প্রথম কনসার্টে গান করি ২০০২ সালে, তখন ক্লাস সেভেনে পড়তাম। কোনাপাড়া আদর্শবাগে এর আগেও আমরা মাইকে গাইতাম। সেবারই প্রথম সাউন্ড সিস্টেমে গান করি। সাউন্ড সিস্টেমে গাইব, এ নিয়ে আমাদের খুব উচ্ছ্বাস ছিল।
একটা অক্টোপ্যাড, কি-বোর্ড আর হারমোনিয়াম—সাউন্ড সিস্টেম বলতে এগুলোই। এলাকার যেকোনো অনুষ্ঠানে গাওয়ার জন্য তখন আমার পরিচিতি ছিল। এলাকারই একটা অনুষ্ঠান ছিল সেটা, যেখানে সংসদ সদস্যসহ আরো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। আমরা যাঁর কাছে গান শিখতাম, সেই গুরুই আমাদের রিহার্সাল করিয়েছিলেন।
এখন যখন কনসার্টে উঠি সামনে থাকে অচেনা শ্রোতা, কিন্তু সেদিনের শ্রোতাদের প্রায় সবাই পরিচিত। তারা সবাই হাততালি দিয়ে আমাকে সাহস জুগিয়েছিল। মঞ্চে উঠে প্রথমে গাই সুবীর নন্দী স্যারের গাওয়া ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’, এরপর গাইলাম শ্রদ্ধেয় কিশোর কুমারের ‘তোমরা যতই আঘাত করো’। মনে যে ভয় ছিল না, তা বলব না।
মঞ্চে ওঠার পর মনে অটো সাহস চলে এলো। এটাই ছিল আমার প্রথম সাউন্ড সিস্টেমে করা কনসার্ট, তবে এই কনসার্ট নিয়ে আমার একটি বিশেষ স্মৃতিও আছে। সেদিন দর্শক সারিতে ছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য। আমার গানে মুগ্ধ হয়ে তৎক্ষণাৎ মঞ্চে উঠে এলেন তিনি। আমার খোঁজখবর নিয়ে ঘোষণা দেন, ‘এই ছেলে যে বিদ্যালয়েই পড়ুক মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা ফ্রি করে দিয়েছি।
আমাদের প্রধান শিক্ষকও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। পরে উনাকে ডেকে সব ব্যবস্থা করে দেন। আমি মাধ্যমিক পর্যন্ত বিনা বেতনে পড়েছি। এ নিয়ে এলাকায় বেশ কথাবার্তা হয়, সবাই আমার খুব প্রশংসা করে। আমি তো বটেই আমার পরিবারও খুব খুশি। এরপর চ্যানেল আইয়ের ‘সেরা কণ্ঠ’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে গানের জগতে যুক্ত হই। দেশে-বিদেশে প্রচুর কনসার্ট করেছি, করছি। কিন্তু ক্লাস সেভেনে পড়াকালীন যে কনসার্ট করেছিলাম, সেই স্মৃতি এখনো আমাকে নস্টালজিক করে তোলে।
এসএন