ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অবস্থানরত নিউইয়র্কের হোটেলের সামনে বিক্ষোভ করেছেন নেতানিয়াহুর সরকারবিরোধীরা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান নেতানিয়াহু। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ম্যানহাটনে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভে প্রায় এক ডজন প্রতিবাদকারী অংশ নেন। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, যেখানে লেখা রয়েছে ‘নেতানিয়াহুর হাত থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করো’, ‘যুদ্ধ বন্ধ করো’ এবং ‘জিম্মিদের সবাইকে মুক্তি দাও’। তারা স্লোগান দেন- ‘নিজ বাসায় তাদের ফিরিয়ে আনো’ এবং ‘সামরিক শক্তিতে সমাধান নেই’। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
প্রতিবাদকারীদের নেতৃত্ব দেন নিউইয়র্কে থাকা ইসরায়েলি প্রবাসীরা। তাদের দাবি, অবরুদ্ধ গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর আগে নেতানিয়াহু সরকারের বিচার বিভাগ সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ইসরায়েলি ও আমেরিকান ইহুদিরা বিক্ষোভ করেছিলেন।
যা দীর্ঘদিনের এক প্রথা ভেঙে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ করে না।
এর আগে ২০২৩ সালে নেতানিয়াহু জাতিসংঘ ভাষণ দেয়ার সময় নিউইয়র্কে বড় ধরনের বিক্ষোভ হলেও গাজা যুদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিবিদ্বেষ বেড়ে যাওয়ার কারণে এখন তা অনেকটা কমে এসেছে। তবে যুদ্ধ শুরুর পর আন্দোলনের একটি অংশ সরাসরি রাজনৈতিক অবস্থান থেকে সরে এসে শুধু বন্দিদের মুক্তির দাবিতে কাজ করছেন। অন্য অংশ এখনও রাজনৈতিক বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার সাধারণ পরিষদে নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সময়ও নিউইয়র্কে ইসরায়েলি প্রবাসীদের সংগঠন ‘আনএকসেপ্টেবল’ বিক্ষোভ করবে। ভোরে সংবাদ মাধ্যম ফক্স নিউজ স্টুডিওর সামনেও তারা অবস্থান নেবে, যাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নজরে আসে।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা অফির গুটেলজোন বলেন, ‘ইহুদিবাদের সবচেয়ে মৌলিক নীতি হলো জীবন রক্ষা করা। নেতানিয়াহু নিজের রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে আমাদের বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করছেন না। আমরা আওয়াজ তুলব যে ইসরায়েলিরা জীবন, শান্তি ও গণতন্ত্র চায়, নিরন্তর যুদ্ধ নয়।’
এছাড়া শুক্রবার সকালে জাতিসংঘের সামনে নেতানিয়াহুর ভাষণ চলাকালে গাজায় হামাসের হাতে বন্দিদের পরিবারের সদস্যরাও বিক্ষোভ করবেন। তাদের দাবি হচ্ছে, ইসরায়েল ও বিশ্বের নেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি নিশ্চিত করা।
অন্যদিকে, অ-ইহুদি ইসরায়েলবিরোধী গোষ্ঠীগুলোও জাতিসংঘে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে এবং শুক্রবার সকালে একই সময়ে বড় সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে।
এমকে/এসএন