রাজনীতিতে আদালতকে ব্যবহারের নজির ভালো হয় না : সারোয়ার তুষার

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, গতকাল হুট করে ১০৬-এর কথাটা এসেছে কিছু বিএনপিমনা দলের পক্ষ থেকে। পরবর্তী সময়ে বিএনপির যিনি প্রতিনিধিত্ব করেন, সালাহউদ্দিন সাহেব, তার বক্তব্যে বোঝা গেল যে ওনারাও ১০৬-এর কথাটা বলেন। তো এখন ১০৬-এ আপনি কী করবেন? মানে কথাটা হচ্ছে এ রকম, তাদের টোনটা যেহেতু ঐকমত্য কমিশনের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সেটেলমেন্ট হচ্ছে না, লেটস গো টু দি কোর্ট। এখন আপনি রাজনীতির প্রশ্নটাকে আদালতে নিয়ে যাবেন।

প্রথম কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে রাজনীতির প্রশ্নগুলোকে যখন আপনি আদালতে ব্যবহার করেছেন, এটার নজির খুব একটা ভালো হয়নি।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে তিনি এসব কথা বলেন।

তুষার বলেন, যেমন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে যখন ওই আপনার সর্বশেষ প্রধান অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। এই যে আদালতকে পলিটিকসে টেনে আনা কিংবা আপনার তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করা।

এসব ক্ষেত্রে আদালত যখন জনগণের, যেমন— শেখ হাসিনার সময়ে আদালত কী করল, যে জনগণের আন্দোলনের ফসল ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা, এটাকে তারা আদালতকে ব্যবহার করে বাতিল করেছে। পরের নজিরগুলো ভালো না, ঠিক আছে। এখন তো ১০৬-এর মাধ্যমে আপনি কী প্রশ্ন করবেন? ১০৬ একটা প্রশ্ন পাঠাতে হবে, একটা অপিনিয়ন আপনি চাইবেন। প্রশ্ন কী পাঠাচ্ছেন তার ওপর কিন্তু নির্ভর করছে রাজনীতিটা কী হবে।

আপনি যদি প্রশ্ন পাঠান জুলাই সনদ কিভাবে বাস্তবায়িত হবে? তখন এক ধরনের উত্তর আসবে। আর আপনি যদি প্রশ্ন করেন যে এই সরকার বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না? তাহলে উত্তর আরেক রকম আসবে। আপনি কী প্রশ্ন করেছেন? মেন পলিটিকস ইর ফ্রেম। আপনি ধরেন মানে আমরা যেটা বুঝলাম আমাদের পক্ষ থেকেও গতকালকে আমরা এটা বলেছি। আমি নিজেও ছিলাম যে বিএনপি শুরু থেকে কী বলেছে? সংস্কারটা কোথায় হবে? পার্লামেন্টে হবে।

কেন সংস্কার পার্লামেন্টে করা যাবে না? এটা আমরা অসংখ্য যুক্তি দিয়েছি। এখানেও দরকার হলে আবার বলব।

তিনি আরো বলেন, এখন যেহেতু পার্লামেন্টে সংস্কারের ব্যাপারে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল বেশির ভাগ মানে ৯০% রাজনৈতিক দল একমত না। এর মধ্যে বিএনপির সাথে আন্দোলনে ছিল এমন দলও আছে। এ কারণে এখন আমাদের আদালত দেখানো হচ্ছে। যে আদালত যদি এখন এটা বলে তাহলে আমরা কী করব? প্রশ্নটা হচ্ছে এ রকম। মানে আদালত দিয়ে আপনি এটা বলাবেন যে ১০৬-এর মতো মাধ্যমে যে ইয়েতে যাব আমরা। এটা পার্লামেন্টে সংস্কার হবে। তখন তো আর সবার মুখে তাহলে আপনি এই যে এক বছর আলোচনা করলেন সব রাজনৈতিক দল-পিপলের উইলের প্রতিনিধিত্ব যদি রাজনৈতিক দলগুলো করে থাকে, পিপল আদালত তো পিপলের উইলের অধীন- এটা তো একদম। ভাই বুঝবেন, ভাই আইনের মানুষ- মানে একেবারে- মানে আইনের ভাষার জায়গা থেকেই।

পিপলের উইলের অধীন হচ্ছে আদালত। পিপলের উইলটা কেমন হবে এটা তো আদালত ঠিক করে দেবে না; বরং পিপল যখন তার একটা উইল ঠিক করবে, এটাকে আপনি একটা কনস্টিটিউশনাল ভিত্তি দেবেন। আদালত ওইটাকে ডিফেন্ড করতে- মানে ডিফেন্ড করবে, এটাই আদালত। আদালত কিন্তু কনস্টিটিউশন ব্যাখ্যা করতে পারে, কিন্তু আপনি একটা নতুন কনস্টিটিউশনাল প্যারাডাইম তৈরি করার চেষ্টা করছেন অথবা মেজর রিফর্ম করার চেষ্টা করছেন- এটা দেখেন আদালতের কাজ কী? আদালতের কাজ হচ্ছে, যে সংবিধানটা আছে সেটার বেসিক স্ট্রাকচারকে ডিফেন্ড করা।

যখন যখন আদালত বিভিন্ন সংশোধনীকে অসাংবিধানিক বলে কোনো যুক্তিতে বলে, এই যুক্তিতে বলে যে তোমার এই সংশোধনীটা আনকনস্টিটিউশনাল বিকজ ইট ভালে আওয়ার বেসিক স্ট্রাকচার বা কনস্টিটিউশনাল বেসিক স্ট্রাকচার। এখন আমরা যেগুলো নিয়ে কথা বলছি, কমিশনে যেমন আপার হাউস হবে। যেমন আপনার ধরেন হাইকোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ হবে। যেমন আপনার তত্ত্বাবধক সরকারের নিউ ফর্মুলা কিংবা মূলনীতি পরিবর্তন। এগুলো কি আমার এই সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচারের মধ্যে আছে নাকি এগুলো ভায়োলেট করে বেসিক স্ট্রাকচারকে।

যখনই আপনি বেসিক স্ট্রাকচারকে ভায়োলেট করছেন, তখন আপনি সেটার ব্যাপারে এই কনস্টিটিউশনের অধীনে গঠিত আদালত কিভাবে সেটার ব্যাপারে রায় দেবে? তার তো কাজই হচ্ছে এই সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচারকে প্রটেক্ট করা।

এসএন  

Share this news on:

সর্বশেষ

img
২ যুগ পর ফের বেনফিকায় ফিরলেন মরিনহো Sep 19, 2025
img
নওগাঁ সীমান্ত এলাকায় ১৬ জনকে বিএসএফের পুশ ইন Sep 19, 2025
img
প্রথমার্ধ পর্যন্ত গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছেন এনরিকে, কেন? Sep 19, 2025
img
আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র Sep 19, 2025
img
সাংগঠনিকভাবে যতটা শক্তিশালী হওয়ার কথা ছিল, তা অর্জন করতে পারিনি: নাহিদ ইসলাম Sep 19, 2025
img
দুর্গাপূজায় ৩ দিনের সরকারি ছুটির দাবি হিন্দু মহাজোটের Sep 19, 2025
img
আজ মিলাদ পড়ে নির্বাচনী বিসমিল্লাহ করবেন ওসমান হাদি Sep 19, 2025
img
৭৫তম জন্মদিনে শাবানা আজমি, পার্টিতে নাচলেন রেখা-মাধুরীর সঙ্গে Sep 19, 2025
img
দেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই এখন সবচেয়ে জরুরি : দুদু Sep 19, 2025
img
চট্টগ্রামে মার্কিন সেনা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে : রনি Sep 19, 2025
img
অল্পের জন্য বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন ট্রাম্প-মেলানিয়া Sep 19, 2025
img
চাঁদে নাম পাঠানোর সুযোগ দিচ্ছে নাসা Sep 19, 2025
img
আবারও ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ জয়ী হলেন তানজিয়া মিথিলা Sep 19, 2025
img
একদিনেই ডিএসইর বাজার মূলধনে ক্ষতি ১৪৬ কোটি টাকা Sep 19, 2025
img
ঐকমত্যের মাধ্যমেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব : বদিউল আলম Sep 19, 2025
img
ক্যাপিটাল ড্রামায় ‘চোর’ আসছে ইউটিউব চ্যানেলে Sep 19, 2025
img
মাইকে ঘোষণা দিয়ে চার মাজার ভাঙচুরের ঘটনায় ২২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা Sep 19, 2025
img
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেন করার দাবিতে অবরোধ Sep 19, 2025
img
নীল নদের পানি নীল নয়, জামায়াতও ইসলাম নয়: হাফিজ ইব্রাহিম Sep 19, 2025
img
এবার ২-১ ব্যবধানে ভারতকে হারাল বাংলাদেশ Sep 19, 2025