কার বিরুদ্ধে মাঠে নামছে জামায়াত: জাহেদ উর রহমান

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী যে যুগপৎ আন্দোলনে নেমেছে, সেটি আসলে কার বিরুদ্ধে এবং কেন, এই প্রশ্ন এখন গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, জামায়াত চেয়েছিল ইসলামিক দলগুলোর বাইরে আরো কিছু দলকে যুক্ত করতে, কিন্তু তা হয়নি। যা জামায়াতের জন্য বড় এক ব্যর্থতা। যদি ওই দলগুলো যেত, তাহলে এটি শুধু ইসলামী দলগুলোর আন্দোলন না হয়ে আরো বহুমাত্রিক হতে পারত।

সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেল জাহেদস টেইক-এ এসে তিনি এ প্রসঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, শুরুর দিকে জানা গিয়েছিল এবি পার্টি, এনসিপি ও গণ অধিকার পরিষদ যুগপথে যাবে, কিন্তু তারা কেউ যায়নি। তাদের অনুপস্থিতি জামায়াতের জন্য বড় ধাক্কা। কারণ এরা মধ্যপন্থী দল, তারা যদি যেত তাহলে আন্দোলনের ইসলামী চরিত্র কমে যেত এবং এটি একটি বৃহত্তর জোট হতো।

এখন এটি শুধু ইসলামী দলগুলোর মোর্চা হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি আরো বলেন, জামায়াত ৫ দফা দাবি ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে:

* জাতীয় সনদের ভিত্তিতে জুলাইয়ের বদলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন।
* জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু।
* অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।
* ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন, দুর্নীতি ও জুলুমের বিচার এবং
* জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

তবে কিছু দাবি যেমন জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন এবং পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন আসলে সরকারের পক্ষে করা কঠিন। বিশেষ করে যখন বিএনপি এই দাবিগুলোতে রাজি নয়। তাই মনে হয় জামায়াত এগুলো বিএনপির ওপর চাপ সৃষ্টি এবং নিজেদের রাজনৈতিক গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, জামায়াত মূলত সরকারকে চাপ দিতে মাঠে আন্দোলন করছে। ঢাকায়, বিভাগীয় শহর ও জেলা-উপজেলায় সমাবেশ এবং বিক্ষোভ করছে। এ শোডাউনের মাধ্যমে তারা বিএনপির ওপর প্রভাব ফেলতে চায়। তারা চাইছে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে। এ ছাড়া জামায়াত নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপিকে দুর্বল করার জন্য মাঠে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে। বিএনপিও হয়তো নিজেদের অবস্থান শক্ত করার জন্য মাঠে নেমে আসতে পারে। এই পাল্টাপাল্টি রাজনীতি দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থির করে তুলতে পারে।

তিনি আরো বলেন, যদিও আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলো মিটে যেতে পারত, কিন্তু জামায়াত ও তাদের সহযোগীরা মাঠে এসে শক্তি প্রদর্শন করছেন, যা দেশে সংঘাতের সম্ভাবনা বাড়ায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিদেশি এজেন্সি ও তৃতীয় পক্ষও এতে জড়িত হতে পারে। তাই এ ধরনের কর্মসূচি চালানো সতর্কতার দাবি রাখে। এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে সংলাপ চালিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধান করা। আর নির্বাচন সফলভাবে করানো যাতে দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ানো দেশ ও জনগণের জন্য ভালো নয়।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
তারা ঐকমত্য কমিশনে গুন্ডামি করেছেন: সামান্তা শারমিন Nov 09, 2025
img
বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ হবে আ.লীগ-জাপা: নুর Nov 09, 2025
img
বিএনপিতে চাঁদাবাজ ও জুলুমবাজদের স্থান নেই : নয়ন Nov 09, 2025
img
মধ্যরাতে পুরান ঢাকার বংশালে আগুন Nov 09, 2025
img
সরকার আসে, সরকার যায়-কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না : শহিদুল ইসলাম বাবুল Nov 09, 2025
img
মানুষ নিজেকে ফাঁকি দিতে পারে না: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা Nov 09, 2025
img
শেষ মুহূর্তের গোলে পরাজয় এড়াল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড Nov 09, 2025
img
মাঝরাতে মোহাম্মদপুরে গাড়ির গ্যারেজে আগুন, নিয়ন্ত্রণে দুই ইউনিট Nov 09, 2025
img
পারমাণবিক পরীক্ষার প্রস্তাব তৈরির কাজ চলছে : রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী Nov 09, 2025
img
ফরিদপুরে মামলার পর আওয়ামী লীগের তিন নেতাকর্মী কারাগারে Nov 09, 2025
img
১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি : আমীর খসরু Nov 09, 2025
img
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ Nov 09, 2025
img
নবীনগরে বিএনপির ২ গ্রুপের পাল্টাপাল্টি শো-ডাউন, পরিস্থিতি উত্তপ্ত Nov 09, 2025
img
এ দেশে আর কাউকে ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না : মান্নান Nov 09, 2025
img
ঝিনাইদহে গণঅধিকার পরিষদ নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর Nov 09, 2025
img
দেবীদ্বারে ছাব্বির হত্যাচেষ্টা মামলায় আ. লীগের ৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার Nov 09, 2025
img
গ্রেপ্তারের পর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিল স্বজনরা Nov 09, 2025
img
১৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ, মধ্যরাতে প্রজ্ঞাপন জারি Nov 09, 2025
img
ভাঙ্গায় থানা ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার ১ Nov 09, 2025
img
বঙ্গোপসাগরে ইঞ্জিন বিকল, ট্রলারসহ ১৩ জেলে উদ্ধার Nov 09, 2025