ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, গাজায় যুদ্ধ চলতে থাকলে নোবেল শান্তি পুরস্কারের কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, সংঘাত বন্ধ করতে ইসরায়েলের ওপর চাপ তৈরি করতে হবে এবং এই মুহূর্তে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
এছাড়া ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর যদি ইসরায়েল ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তবে তার জবাব দিতে ফ্রান্স প্রস্তুত।
মঙ্গলবার ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএম টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যদি এমনটা হয়, আমরা জবাব দেবো। আমরা প্রস্তুত। সবকিছুর জন্য প্রস্তুত আছি। তবে আমি মনে করি, এই মুহূর্তে আমাদের শান্তির পথ ও বন্ধুত্বের পথ বেছে নেওয়া উচিত।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন এবং সংঘাত মীমাংসার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের দিকে নজর রাখছেন, এ প্রসঙ্গে ম্যাক্রোঁ সরাসরি বলেন, “নোবেল শান্তি পুরস্কার তখনই সম্ভব, যদি এই যুদ্ধ বন্ধ হয়। তাই ইসরায়েলি সরকারকে গাজায় সংঘাত থামাতে চাপ দেওয়া জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, এর জন্য শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছাই যথেষ্ট। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর ইসরায়েল ফ্রান্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে, এমন প্রশ্নে ম্যাক্রোঁ জানান, ফ্রান্স “সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি” নিয়েছে।
তিনি বলেন, “যদি গাজা শহরে যুদ্ধ চলতেই থাকে, যদি সেনারা আজও সামনে এগিয়ে গিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করতে থাকে, তবে আমরা নিশ্চুপ থাকতে পারি না।”
মার্কিন চাপ ইসরায়েলের ওপর কার্যকর হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ম্যাক্রোঁ বলেন, ইসরায়েলের বর্তমান নীতি কোনো পরিকল্পনা নয়, বরং নিজেদের জনগণকে “অবিরাম যুদ্ধের” মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, “এ পরিস্থিতির মুখে একজন আছেন যিনি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেন, তিনি হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কেন তিনি বেশি কিছু করতে পারবেন? কারণ আমরা সেই অস্ত্র সরবরাহ করি না, যেগুলো দিয়ে গাজার যুদ্ধ চালানো হচ্ছে। আমরা কোনো যুদ্ধ সরঞ্জাম সরবরাহ করি না। যুক্তরাষ্ট্রই তা করছে।”
ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, “আমরা যে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিয়েছি, তা ইসরায়েল এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকার, উভয়ের ওপর চাপ বাড়াতে সাহায্য করছে। একইসঙ্গে এটি ইসরায়েলিদেরও বুঝতে সাহায্য করছে যে, এটি একটি শান্তির উদ্যোগ এবং আমরা তাদের সঙ্গেই এটি বাস্তবায়ন করতে চাই।”
এর আগে সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আগে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে লুক্সেমবার্গ, বেলজিয়াম, অ্যান্ডোরা, ফ্রান্স, মাল্টা, মোনাকো ও সান মারিনো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
এর একদিন আগে ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগাল ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এর ফলে ১৯৮৮ সালে প্রয়াত নেতা ইয়াসির আরাফাত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ঘোষণা করার পর থেকে এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৫৯টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলো।
পিএ/এসএন