নেপালে জেন জি প্রজন্মের নেতৃত্বে শুরু হওয়া আন্দোলন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ ও সরকারের দুর্নীতি বিরুদ্ধে দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে।
এরই জেরে রাজধানী কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বর এলাকায় সোমবার ‘জেন জি’ প্রজন্মের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর কারফিউ জারি করেছে জেলা প্রশাসন। সরকারি দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে আয়োজিত এই বিক্ষোভে আন্দোলনকারীরা নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
কাঠমান্ডুর প্রধান জেলা কর্মকর্তা ছাবিলাল রিজাল স্থানীয় প্রশাসন আইন-এর ৬ ধারা অনুযায়ী দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করেন।
আদেশ অনুযায়ী, নিউ বানেশ্বর চৌক থেকে পশ্চিমে এভারেস্ট হোটেল ও বিজুলি বাজার আর্চ ব্রিজ পর্যন্ত, আর পূর্বে মিন ভবন ও শান্তিনগর হয়ে টিঙ্কুনে চৌক পর্যন্ত এলাকা কারফিউর আওতায় থাকবে।
এছাড়া নিউ বানেশ্বর চৌক থেকে উত্তরে আইপ্লেক্স মল হয়ে রত্ন রাজ্য সেকেন্ডারি স্কুল পর্যন্ত এবং দক্ষিণে শঙ্খমুল হয়ে শঙ্খমুল ব্রিজ পর্যন্ত এলাকাও কারফিউর মধ্যে পড়েছে। এই এলাকায় চলাফেরা, জমায়েত, বিক্ষোভ কিংবা অবরোধ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর কারফিউয়ের পরিধি বাড়িয়েছে কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন।
প্রথমে বানেশ্বরের কিছু এলাকায় সীমিতভাবে কারফিউ জারি করা হলেও বিক্ষোভকারীরা চলাচল নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করলে এই কারফিউ সম্প্রসারণ করা হয়। এখন প্রেসিডেন্টের বাসভবন শীতল নিবাস এলাকা, মহারাজগঞ্জ, লাইনচৌরে উপ-রাষ্ট্রপতির বাসভবন, সিংহ দরবারের চারদিক, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বালুওয়াটার এবং আশপাশের সংবেদনশীল অঞ্চলেও কারফিউয়ের আওতায় এসেছে।
প্রশাসন জানিয়েছে, অশান্তি ঠেকানো ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই কারফিউয়ের পরিধি বাড়ানো হয়েছে।
এর আগে পুলিশ ব্যারিকেড বসালেও আন্দোলনকারীরা তা ভেঙে ফেলে। পুলিশ জলকামান ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে, আর বিক্ষোভকারীরা ডালপালা ও পানির বোতল নিক্ষেপ করে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। কিছু আন্দোলনকারী নিউ বানেশ্বরের সংসদ ভবনের প্রাঙ্গণেও ঢুকে পড়ে।
মূলত দুর্নীতি এবং ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব ও স্ন্যাপচ্যাটসহ ২৬টি নিবন্ধিত নয় এমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কয়েক হাজার তরুণ সড়কে নেমে এসেছেন।
এমকে/এসএন