বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো হরতাল চলছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সড়কে টায়ার ও গাছের গুঁড়ি জ্বালিয়ে, বেঞ্চ ও গাড়ি রেখে সড়ক অবরোধ করেছেন হরতালের সমর্থকেরা। এতে জেলার সঙ্গে অন্যান্য জেলার যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
এরই মধ্যে আগামী সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার (১৫, ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতালের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বাগেরহাট জেলা বিএনপি সভাপতি ও সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহ্বায়ক এম.এ সালাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নতুন ঘোষণা অনুয়ায়ী, আগামী রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলার সকল সরকারি অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
বিএনপি-জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীদের দাবি অনুযায়ী জেলার ৯টি উপজেলার অন্তত দুই শতাধিক স্থানে নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা অবস্থান নিয়েছেন। এর ফলে বাগেরহাট কার্যত দেশের অন্যান্য জেলা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং বিশেষ করে আন্তঃজেলা সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। হরতালের সমর্থনে জেলার অধিকাংশ দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। এতে বাজার ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
এদিকে, অবরোধ চলাকালে সকাল থেকেই বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, দড়াটানা সেতুর দুই প্রান্ত, ফতেপুর বাজার, সিএন্ডবি বাজার, সাইনবোর্ড ও কাটাখালিসহ বিভিন্ন স্থানে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে। ট্রাক চালকদের অভিযোগ, হরতাল-অবরোধের মধ্যে ট্রাক ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে প্রতি ট্রাক থেকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে হরতালকারীরা।
এতে তারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি ব্যাপকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছেন ব্যবসায়ীরাও। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও পচনশীল পণ্যের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
ভোগান্তির শিকার ট্রাক চালক সাইফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা মালামাল নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে আছি। তার ওপর আবার টাকা দিতে হচ্ছে। না দিলে গাড়ি ছাড়তে দিচ্ছে না। ব্যবসায়ী জুম্মান শেখ জানান, ‘দোকান বন্ধ রাখতে হচ্ছে, আবার মালামাল পরিবহন করা যাচ্ছে না। এতে প্রতিদিনই লোকসান গুনতে হচ্ছে।’
বাগেরহাট জেলা বিএনপি সভাপতি এম. এ সালাম বলেন, ‘এ আন্দোলন কোনো দলের নয়, এটি জনস্বার্থের আন্দোলন। আমাদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আমরা শেষ পর্যন্ত রাজপথে থাকব।’
ইউটি/টিএ