যুক্তরাজ্যে তিনদিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে একমত পোষণ করেন। দুই দেশের মধ্যে মজবুত সম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে তারা সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরও মৈত্রীর বার্তা দেন।
এখানে ট্রাম্প-স্টারমার সাক্ষাৎ থেকে নেওয়া পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা তুলে ধরা হলো:
১. পুতিন আমাকে হতাশ করেছেন: ট্রাম্প
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, “আমি ভেবেছিলাম আমার পুতিনের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে এই সংঘাত সমাধান সহজ হবে, কিন্তু সে আমাকে হতাশ করেছে।”
স্টারমার জানান, যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি জোট নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর মাধ্যমে একটি টেকসই শান্তিচুক্তির পথ তৈরি করতে চায়।
২. গাজা যুদ্ধ নিয়ে ভিন্নমত, তবে ইসরায়েল সমর্থনে একমত
ইসরায়েলের গাজা ধ্বংস ও গণহত্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প আবারও ৭ অক্টোবর হামাস হামলার কথা স্মরণ করিয়ে দেন এবং বলেন, “এটি ছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দিনগুলোর একটি।”
তিনি বলেন, গাজার যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হবে এবং এর সমাধানে কাজ চলছে।
ট্রাম্প জানান, তার কয়েকটি বিরল মতবিরোধের একটি হলো যুক্তরাজ্যের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। তবে স্টারমার হামাসের নিন্দা করায় ট্রাম্প তাকে প্রশংসা করেন।
তবে কেউই ইসরায়েলের ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নীতিমালার সমালোচনা করেননি।
৩. ন্যাটোর প্রশংসা করলেন ট্রাম্প
ন্যাটো নিয়ে অতীতে সংশয় প্রকাশ করলেও এবার ট্রাম্প ন্যাটোর প্রধান মার্ক রুটে এবং জোটটির সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানান।
তিনি বলেন, “আমরা ন্যাটোকে অনেক অস্ত্র দিচ্ছি এবং নেটো সেগুলোর পুরো মূল্য দিচ্ছে। তারা যা প্রয়োজন, আমরা তা সরবরাহ করছি।”
ন্যাটো সদস্যরা এখন সামরিক খরচ জিডিপি-এর ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
৪. আফগানিস্তানে ফেরার ইঙ্গিত: বাগরাম ঘাঁটি পুনর্দখলের চেষ্টা
২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকে বিশৃঙ্খল বলে আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমরা বাগরাম ঘাঁটি আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। কারণ এটা চীনের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির স্থানের কাছেই।”
তিনি জানান, তালেবানের সঙ্গে একটি সমঝোতা হতে পারে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র এখনো তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
৫. জিমি কিমেল প্রসঙ্গ
মার্কিন উপস্থাপক জিমি কিমেলকে চাকরিচ্যুত করা নিয়ে ট্রাম্প বলেন, “তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে, কারণ তার রেটিং ছিল বাজে এবং তিনি মহান মানুষ চার্লি কার্ক সম্পর্কে ভয়াবহ কথা বলেছেন।”
এটি যুক্তরাষ্ট্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে দাবি করে ট্রাম্প বলেন, “তিনি প্রতিভাবান ছিলেন না বলেই, তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে; আর এটাই প্রধান কারণ।”
সূত্র: আল জাজিরা
এমকে/এসএন