দীর্ঘ ৭ বছর পর আবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে দুপুর ৩টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ একর জুড়ে অবস্থিত ক্যাম্পাসে মোট ১৯টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা; সার্বিক তদারকিতে রয়েছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও দেখা গেছে উৎসাহ ও উদ্দীপনা। সাত বছর পর ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়ে তাঁরা বেশ উচ্ছ্বসিত।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে এবং ভোটগ্রহণ শেষে দ্রুত ফলাফল প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে নির্বাচনী প্রচারণা। শেষ সময়ের প্রস্তুতি হিসেবে প্রার্থীরা বিভিন্ন অভিনব কায়দায় প্রচারণা করেছেন। বিভাগে বিভাগেও চলেছে গণ সংযোগ। চলেছে গান গেয়ে এবং ব্যতিক্রমী প্রচারপত্রের মাধ্যমে সমর্থন আদায়। ভোটাররাও উচ্ছ্বসিত ভাবে গ্রহণ করছেন প্রার্থীদের।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে ১১টি পদে লড়ছেন ৬৩ জন প্রার্থী। নির্বাচনে মোট ভোটার ৪ হাজার ৭৬১ জন। এর আগে গত ১১ আগস্ট তফসিল ঘোষণা করে গবি প্রশাসন। এরপর ২৬ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে ৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয় প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা। পরবর্তী আপিল ও শুনানি শেষে ১৪ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয় চূড়ান্ত তালিকা। এরই মধ্যে প্রার্থীদের ডোপ টেস্টও সম্পন্ন হয়েছে; রিপোর্ট পজিটিভ হলে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।
এ নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মোতায়েন থাকবে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩৫০ জন সদস্য। স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ভোটকেন্দ্রে বসানো হবে সিসি ক্যামেরা, বড় পর্দায় সরাসরি ভোট কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করতে পারবে শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা।
সার্বিক বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র ড. ফুয়াদ হোসেন জানান, তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের মোট ১৩টি ধাপের মধ্যে ১১টি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এখন কেবল ভোটগ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশের ধাপ বাকি। ভোটের দিন নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র্যাব, আনসার ও এনএসআই এর ৩৫০ জন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে সেনাবাহিনী। এছাড়া গঠন করা হবে কুইক রেসপন্স টিম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, দেশের একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমাদের প্রতিষ্ঠানেই ছাত্র সংসদ রয়েছে। এবার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতীয় নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্র তৈরি হবে।
উল্লেখ্য, দেশের একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) চালু রয়েছে ছাত্র সংসদ। ২০১৩ সালে প্রথমবার ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২০১৮ সালে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে গঠিত হয়েছিল তৃতীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। তবে প্রশাসনের জটিলতায় নির্বাচিত সংসদ পুরো মেয়াদ কাজ করতে পারেনি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর দীর্ঘ পাঁচ বছর গকসুর কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। এটি হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সংসদ নির্বাচন।
এমকে/এসএন