ঢাকা সিটিতে বায়ু দূষণের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে উল্লেখ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, তিন কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ছে। কারণগুলো মধ্যে রয়েছে- ইটভাটা, মোটরযানের কালো ধোঁয়া এবং যথেচ্ছা নির্মাণকাজ।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সোমবার বিকেলে ঢাকার বায়ু ও শব্দ দূষণ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার শুরুতে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
কীভাবে জনগণকে বায়ু দূষণ থেকে মুক্ত করা যায় সেজন্য সভা ডাকা হয়েছে উল্লেখ করে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ঢাকা সিটিতে বায়ু দূষণের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। সরকারি বেসরকারি অবকাঠামো ও বিভিন্ন কাজে সমন্বয় করা প্রয়োজন। ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেস-হাইওয়েসহ বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা বায়ু দূষণের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শহরের বিভিন্ন স্থানে ভবন নির্মাণের সময় পানি ছিটানো, যন্ত্রপাতি যত্রতত্র ফেলে না রাখা ও নির্মাণের ক্ষেত্র নির্ধারিত বেষ্টনীর মধ্যে আছে কি না তা দেখতে হবে। এ সমস্যা রোধে মূল দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের। ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান বাড়ানো হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে বায়ু দূষণের উৎস নিয়ে চলতি বছরের মার্চে একটি গবেষণা প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, দেশে বায়ু দূষণের প্রধান তিনটি উৎস হচ্ছে- ইটভাটা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া ও নির্মাণকাজ। আট বছর ধরে এ তিন উৎস ক্রমেই বাড়ছে।
ভবন ও অবকাঠামো উন্নয়নকাজ উম্মুক্তভাবে করার ফলে শহরের বাতাসে ধুলোবালির পরিমাণ বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা/প্রতিষ্ঠান এবং বড় বড় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ অর্থাৎ এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে, মেট্রোরেলসহ অন্যান্য প্রকল্প কার্যকর পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা প্রতিপালন, সঠিক ব্যবস্থাপনা অনুসরণপূর্বক মাটি, বালি ও অন্যান্য সামগ্রী পরিবহন ও সংরক্ষণ, কার্যকর কর্ম পরিবেশ রক্ষা করা, সময় মত রাস্তাঘাট সংস্কার ও মেরামত ও বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়মিত পানি ছিটানোসহ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।
২০১৩ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে দেশের ইটভাটাগুলোর ওপর একটি জরিপ করা হয়। তাতে দেখা যায়, দেশে ইটভাটার সংখ্যা ৪ হাজার ৯৯৫টি। পরে ২০১৮ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিচালিত জরিপে দেখা যায় ইটভাটার সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজার ৯০২টি হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৪৮৭ টি ইটভাটা ঢাকা বিভাগের মধ্যে গড়ে উঠেছে।
ওই গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে দেশে মোট যানবাহনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৭টি। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৬ লাখ ১৯ হাজার ৬৫৪টি।
টাইমস/এইচইউ