের মো. দুলাল উদ্দিনের ছেলে।

ইপিজেডের শ্রমিকরা জানান, সেখানে অবস্থিত এভারগ্রিন নামের একটি প্রতিষ্ঠানে সম্প্রতি ৫১ জন শ্রমিককে ছাটাই করা হয়। এ নিয়ে গত তিন দিন ধরে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এ অবস্থায় শ্রমিকদের জুলাই-আগস্ট মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ না করে আজ মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য এভারগ্রিন কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সকালে কাজে যোগ দিতে এসে শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করতে না পেরে ইপিজেডের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।

এতে ইপিজেডের সামনে নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে সড়ক থেকে সড়িয়ে দিতে গেলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা গুলি চালালে হাবিবুর রহমান নামের এক শ্রমিক ঘটনাস্থলে নিহত হন। এ ঘটনায় অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হন। তাদের মধ্যে ছয় জনকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীনরা হলেন- মো. মোমিনুর রহমান (২৫), মো. শাহিন (২৬), নূর আলম (৩০), মোস্তাক আহমেদ (২৫), লিপি আক্তার (২৬) জমিলা খাতুন (৩৫)।

নিহত হাবিবুর রহমানের বড় ভাই আশিকুর রহমান (২৪) অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাই হাবিবুর ইকু ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি নিটিং কারখানায় রাতে কাজ করেছেন। সকালে কাজ শেষে ইপিজেড থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন।’


নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ফারহান তানভিরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাবিবুর রহমানকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।এ ছাড়া আহত ছয় জন চিকিৎসাধীন আছেন।’

নীলফামারী সদর থানার ওসি এম আর সাঈদ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বলেন, ‘আমরা এখনও সড়কে। লোকমুখে মারা যাওয়ার কথা শুনছি। কেউ মারা গেছেন কি না এখনও সঠিকভাবে বলতে পারব না।’

ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল ৩ জনের, হাসপাতালে ৪৭৩ Sep 02, 2025
img
মুক্তির আগেই আলোচনায় ‘বাঘি ৪’ Sep 02, 2025
img
বাংলাদেশের সমুদ্রসম্পদ এখনো পুরোপুরি অজানা : উপদেষ্টা Sep 02, 2025
img
অনূর্ধ্ব-২৩ দলের সঙ্গে যোগ দিতে ভিয়েতনাম পৌঁছেছেন ফাহামিদুল Sep 02, 2025
img
সাদা পোশাকে নজর কাড়লেন নুসরাত ফারিয়া Sep 02, 2025
img
বেশী মানুষের মাঝে নার্ভাস হয়ে যাই: সাবিলা নূর Sep 02, 2025
img
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে এখন ৩১ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার Sep 02, 2025
img
প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দুতে ‘লোকাহ চ্যাপ্টার টু’ Sep 02, 2025
img
ইউনাইটেডের স্বপ্নভঙ্গ, গালাতাসারেতেও অনাগ্রহ- অ্যাস্টন ভিলাতেই থেকে যাচ্ছেন মার্টিনেজ? Sep 02, 2025
img

দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে সাবেক আইজিপি মামুন

‘আমার মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হলে বাকি জীবনটা অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব’ Sep 02, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত ‘দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি’র আলোচনা শুরু Sep 02, 2025
img
বিরাট কোহলির প্রেমে পড়েছিলেন ম্রুণাল, পুরোনো স্বীকারোক্তি ভাইরাল Sep 02, 2025
img
চীন-রাশিয়া সম্পর্ক নজিরবিহীন উচ্চতায়: পুতিন Sep 02, 2025
img
শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালালেও শয়তানি ছাড়েনি : মির্জা ফখরুল Sep 02, 2025
img
উনবিংশ শতকের গল্পে ফিরছেন বিজয় ও রাশমিকা! Sep 02, 2025
img
রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক চলছে Sep 02, 2025
img

মুজিবুর রহমান

গণভোটসহ জাতীয় ইস্যুতে ঐকমত্য ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না Sep 02, 2025
img
শিবির কেন গুপ্ত রাজনীতি থেকে প্রকাশ্যে আসে না, জানালেন উমামা Sep 02, 2025
img
সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর রেললাইন ছাড়লেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা Sep 02, 2025
img
সাবেক আইজিপি ক্ষমা পাবেন কি না, সিদ্ধান্ত আদালতের: চিফ প্রসিকিউটর Sep 02, 2025