চট্টগ্রামের খেজুরতলা বীচ

অজস্র আকর্ষণীয় পর্যটন নিদর্শনে ভরপুর পাহাড় কন্যা চট্টগ্রাম। পাহাড়, সাগর, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি সড়ক, বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য, ঝাউবন, ঝুলন্ত সেতু, সমুদ্রবন্দর- কি নেই এখানে। চট্টগ্রামের অন্যতম আকর্ষণ হল এর অনিন্দ্য সুন্দর সমুদ্র সৈকতগুলো। এখানে যে কয়টি সুন্দর সৈকত আছে তার মধ্যে সৌন্দর্যের দিক থেকে খেজুরতলা বীচ অনেকটা এগিয়ে।

 খেজুরতলা বীচের আসল সৌন্দর্য পাঁপড়ি মেলে খুব ভোরবেলা এবং পড়ন্ত বিকেলে। বিকেলের দিকে এই বীচের সৌন্দর্য দেখার মতো! গোধূলি বেলার সূর্যের রক্তিম আভায় পুরো বীচের রঙ সোনালী রূপ ধারণ করে। সে এক অপার্থিব সৌন্দর্য। খেজুরতলা বীচ এ আপনি একই সাথে পতেঙ্গা এবং নেভালের পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন। বাঁধের পাথরে বসে আড্ডা দিতে পারেন কিংবা সবুজ ঘাস-বিছানো তীর ধরে হাঁটতে হাঁটতে উপভোগ করতে পারেন আশেপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ।

বীচের পাশেই দেখতে পাবেন জেলে পাড়ার জনজীবন। আর বন্ধুরা মিলে ঘুরতে গেলে ফুটবল নিয়ে গেলে তো কথাই নেই, সাগরপাড়েই বিশাল মাঠের মত আছে। খেলাধুলার জন্য অতি উত্তম একটা জায়গা। সন্ধ্যার পর সাগরের ঢেউয়ের তীরে আছড়ে পড়ার শব্দ আর বাতাসের হু-হু আওয়াজ ছাড়া আর কোনো কোলাহলই আপনাকে ছুঁতে পারবেনা। সাগর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শয়ে শয়ে জেলে নৌকোর টিমটিমে আলো আর দূর সমুদ্রে স্থবির জাহাজগুলোর সোডিয়াম আলো আপনাকে নিয়ে যাবে এক অন্য ভুবনে। ঠিক যেন মহাকালের স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার অনবদ্য এক দৃশ্য। এখানে কাটানো মুহূর্তগুলোতে আপনার মন হয়ে উঠবে প্রশান্তিময়।

এছাড়া খেজুরতলা থেকে দক্ষিণদিকে হাটতে হাটতে আধাঘণ্টায় পৌঁছে যেতে পারেন জাইল্লাপাড়া বীচে। এ জায়গার বাতাবরণ পুরোই ভিন্ন। জেলেপাড়ার ব্যস্ততায় মুখর একটা স্থান। দেখতে পাবেন জেলেদের কেউ জাল বুনছে,কেউবা নৌকা মেরামত,বা কেউ মাছ ধরা-বিক্রি কিংবা শুকিয়ে শুটকি বানানোয় ব্যস্ত। জেলেদের এই বিচিত্র জীবনধারা আপনাকে মুগ্ধ করবে। সেই সাথে এখান থেকে অল্প দামেই নিলাম থেকে কিনে নিতে পারেন তরতাজা ইলিশ, চিংড়ি কিংবা অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ।

কিভাবে যাবেন:

ঢাকা থেকে সড়ক, রেল এবং আকাশপথে চট্টগ্রাম যাওয়া যায়। ঢাকার সায়দাবাদ থেকে বেশকিছু চেয়ার কোচ রয়েছে যেগুলো করে আপনি যেতে পারেন চট্টগ্রাম শহরে। তবে শ্রেণিভেদে ৫০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ঢাকা থেকে ট্রেনেও চট্টগ্রাম ভ্রমণ করতে চাইলে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশন হতে সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলি রয়েছে।

এছাড়া বেশকিছু বিমান ঢাকা থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে।

চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো স্থান থেকে ষ্টীলমিল বাজারে এসে ইজিবাইক কিংবা রিকশাওয়ালাকে বললেই দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত খেজুরতলা বীচ নিয়ে যাবে।

কোথায় থাকবেন:

চট্টগ্রামে নানান মানের হোটেল আছে। নীচে কয়েকটি বাজেট হোটেলে নাম ঠিকানা দেয়া হলো-

হোটেল প্যা রামাউন্ট (০৩১-২৮৫৬৭৭১, ০১৭১-৩২৪৮৭৫৪)।

হোটেল এশিয়ান এসআর (০১৭১১-৮৮৯৫৫৫)।

হোটেল সাফিনা (০৩১-০৬১৪০)।

হোটেল নাবা ইন (০১৭৫৫ ৫৬৪৩৮২)।

হোটেল ল্যান্ডমার্ক (০১৮২-০১৪১৯৯৫, ০১৭৩১-৮৮৬৯৯৭)।


কোথায় খাবেন:

যদি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার চেখে দেখতে চান তবে আপনার জন্য রয়েছে সুখবর! ঐতিহবাহী খাবারে চট্ট্রগ্রাম বেশ সমৃদ্ধ, আর এ জন্য চলে যেতে পারেন হোটেল জামান-এ। আর মেজবানি খেতে চাইলে চলে যেতে পারেন চকবাজারে অবস্থিত ‘মেজবান হাইলে আইয়্যুন’ রেস্তোরায়। এছাড়াও চট্টগ্রাম শহরে ছড়িয়ে আছে বেশকিছু ভাল মানের রেস্টুরেন্ট এদের মধ্যে বারকোড ক্যাফে, মিলেঞ্জ রেস্টুরেন্ট, গ্রিডি গাটস, ক্যাফে ৮৮, সেভেন ডেইজ, ধাবা, হান্ডির নাম, গলফ গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, কোষ্টাল মারমেইড রেস্টুরেন্ট এন্ড লাউঞ্জ, বোনানজা পোর্ট রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

 

টাইমস/এএস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

এসি বাসে সেনা কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির করা হচ্ছে Oct 22, 2025
img
ইউএনওদের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ শুরু আজ Oct 22, 2025
img
কাশফুলের সৌন্দর্যে নিজেকে মেলে ধরলেন বুবলী Oct 22, 2025
img
আরও ২ জিম্মির মরদেহ ফেরত দিয়েছে হামাস Oct 22, 2025
img
ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে : এস এম জিলানী Oct 22, 2025
img
নাইজেরিয়ায় জ্বালানি ট্যাঙ্কারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত অন্তত ৩৮ Oct 22, 2025
img
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে চলছে দ্বিতীয় দিনের আপিল শুনানি Oct 22, 2025
img
গাজার ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, এখনও নিশ্চিত নয় : ভ্যান্স Oct 22, 2025
img
৩০ দিনে বিনিয়োগের অর্থ ফেরাতে ব্যর্থ হলে তিনজনকে ১০০ কোটি জরিমানা Oct 22, 2025
img
গ্রিন টি না কি লাল চা , কোনটি বেশি উপকারী? Oct 22, 2025
img
গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো: ট্রাম্প Oct 22, 2025
img
বরগুনায় নিষেধাজ্ঞা ভেঙে মাছ শিকার, ১৩ জেলের কারাদণ্ড Oct 22, 2025
img
৫ বলে ৬ রান করতে ব্যর্থ, দায় নিয়ে মুখ খুললেন সৌম্য Oct 22, 2025
img
গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর মধ্যে কোনো ভয় নেই : গোলাম মাওলা রনি Oct 22, 2025
img
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বে স্বাস্থ্য সচিব Oct 22, 2025
img
১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল Oct 22, 2025
img
১৫ সেনা কর্মকর্তার কারাগারে স্থান নির্ধারণ করবে কারা কর্তৃপক্ষ: চিফ প্রসিকিউটর Oct 22, 2025
img
শেখ হাসিনাসহ পলাতকদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ Oct 22, 2025
img
সুস্পষ্ট লঘুচাপ, রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে Oct 22, 2025
img
লেভারকুসেনকে ৭ গোলে উড়িয়ে দিল পিএসজি Oct 22, 2025