ইউরোপীয় শক্তিধর দেশগুলো চলতি মাসের শেষের আগেই ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে পারে। এমনটাই জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে অচলাবস্থার মধ্যে এই মন্তব্য করলেন তিনি। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, বড় ইউরোপীয় দেশগুলো সম্ভবত চলতি মাসের শেষ নাগাদ ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আবারও আরোপ করবে।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের চ্যানেল ১২–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের ওপর ‘স্ন্যাপব্যাক’ নামে পরিচিত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হবে কি না জিজ্ঞেস করা হলে ম্যাক্রোঁ সরাসরি হ্যাঁ বলেন। তার ভাষায়, ইরান এসব নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর জন্য তেমন প্রচেষ্টাই চালাচ্ছে না।
এর আগে গত আগস্টের শেষ দিকে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য (যারা ‘ই-থ্রি’ নামে পরিচিত) একমাসের প্রক্রিয়া শুরু করে, যাতে কোনো সমঝোতা না হলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আবারও নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায়।
তেহরান অবশ্য এই সিদ্ধান্তকে “অন্যায্য, বেআইনি ও আইনগত ভিত্তিহীন” বলে দাবি করেছে। ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি বা যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা (জেসিপিওএ) অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ইরানও সম্মত হয়েছিল তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করবে এবং বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে।
কিন্তু ২০১৮ সালে প্রথম মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে যান এবং ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা ফিরিরয়ে আনেন। এরপর থেকে ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। চলতি বছরের জুনে ১২ দিনের ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়।
প্রথমদিকে অবশ্য ইউরোপের তিন বড় দেশ ২০১৫ সালের চুক্তি রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু এখন তারা অভিযোগ করছে, ইরান ওই চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে। তাদের দাবি, তেহরান ২০১৫ সালের নির্ধারিত সীমার তুলনায় ৪০ গুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে।
বুধবার ই-থ্রি দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে টেলিফোনে আলোচনা হয়। তবে উভয় পক্ষই স্বীকার করেছে, কোনো অগ্রগতি হয়নি।
যদি ই-থ্রি এই পরিকল্পনা নিয়েই এগিয়ে যায়, তাহলে ২০১৫ সালের আগের বিস্তৃত জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো ফিরিয়ে আনা হবে। এর মধ্যে প্রচলিত অস্ত্র বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধতা এবং ইরানের সম্পদ ফ্রিজ করাও রয়েছে।
এসএস/এসএন