ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার অন্তত ৬ গ্রামের শতাধিক পরিবারের ফসলের মাঠ, বাড়িঘর গড়াই নদের আগ্রাসনে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ওই পরিবারগুলো সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এছাড়া হুমকির মুখে হয়েছে আরও অনেক পরিবার। অব্যাহত ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের বুরুলিয়া এলাকায় গড়াই নদের পাড়ে এ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান টুলু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মেহের আলী, যুদ্ধকালীন গেরিলা কমান্ডার লুৎফর রহমানসহ কুষ্টিয়া জেলার খোঁকসা ও কুমারখালীর মুক্তিযোদ্ধারা। তারা ভাঙ্গন কবলিত দুই পাড়ে বসবাস করা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসহ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের পুনর্বাসনের দাবি জানান।
এসময় গ্রামবাসীরা জানান, উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের বরুলিয়া, নাঙ্গলবাধ, কৃঞ্চনগর, হাকিমপুর ইউনিয়নের খুল্লমবাড়িয়া, সুবিদ্যা-গোবিন্দপুর, ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের মাঝদিয়া গ্রামের বাড়ি ঘর মসজিদ গাছ পালা ফসলের মাঠ প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তাদের অভিযোগ, অজ্ঞাত কারণে বাধ নির্মাণের জন্য স্থায়ী কোন ব্যবস্থা আজও গ্রহণ করা হয়নি। প্রতিবছর অস্থায়ী প্রতিরক্ষার নামে লাখ লাখ টাকা খচর করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, গড়াই নদের ভাঙ্গনে শৈলকূপা উপজেলার অন্তত শতাধিক পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। নদের শৈলকূপা উপজেলা অংশের ৫ কিলোমিটারের বেশী এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৫৮ লাখ টাকা ব্যয় করে মাত্র ১৫০ মিটার অস্থায়ী প্রতিরক্ষা বাধ নির্মাণ করা হয়েছে। স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাধ নির্মাণ না করা হলে ওই এলাকার অন্তত ৬টি গ্রাম সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে একটি মেগা প্রকল্প প্রস্তুত করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে শৈলকূপা উপজেলা চেয়ারম্যান সিকদার মোশাররফ হোসেন ওরফে সোনা সিকদার অভিযোগ করেন, ইতিমধ্যে সারুটিয়া ইউনিয়নের বরুলিয়া মৌজার সিংহভাগ নদীর গর্ভে তলিয়ে গেছে। এতে করে পাল্টে গেছে শৈলকূপা উপজেলার মানচিত্র। তাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন মাথা ব্যথা নেই। সভা করে চিঠি দিয়ে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এলাকার কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ার আশংকা প্রকাশ করে এ জনপ্রতিনিধি আরও অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর প্রকল্প তৈরির নামে পানি উন্নয়ন বোর্ড তালবাহানা করে আসছে।
টাইমস/ফাতেমা/এইচইউ