শেখ হাসিনার মামলায় মাহমুদুর রহমানের জেরা ফের বুধবার

জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে প্রথম দিনের মতো জেরা শেষ হয়েছে। পরবর্তী জেরার জন্য আগামীকাল বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এদিন বেলা পৌনে ১২টা থেকে মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। অবশিষ্ট সাক্ষ্যের পর তাকে জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। তবে জেরা শেষ না হওয়ায় আগামীকাল পর্যন্ত মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার, আব্দুস সাত্তার পালোয়ান, সহিদুল ইসলামসহ অন্যরা।

এর আগে, ১৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে বিকেল পর্যন্ত মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। তার অবশিষ্ট সাক্ষ্যের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর ১৪তম দিনের মতো এ মামলায় ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত মোট ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ রেকর্ড করেছেন ট্রাইব্যুনাল। ৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য দেন তিনজন।

গত ২ সেপ্টেম্বর ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলার আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তার জেরা শেষ হয় ৪ সেপ্টেম্বর।

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালানো হয়েছে জানিয়ে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। একই সঙ্গে অজানা অনেক তথ্য ট্রাইব্যুনালের সামনে এনেছেন। ১ সেপ্টেম্বর দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। এদিন জবানবন্দি দিয়েছেন ছয়জন। এর মধ্যে চিকিৎসক-সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছেন।

সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।

গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন।

আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
স্বর্ণের দামে ফের রেকর্ড, ভরিতে বাড়ল ৩ হাজার ৬৭৫ টাকা Sep 16, 2025
img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ Sep 16, 2025
img
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনদিনে ১০৬৩ মনোনয়নপত্র বিক্রি Sep 16, 2025
img
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক মুখপাত্র মেজবাউল হকের পদত্যাগ Sep 16, 2025
img
হানিয়া আমিরের পর ঢাকায় আসবেন ২ পাকিস্তানি গায়ক Sep 16, 2025
img
জকসু নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে : জবি উপাচার্য Sep 16, 2025
img
সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন-আলোচনা একসঙ্গে চলবে : ডা. তাহের Sep 16, 2025
img
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে ভারতীয় হাইকমিশনারের সংবর্ধনা Sep 16, 2025
‘ইডলি কড়াই’: শৈশবের কষ্ট থেকে অনুপ্রাণিত ধানুশের নতুন সিনেমা Sep 16, 2025
মা হয়েছি ১৬ তেই, এখন ছেলেই আমার বন্ধু: শ্রাবন্তী Sep 16, 2025
শাকিবের ক্যামেরায় ধরা পড়ল বুবলী-শেহজাদের খুনসুটি! ভাইরাল রিলস Sep 16, 2025
ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের তুলনাই চলে না, সৌরভ গাঙ্গুলী Sep 16, 2025
img
পূজামণ্ডপে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে ব্যবস্থা, সতর্ক করল প্রশাসন Sep 16, 2025
img
৭ দফা দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা খেলাফত আন্দোলনের Sep 16, 2025
img
এনবিআরের ৫৫৫ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে বদলি Sep 16, 2025
img
ফায়ার সার্ভিসে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধে জিরো টলারেন্স : মহাপরিচালক Sep 16, 2025
img
চা শ্রমিক-মালিকদের দাবি পূরণে কাজ করছে সরকার: শ্রম উপদেষ্টা Sep 16, 2025
img
জাপানে শ্রমশক্তি রপ্তানি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত Sep 16, 2025
img
জামায়াত শুধু ইসলাম নয়, এখন বড় জোট গড়ার পথে : জাহেদ উর রহমান Sep 16, 2025
img
জামায়াত শুধু ইসলাম নয়, এখন বড় জোট গড়ার পথে : জাহেদ উর রহমান Sep 16, 2025